জীবিতদের মধ্যে তিনি–ই এখন দ্রুততম নারী

নিজের কীর্তি দেখে আনন্দিত শেলি–অ্যান–ফ্রেজার।ছবি: রয়টার্স

মেয়েদের ১০০ মিটার স্প্রিন্ট শেলি–অ্যান–ফ্রেজারের ‘সিগনেচার ইভেন্ট’। দুবারের অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন ফ্রেজার। জ্যামাইকান এই স্প্রিন্টার কি টোকিও অলিম্পিকে তৃতীয় সোনার দেখা পাবেন? কিংস্টনে কাল অলিম্পিক ডেসটিনি মিটিংয়ে শেলি যে নজির গড়েছেন, তাতে এই ইভেন্টে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বিদের চিন্তা বাড়তেই পারে।

স্প্রিন্টে মেয়েদের ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম স্প্রিন্টার এখন বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। কিংস্টনের ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে বাকি প্রতিদ্বন্দ্বিদের কয়েক মিটার ব্যবধানে পেছনে ফেলে ১০.৬৩ সেকেন্ডে দৌড় শেষ করেন ৩৪ বছর বয়সী শেলি। ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের স্প্রিন্টার কারমেলিটা জেটারের ১০.৬৪ সেকেন্ডের কীর্তি পেছনে ফেলে শেলিই এখন দ্রুততম জীবিত নারী স্প্রিন্টার।

নাতাশা মরিসনকে পেছনে ফেলেছেন শেলি।
ছবি: রয়টার্স

তবে যুক্তরাষ্ট্রেরই প্রয়াত স্প্রিন্টার ফ্লোরেন্স গ্রিফিথ–জয়নারকে শেলি পেছনে ফেলতে পারেননি। ১৯৮৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অলিম্পিক ট্রায়ালে প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে ১০.৪৯ সেকেন্ডে ১০০ মিটার দৌড় শেষ করে বিশ্বরেকর্ড গড়েন ‘ফ্লো–জো’। মেয়েদের স্প্রিন্টিং ইতিহাসে এখনো পর্যন্ত তিনি–ই দ্রুততম মানবী। যদিও ফ্লো-জোর সেই কীর্তি বিভিন্ন কারণেই সন্দেহের চোখে দেখা হয়।

গ্রিফিথ-জয়নারের পর গত ৩৩ বছরের মধ্যে মেয়েদের ১০০ মিটার স্প্রিন্টে দ্রুততম টাইমিং গড়লেন শেলি। সব মিলিয়ে মেয়েদের ১০০ ইভেন্টে এটি চতুর্থ সেরা টাইমিং। আগের তিন সেরা টাইমিং–ই ফ্লো–জোর (১০.৪৯, ১০.৬১ ও ১০.৬২)। ১৯৮৮ সালেই এই তিনটি টাইমিংয়ে দৌড়েছিলেন তিনি। গতকাল দৌড় শেষে শেলি বলেন, ‘আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি, কারণ ১০.৬ টাইমিং ছিল আমার স্বপ্ন ও লক্ষ্য।’ বুলেটের মতো দৌড় শুরু করে নাতাশা মরিসন (১০.৯৫) ও কাশিকা ক্যামেরনকে (১১.৩৯) পেছনে ফেলেছেন জ্যামাইকান অ্যাথলেট। নাতাশা মরিসন

টোকিও অলিম্পিক উদ্বোধন করা হবে ২৩ জুলাই। এই অলিম্পিকে ব্যক্তিগত ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড ইভেন্টে প্রথম নারী হিসেবে তিনবার সোনা জয়ের সুযোগ পাচ্ছেন শেলি। এর পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি বয়সী নারী হিসেবে অলিম্পিক স্প্রিন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগও পাবেন তিনি। কাল তিনি পেছনে ফেলেছেন এ বছর শা’ক্যারি রিচার্ডসনের গড়া ১০.৭২ সেকেন্ডের টাইমিং। ২০০৮ ও ২০১২ অলিম্পিকে ১০০ মিটারের এই চ্যাম্পিয়ন এ বছর চতুর্থবারের মতো এই ইভেন্টে দৌড়ালেন। মেয়েদের ১০০ মিটার স্প্রিন্টের ইভেন্টে সর্বকালের সেরা টাইমিংয়ের তালিকায় মারিওন জোন্স (১০.৬৫) ও জেটারকে পেছনে ফেললেন তিনির

নিজের রেকর্ডের পর শেলি।
ছবি: রয়টার্স

শেলির এই ইতিহাস গড়ায় দৌড়ানোর জন্য নাইকির স্পাইক প্রযুক্তি বিতর্কও উঠেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘গার্ডিয়ান’–এর প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এক খ্যাতনামা কোচের দাবি—নাইকির সাম্প্রতিক দৌড়ানোর জুতো আগের সংস্করণের চেয়ে ১০০ মিটারে সেকেন্ডের ১০ ভাগের এক ভাগ সময় বেশি এগিয়ে রাখে।

তবে শেলির সাফল্যে তাঁকে অভিনন্দন জানাতে ভোলেননি অনেকেই। জেটার তাঁদের মধ্যে অন্যতম। তাঁর টুইট, ‘শেলি আবারও কীর্তি গড়েছে। তাকে প্রাপ্যটা বুঝিয়ে দিতেই হবে। সন্তান জন্ম দিয়ে ট্র্যাকে ফিরে বুঝিয়ে দিয়েছ তুমি কতটা প্রতিভাবান। এখন তুমি জীবিতদের মধ্যে দ্রুততম নারী। তরুণ রানিদের এভাবেই প্রেরণা দিয়ে যেয়ো।’