টোকিওতে ক্যারিয়ারসেরা টাইমিংও হলো না অ্যাথলেট জহিরের

সবার শেষে দৌড় শেষ করলেন জহির রায়হান।

দৌড়ের হিট শেষ হলেও টেলিভিশনের ক্যামেরায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না বাংলাদেশের অ্যাথলেট জহির রায়হানকে! সবার নজর তখন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাথলেট মাইকেল চেরিকে ঘিরেই। ৪০০ মিটার দৌড়ে জহিরের সঙ্গে একই হিটে প্রতিযোগিতায় নেমেছিলেন চেরি। ৪৪.৮২ সেকেন্ড সময় নিয়ে হিটে প্রথম হয়ে সেমিফাইনালে ওঠেন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাথলেট। আর ৪৮.২৯ সেকেন্ড সময় নিয়ে আটজনের মধ্যে অষ্টম হয়ে হিট শেষ করলেন জহির। সব মিলিয়ে ৪৭ জনের মধ্যে ৪৪তম হয়েছেন তিনি।

আজ দৌড় শুরুর আগে গেমস ভিলেজে।

নিজের ক্যারিয়ারসেরা টাইমিং করার লক্ষ্য নিয়ে টোকিও গিয়েছিলেন বিকেএসপির অ্যাথলেট। ঢাকা ছাড়ার সময় বলেছিলেন, ‘অলিম্পিকে আমার সেরা টাইমিং টপকে যেতে পারলেই খুশি হব।’ কিন্তু সেরাটা দিতে পারলেন কোথায়? এখনো বিশ্ব অ্যাথলেটিকস থেকে বাংলাদেশ যে যোজন যোজন দূরত্ব পিছিয়ে আছে, জহিরের দৌড় যেন চোখে আঙুল দিয়ে তা আরেকবার দেখিয়ে দিল।

৪০০ মিটারে জহিরের সেরা টাইমিং ৪৭.৩৪ সেকেন্ড। ২০১৯ সালে ভারতে আমন্ত্রণমূলক অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপে এই টাইমিংয়ে সোনা জেতেন তিনি। অথচ এবার টোকিওতে ০.৯৫ সেকেন্ড পিছিয়ে দৌড়ালেন জহির!

টোকিও অলিম্পিকে আর্চারি, শুটিং ও সাঁতারের ইভেন্ট থেকে একে একে বিদায় নিয়েছেন বাংলাদেশের অ্যাথলেটরা। সর্বশেষ প্রতিযোগী হিসেবে আজ ট্র্যাকে নেমেছিলেন অ্যাথলেট জহির রায়হান। টোকিওর স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ১ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টা ১ মিনিট) শুরু হয় জহিরের হিট। জহির দৌড়েছেন ৩ নম্বর হিটের ৩ নম্বর লেনে।

পরিচিতি পর্বের শুরুতে কয়েক সেকেন্ডের জন্য টিভি ক্যামেরা ধরা হয়েছিল জহিরের ওপর।। শুধু একবারই স্যালুট জানিয়ে দেন জহির দৌড় শুরুর আগে। আর দৌড় শুরুর পর সবার থেকে পিছিয়েই পড়ে রইলেন।

অ্যাথলেটিকসে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ১০০ মিটার স্প্রিন্ট। সেই ১৯৮৪ লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিক থেকেই ১০০ মিটার স্প্রিন্টের হিটে ছিলেন বাংলাদেশের কোনো না কোনো অ্যাথলেট। এবার কেউ নেই। এর আগে ১৯৯২ বার্সেলোনা অলিম্পিকে ৪০০ মিটারে দৌড়েছিলেন মেহেদি হাসান। ২৯ বছর পর এই ইভেন্টে এবার দৌড়ালেন জহির।

২০১৭ সালে কেনিয়ার নাইরোবিতে বিশ্ব যুব অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপে সেমিফাইনালে উঠে সবার নজর কাড়েন জহির। শেরপুরের এই অ্যাথলেট সময় নেন ৪৮ সেকেন্ড। ২০১৯ কাঠমান্ডু এসএ গেমসে জহিরকে নিয়ে পদক জয়ের স্বপ্ন দেখেছিল অ্যাথলেটিকস ফেডারেশন। কিন্তু দুর্ভাগ্য জহিরের, কাঠমান্ডুর উচ্চতার কারণে শ্বাস নিতে সমস্যা হওয়ায় ফাইনালে উঠেও নিজেকে সরিয়ে নেন। ওই সময় অসুস্থ জহিরকে পাঠানো হয়েছিল হাসপাতালে। কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালায় এসএ গেমসের হিটে ৪৮.২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে দ্বিতীয় হয়েছিলেন জহির। এ বছর জাতীয় অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপে হ্যান্ড টাইমিংয়ে ৪৭.২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে ৪০০ মিটারে সোনা জিতেছিলেন জহির।