করোনা–নির্দেশ অমান্য করলেই শাস্তি

টোকিও অলিম্পিকের আয়োজকদের এবার লড়াই করতে হবে করোনার সঙ্গে।ছবি: রয়টার্স

টোকিও অলিম্পিকের আয়োজনকে ঘিরে সন্দেহ এবং উদ্বেগ ধীরে ধীরে দূর হচ্ছে। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি) এবং জাপানের আয়োজক কমিটি গেমস আয়োজন নিয়ে ক্রমেই আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে শুরু করেছে। দর্শকসংখ্যা সীমিত করার মতো কিছু পদক্ষেপ অলিম্পিকের আকর্ষণে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব ফেললেও অলিম্পিক হবে কি না, সেই সংশয় থেকে আয়োজকেরা ক্রমেই মুক্ত হতে শুরু করেছেন।

বিশ্বের অনেক দেশেই করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে শুরু করেছে। কিন্তু জাপান পরিস্থিতি মোকাবিলায় এখনো হিমশিম খাচ্ছে। তারপরও সরকারি কর্মকর্তা এবং অলিম্পিকের আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের কর্তারা মনে করছেন, টিকাদান কর্মসূচির কারণে এক মাসের মধ্যে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। এ ছাড়া জাপানের জনমতও ধীরে হলেও অলিম্পিক আয়োজনের বিরোধিতা থেকে সরে আসতে শুরু করেছে।

টোকিও অলিম্পিকের জন্য অস্ট্রেলিয়ার মেয়েদের সফট–বল দলের প্রস্তুতি।
ছবি: রয়টার্স

সাম্প্রতিক কয়েকটি জরিপে থেকে দেখা যায়, এই সময়ে অলিম্পিক আয়োজনের বিরোধিতা যাঁরা করছেন তাঁদের সংখ্যা এক মাসের আগের মতো ততটা উদ্বেগজনক অবস্থায় নেই। গেমস আয়োজন যেন সুষ্ঠুভাবে হতে পারে, সেদিকেই এখন জোর দিচ্ছে টোকিও অলিম্পিকের আয়োজক কমিটি ও অলিম্পিকের আন্তর্জাতিক সংগঠন। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণ করতে গতকাল টোকিও এসে আইওসির ভাইস প্রেসিডেন্ট জন কোটস সফল অলিম্পিক আয়োজনেরই আশা প্রকাশ করেছেন।

এদিকে অলিম্পিকে অংশগ্রহণকারী লোকজনের জন্য করোনা নির্দেশাবলি ‘প্লে-বুকের’ তৃতীয় ও সর্বশেষ সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, নির্দেশাবলি মেনে চলতে ব্যর্থ লোকজনের বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হবে। শাস্তিমূলক পদক্ষেপের মধ্য জরিমানা ছাড়াও নির্দেশ অমান্যের মাত্রা বিবেচনায় অ্যাক্রিডিটেশন স্থগিত রাখা এবং গেমসে যোগ দেওয়ার অধিকার বাতিল করার সুযোগও আছে। গতকাল ‘প্লে বুক’ প্রকাশনার সংবাদ সম্মেলনে আইওসির গেমস-সংক্রান্ত নির্বাহী পরিচালক ক্রিস্তফ দুবি বলেছেন, কোনো অংশগ্রহণকারী নিয়ম ভাঙলে তাঁর বিরুদ্ধে কোন ধরনের শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা নির্ধারণ করবে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গড়া ডিসিপ্লিনারি কমিশন।

অলিম্পিক রিংয়ের পেছনে দাঁড়িয়ে জাপানি এক নাগরিক।
ছবি: রয়টার্স

অলিম্পিকে অংশগ্রহণকারী ক্রীড়াবিদদের যেসব নিয়ম মেনে চলতে হবে, তার মধ্যে আছে প্রতিদিন সকাল ৯টা এবং সন্ধ্যা ৬টায় থুতুর নমুনা দেওয়া। এ ছাড়া পজিটিভ শনাক্ত হওয়া ব্যক্তির সংস্পর্শে যাঁরা আসবেন, আয়োজক কমিটির সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র তা যাচাই করে দেখবে এবং সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেবে।

নিয়মিত ভাইরাস শনাক্ত পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার বাইরে অংশগ্রহণকারীদের জন্য আরও কিছু নিষেধাজ্ঞাও থাকবে অলিম্পিক চলাকালে। এর মধ্যে আছে অলিম্পিক ভিলেজ ও ভেন্যুর বাইরে ভ্রমণের ওপর কড়াকড়ি ও অলিম্পিক ভিলেজে ন্যূনতম সময় অবস্থান নিশ্চিত করা। ন্যূনতম সময়ের অবস্থান বলতে বোঝানো হয়েছে প্রতিযোগিতার জন্য জাপানে অবস্থানের প্রয়োজনীয়তা শেষ হয়ে যাওয়ার পর দেরি না করে যাঁর যাঁর দেশে ফিরে যাওয়া। এ ছাড়া অলিম্পিক ভিলেজে ভিন্ন দেশের প্রতিযোগীদের সঙ্গে মেলামেশার সুযোগও সীমিত রাখা হবে।

এদিকে অলিম্পিকের সংবাদ সংগ্রহের জন্য জাপানে যাওয়ার আগে বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকদের সময়মতো টিকা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক ও আয়োজক কমিটি। ধারণা করা হচ্ছে, অলিম্পিক উপলক্ষে সারা বিশ্বের ২২ হাজারের বেশি সংবাদকর্মী জাপানে আসবেন। বিভিন্ন দেশের জাতীয় অলিম্পিক কমিটির মাধ্যমে এঁদের সবার টিকাদান নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিয়েছে আইওসি।