কোরিয়ার অভিজ্ঞতার কাছে হেরে রুপা বাংলাদেশের

হাকিম আহমেদ ও দিয়া সিদ্দিকীছবি : প্রথম আলো

শেষ পর্যন্ত ইতিহাস গড়া হলো না বাংলাদেশের। এশিয়ান আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথমবার সোনা জয়ের হাতছানি ছিল হাকিম আহমেদ ও দিয়া সিদ্দিকীর সামনে। কিন্তু বনানী আর্মি স্টেডিয়ামে আজ দুপুরে রিকার্ভ মিশ্র দ্বৈত ইভেন্টে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে ৫-১ সেট পয়েন্টে হেরে রুপা জিতেছে বাংলাদেশ।


প্রতিপক্ষ দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দল। তা ছাড়া এবারের মিশ্র দ্বৈত ইভেন্টে খেলেছেন রিও অলিম্পিকে সোনাজয়ী লি সেং-ইয়ুন ও রিউ সু জাং।

দিয়া সিদ্দিকী
ছবি : প্রথম আলো

আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অভিজ্ঞ এই দুই আর্চারের সামনে স্বাভাবিকভাবেই কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে পারেনি বাংলাদেশের দুই আর্চার হাকিম ও দিয়া।


পরপর দুই সেট জিতে শুরুতেই ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়া। প্রথম সেটে যেখানে দক্ষিণ কোরিয়া চার শটে মেরেছে যথাক্রমে ১০, ৯, ১০ ও ৯ (৩৮ পয়েন্ট), সেখানে বাংলাদেশ প্রথম সেটে ৪টি শটে মেরেছে ৮, ৮, ৯ ও ৭ (৩২)। দ্বিতীয় সেটে দক্ষিণ কোরিয়া মেরেছে ১০, ৯, ১০ ও ১০ (৩৯ পয়েন্ট)। শুধু শেষ সেটে যা একটু লড়াই করতে পেরেছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ কোরিয়া ৩৮ পয়েন্ট (১০, ৯, ১০, ৯) মারলে বাংলাদেশও সমান ৩৮ পয়েন্ট করতে পারে (৯, ১০, ৯, ১০)। এই সেটে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছ থেকে ১ পয়েন্ট কেড়েছে বাংলাদেশ।

হাকিম আহমেদ
ছবি : প্রথম আলো

অবশ্য দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে হেরেও অসন্তুষ্ট নন বাংলাদেশ কোচ মার্টিন ফ্রেডরিখ, ‘আমি ওদের পারফরম্যান্সে খুশি। ওরা সবাই ভালো খেলেছে। এখানে আমরা হয়তো সোনা জিততে পারিনি, কিন্তু আমরা তো রুপা জিতেছি।’


প্রথম দুই সেট পিছিয়ে পড়ে শুধু শেষ সেট প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ কোরিয়ার আর্চাররা অভিজ্ঞতার কাছেই এগিয়ে ছিল বলে মত কোচের, ‘এটা আসলে ফাইনালের মঞ্চ। এখানে পারফর্ম করার মতো আরও সময় লাগবে ওদের। তবে শেষ সেটে কিন্তু ওরা বেশ ভালো তির ছুড়েছে।’

লি সেং-ইয়ুন ও রিউ সু জাং
ছবি : প্রথম আলো

গত ১৮ বছরে এবারই প্রথম বাংলাদেশ এশিয়ান আর্চারিতে কোনো পদক জিতেছে। গত পরশু পুরুষ রিকার্ভ দলগত ও মহিলা রিকার্ভ দলগত ইভেন্টে ব্রোঞ্জ জেতে। এরপর আজ মিশ্র দ্বৈতে জিতেছে রুপার পদক। সব মিলিয়ে পুরো টুর্নামেন্টে নিজেদের পারফরম্যান্সে খুশি দিয়া, ‘এখানে পুরো টুর্নামেন্টেই আমরা ভালো খেলেছি। ফাইনালেও আমরা চেষ্টা করেছি ভালো খেলার। আজ প্রথম দিকে হয়তো সেভাবে মারতে পারিনি। তবে শেষ দিকে এসে ভালো খেলেছি। এখানে বাতাসটা বুঝতে পারিনি প্রথম সেটে। আর দ্বিতীয় সেটে আমার তির আটকে গিয়েছিল। ওরা আসলে একই ধারাবাহিকতায় তির ছোড়ে। আমাদের আত্মবিশ্বাসটাও ওই রকম পর্যায়ে পৌঁছাতে হবে।’


প্রথমবার বড় মঞ্চে সুযোগ পেয়েও সেটা কাজে না লাগানোর আক্ষেপ ছিল হাকিমের কণ্ঠে, ‘এই হার থেকে অনেক কিছু শেখার আছে আমাদের। এখানে কিছু ভুল বুঝতে পেরেছি, যেটা শুধরে পরবর্তীকালে আরও ভালো খেলার চেষ্টা করব আমি। তারপরও আমার নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে আমি অনেক খুশি। এ পর্যন্ত যত আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে খেলেছি, এর মধ্যে সেরা স্কোর হয়েছে এবারই।’