ট্র্যাক নেই, খেলা হবে কোথায়?

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের অ্যাথলেটিক্‌স ট্র্যাকের বেহাল দশাছবি: শামসুল হক

২০০৬ সালে ১০ কোটি টাকায় বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে বসানো হয়েছিল নতুন অ্যাথলেটিকস ট্র্যাক। আরও কয়েক বছর আগেই সেটি নষ্ট হয়ে গেলেও এত দিন জোড়াতালি দিয়ে চালিয়ে নেওয়া হয় খেলা। এখন সেটিও প্রায় অসম্ভব। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় খেলাধুলার দরজা খুলে দিলেও তাই অ্যাথলেটিকসের প্রশ্ন-আমরা খেলব কোথায়?

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের ট্র্যাক খেলার অনুপযোগী হয়ে পড়ায় যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান বাংলাদেশ গেমসের অ্যাথলেটিকস বিকেএসপিতে আয়োজনের পরামর্শ দিয়েছিলেন। বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন অবশ্য চেয়েছিল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের ট্র্যাক মেরামত করেই কাজ চালিয়ে নিতে। করোনায় গেমস স্থগিত হয়ে যাওয়ায় কোনোটাই আর করতে হয়নি। তবে এখন যেহেতু আবার খেলা মাঠে ফেরানোর চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে, অ্যাথলেটিকস কোথায় হবে, সে প্রশ্নটা তো আসবেই।

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে না হলে অ্যাথলেটিক্‌স হবে কোথায়?
ছবি: শামসুল হক

বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রকিব নিজেই হাতড়ে বেড়াচ্ছেন এর উত্তর, ‘করোনার মধ্যেই আগামী মাসে খেলা দিয়ে দেব। কিন্তু আমাকে মাঠ দেন।’ আর্মি স্টেডিয়াম ও বিকেএসপিতে ট্র্যাক আছে। সফিপুর আনসার একাডেমিতে বাংলাদেশ আনসারের একটি ট্র্যাক বসানোর কাজও প্রায় শেষ। তবে ফেডারেশনের চোখ দেশের অ্যাথলেটিকসের সূতিকাগার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের ট্র্যাকের দিকে। কিন্তু ট্র্যাকের যা অবস্থা, সেখানে জাতীয় স্তরের খেলা সম্ভব নয় বলে মনে করেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক। বিকেএসপি বা আর্মি স্টেডিয়াম ব্যবহারেও আগ্রহী নয় ফেডারেশন। গত জানুয়ারিতে তো চট্টগ্রামের ঘাসের মাঠেই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ৪৩ তম জাতীয় অ্যাথলেটিকসের আসর।

২০০৬ সালে ১০ কোটি টাকা দিয়ে স্থাপিত হয়েছিল অ্যাথলেটিক্‌স ট্র্যাক।
ছবি: শামসুল হক

সেটি নিয়ে তখন সমালোচনা হওয়ায় ঘাসের মাঠে আর জাতীয় প্রতিযোগিতা আয়োজন করতে রাজি নয় ফেডারেশন। সমস্যা সমাধানেরও কোনো লক্ষণ নেই। অথচ করোনা-বিরতি শেষে মাঠে ফিরতে শুরু করেছে অন্যান্য খেলা। গতকাল ঢাকায় শেষ হয়েছে তিন দিনব্যাপী পুমসে তায়কোয়ান্দো প্রতিযোগিতা। ৪টি দল নিয়ে আগামীকাল পল্টন মাঠে শুরু হবে করোনা কাপ রাগবি। অ্যাথলেটিকসের পরিকল্পনা-বাংলাদেশ গেমসের আগে জুনিয়র ও সিনিয়র জাতীয় অ্যাথলেটিকস আয়োজন। কিন্তু বাংলাদেশ গেমসের ভবিষ্যৎই তো এখনো অনিশ্চিত! করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে এ বছরই গেমস আয়োজনের কথা বলেছিলেন বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা। কিন্তু পরিস্থিতির তেমন উন্নতি নেই। তারপরও আগামী মার্চে মুজিববর্ষ শেষ হওয়ার আগেই বাংলাদেশ গেমস আয়োজনের চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছে বিওএ।

দেশের সব স্কুল বন্ধ থাকায় আপাতত জুনিয়র প্রতিযোগিতা আয়োজন সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন সাধারণ সম্পাদক আবদুর রকিব। তবে অক্টোবর-নভেম্বরে সীমিত পরিসরে রিলে বা ম্যারাথন আয়োজনের চিন্তা আছে ফেডারেশনের। কিন্তু ঘুরেফিরে তাঁর সেই একই প্রশ্ন-খেলা হবে কোথায়? মাঠ কোথায়?’ কিন্তু প্রতিযোগিতা আয়োজনে সমস্যা হলেও এই সময়ে খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা তো অন্তত করা যায়! ফেডারেশনের সহসভাপতি ফারুকুল ইসলাম সেটিতে গুরুত্ব দিতে চাইলেও সাধারণ সম্পাদক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির ব্যাপারে নীরব।