ঢোকার সুযোগ নেই, অলিম্পিক স্টেডিয়ামের বাইরে ভিড় আগ্রহী জাপানিদের

মানুষ হাজির হয়েছেন স্টেডিয়ামের সামনেছবি: রয়টার্স

৬৮ হাজার দর্শক একসঙ্গে খেলা দেখতে পারেন এখানে। ৬৮ তো দূরের কথা, ১ হাজার দর্শকও দেখা যাবে না টোকিও অলিম্পিক স্টেডিয়ামে। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে আজ উদ্বোধন হচ্ছে টোকিও অলিম্পিকের। কিন্তু টোকিওবাসীর সুযোগ হচ্ছে না নিজের উঠানের অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান গ্যালারিতে বসে দেখার। আর বিশ্বের অন্যান্য দেশের দর্শকের মতোই টিভিতেই তাদের দেখতে হবে এই মহাযজ্ঞ।

মহাগুরুত্বপূর্ণ সব ব্যক্তি, কর্মকর্তা ও আয়োজক কমিটির বাছাইকৃত ব্যক্তি মিলিয়ে কয়েক শ ব্যক্তি আজ অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকবেন। বাংলাদেশ সময় বিকেল পাঁচটার সে অনুষ্ঠান দেখার সুযোগ নেই সাধারণ নাগরিকদের। কিন্তু অতি উৎসাহী ব্যক্তিদের এতে বয়েই গেছে। স্টেডিয়ামে ঢোকার সুযোগ নেই জেনেও ঠিকই অলিম্পিক স্টেডিয়ামের বাইরে ভিড় জমিয়েছেন শত শত মানুষ।

এই স্টেডিয়ামই অলিম্পিকের মূল ভেন্যু
ছবি: রয়টার্স

স্টেডিয়ামের পাশে অলিম্পিক মিউজিয়ামের সামনে দর্শক ভিড় করে অলিম্পিক রিংয়ের সঙ্গে ছবি তুলছিলেন। এই উৎসাহী ব্যক্তিদের একজন মাকো ফুকুহারা। স্টেডিয়ামের বাইরে কেন দাঁড়িয়ে আছেন, এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘আমরা আবহের জন্য এসেছি, এই আলোকসজ্জা (স্থানীয় সময় রাত আটটায় উদ্বোধন) ও আতশবাজি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখব, এই আশায় আছি। আর না পারলেও অন্তত অনুষ্ঠানের একটু স্বাদ পাচ্ছি। এত দিন পর্যন্ত মনেই হয়নি অলিম্পিক হচ্ছে। কিন্তু এখন স্টেডিয়ামের বাইরে আসার পর মনে হচ্ছে, অলিম্পিক আসলেই হচ্ছে।’

উৎসাহী মানুষের ভিড়
ছবি: রয়টার্স

কয়েক মাস ধরে নানা জরিপ দেখা গেছে, অলিম্পিক আয়োজনের বিপক্ষে স্থানীয় বাসিন্দারা। টোকিওতে এখনো জরুরি অবস্থা চলছে। কিন্তু একবার বিভিন্ন দেশের অ্যাথলেটরা জাপানে হাজির হতেই ধীরে ধীরে অলিম্পিকের প্রতি আগ্রহ বাড়তে শুরু করেছে। জাপানের বিমানবাহিনীর অলিম্পিক ডিসপ্লে দেখার জন্য হাজারো মানুষ জড়ো হয়েছিলেন আজ। এএফপিকে এক নারী বলেছেন, ‘আমি অলিম্পিককে স্বাগত জানাই। একজন জাপানি হিসেবে আমার গর্বের মুহূর্ত।’

অনুষ্ঠান উদ্বোধনের ছয় ঘণ্টা আগেই স্টেডিয়ামের সামনে হাজির হয়েছিলেন আইকো হিরোতো, ‘কোনো দর্শক থাকার সুযোগ নেই, তবু সবাই এখানে যে পরিবেশ আর আবহ তৈরি করেছেন, তাতে মুগ্ধ আমি। আশা করি, গ্যালারিতে দর্শক না থাকলেও অ্যাথলেটরা যেন বুঝতে পারেন, মানুষ তাঁদের সমর্থন দিচ্ছেন।’

কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে স্টেডিয়ামের বাইরে।
ছবি: রয়টার্স

হিরাতোই সবচেয়ে আগ্রহী দর্শক নন। তাঁর আগেই স্টেডিয়াম এলাকায় হাজির হয়েছেন আরও কিছু মানুষ। চীনের নাগরিক চো কৌকো তাঁদের একজন। অলিম্পিকের উদ্বোধন উপলক্ষে কয়েক দিন আগেই ওসাকা থেকে টোকিওতে হাজির হয়েছেন কৌকো, ‘আমি চীনের অ্যাথলেটদের সমর্থন দিতে এসেছি। সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় তাঁদের অভিবাদন জানাতে চাই।’

দীর্ঘদিন ধরে টোকিওতে আছেন তাইওয়ানের নাগরিক হান ই-তিং। সাড়ে তিন ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠানে আতশবাজি দেখার আশায় আছেন হান ই-তিং, ‘এক বছর ধরে অপেক্ষায় আছি, খুবই আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় আছি। এক বছর পেছানোতে খুব খারাপ লেগেছে। অবশেষে এখন হচ্ছে এবং আবহটা দারুণ লাগছে।’