করোনা ও যৌনবিদ্বেষের জন্য অলিম্পিক ছাড়লেন ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক

অলিম্পিক আয়োজন নিয়ে সন্দেহ দূর হচ্ছে না।ছবি: টুইটার

করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যেই এগিয়ে আসছে টোকিও অলিম্পিকের দিনক্ষণ। কিন্তু ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’–এর পর্দা শেষ পর্যন্ত উঠবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ বেড়েই চলছে। যদিও টোকিও অলিম্পিকের প্রধান সেইকো হাশিমোতো গেমসের আয়োজন নিয়ে অনড়। তাঁর কথায় অনেকটাই ‘এক দফা, এক দাবি’র সুর—চরম পর্যায়ের কিছু না ঘটলে টোকিও অলিম্পিক বাতিলের কোনো সম্ভাবনা নেই।

তাই বলে বিপর্যয়ও থেমে নেই। আয়োজকেরা জানিয়েছেন, এরই মধ্যে ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক অলিম্পিক থেকে সরে গেছেন। এর পেছনের কারণ—করোনাভাইরাস সংক্রমণের শঙ্কা, যৌনবিদ্বেষ বিতর্ক এবং সূচির জট।

অলিম্পক আয়োজনের পথে অনেক এগিয়ে গেছে টোকিও।
ছবি: টুইটার

টোকিও অলিম্পিক উদ্বোধন হওয়ার কথা ২৩ জুলাই। ৫০ দিন বাকি থাকতে হাশিমোতো জানিয়েছেন, করোনা মহামারির কারণে বেশির ভাগ দল জাপানে না গেলে তবেই হয়তো অলিম্পিক বাতিল হতে পারে। ২০৫টি দেশের অংশ নেওয়ার কথা টোকিও অলিম্পিকে।

নিক্কান স্পোর্টস ডেইলিকে কাল হাশিমোতো বলেছেন, ‘বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ মারাত্মক পরিস্থিতির মধ্যে পড়লে ও দেশগুলোর প্রতিনিধিরা যদি আসতে না পারেন, তাহলে আমরা (আয়োজন করতে) পারব না। কিন্তু এমন কিছু না ঘটলে গেমস বাতিল হবে না।’ যদিও জাপানে জনমতের অধিকাংশই গেমস আয়োজনের বিপক্ষে। কারণ জাপানে করোনা সংক্রমণের চতুর্থ ঢেউ হানা দিয়েছে। টোকিওতে জারি করা হয়েছে জরুরি অবস্থা।

টোকিও অলিম্পিকের প্রধান সেইকো হাশিমোতো।
ছবি: টুইটার

গেমসের প্রধান নির্বাহী তোশিরো মুতো বুধবার জানান, মোট ৮০ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের মধ্যে প্রায় ১০ হাজার কর্মী গেমস ছেড়েছেন। বেশির ভাগই করোনায় সংক্রমিত হওয়ার শঙ্কা থেকে ছেড়ে গেছেন।

যেকোনো ক্রীড়া প্রতিযোগিতা স্বাচ্ছন্দ্যে আয়োজন করতে স্বেচ্ছাসেবক নেওয়ার রীতি নতুন কিছু নয়। তবে করোনায় সংক্রমিত হওয়ার শঙ্কা ছাড়াও যৌনবিদ্বেষমূলক মন্তব্যের প্রতিবাদেও কিছু স্বেচ্ছাসেবক গেমস ছেড়েছেন। হাশিমোতোর পূর্বসূরি এর আগে এমন মন্তব্য করে টোকিও অলিম্পিক প্রধানের পদ ছাড়তে বাধ্য হন।

টোকিও অলিম্পিকের আয়োজক কমিটির সাবেক প্রধান ইয়োশিরো মোরি।
ফাইল ছবি: রয়টার্স

গত ফেব্রুয়ারিতে যৌনবিদ্বেষমূলক মন্তব্য করেন টোকিও অলিম্পিকের সাবেক প্রধান ইয়োশিরো মোরি। তিনি বলেছিলেন, মিটিংয়ে নারীরা বেশি কথা বলেন এবং সময় অপচয় করেন। তাঁর এই কথায় সমালোচনার ঝড় উঠেছিল।

মুতো জানিয়েছেন, হাজার দশেক স্বেচ্ছাসেবক চলে গেলেও গেমস আয়োজনে তেমন কোনো সমস্যা হবে না। টোকিও অলিম্পিকে বিদেশি দর্শক থাকার সম্ভাবনা ইতিমধ্যেই বাতিল করা হয়েছে। জাপানের দর্শকেরা গেমস দেখতে পারবেন কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে ২০ জুন টোকিওতে জরুরি অবস্থান উঠে যাওয়ার পর।