নিজেকে নেইমারের সমান ‘বড়’ বানাতে চান ব্রাজিলীয় সার্ফার

সার্ফিংয়ে দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের মেদিনাছবি: রয়টার্স

ফুটবলে পাঁচবারের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। গ্যাব্রিয়েল মেদিনাও দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন, তবে তিনি ফুটবলে নন, সার্ফিংয়ে। সেটাও প্রথম ব্রাজিলিয়ান হিসেবে। সেদিক দিয়ে তিনি নেইমারকে পেছনে ফেলেছেন বড় ব্যবধানে। ২০১৮ সালে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো সার্ফিংয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন।

২০১৪ সালে সার্ফিংয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়ে ব্রাজিলিয়ানদের মনোযোগ নিজের দিকে ঘুরিয়ে নেন মেদিনা। সময়টা খেয়াল করুন—২০১৪, যে বছর বিশ্বকাপ হয়েছিল ব্রাজিলে। আর ব্রাজিলিয়ানরা স্বাদ পেয়েছিল ‘মিনেইরোজো’র। জার্মানির কাছে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ৭–১ গোলে হারের সেই ইতিহাস তো ব্রাজিলের জন্য জাতীয় ট্র্যাজেডিই।

ব্রাজিলে সার্ফিং জনপ্রিয় করেছেন মেদিনা।
ছবি: রয়টার্স

বিজয়ীরা ব্রাজিলে ‘বীর’। যে বীরত্বের আসনে ব্রাজিলীয়রা বসিয়ে রেখেছে অনেককেই—পেলে, গারিঞ্চা, তোস্তাও, জিকো, সক্রেটিস, রোমারিও, রোনালদো নাজারিও, রোনালদিনহো, রবার্তো কার্লোস কিংবা নেইমারদের, ‘ব্রাজিলীয়রা বিজয়ীদের পছন্দ করে। তাদের বীর মনে করে। আমি যদি সার্ফিংয়ে অলিম্পিকে সোনার পদক জিততে পারি, তাহলে আমাকেও তারা তেমনই মনে করবে। ব্রাজিলীয়রা কঠোর পরিশ্রমকে সম্মান করে। আর সার্ফিংয়ে অলিম্পিক সোনা জয়ের মানেই হলো কঠোর পরিশ্রম আর মানসিক দৃঢ়তা।’

স্বপ্নটার পথে আরেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফেরোইরাকে নিয়ে অনেকটা পথ এগিয়ে গেছেন মেদিনা। এ দুজনই ২০১৯ সালে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। এবারের টোকিও অলিম্পিকে দুজনই সার্ফিংয়ে নিজেদের ইভেন্টে উঠে গেছেন কোয়ার্টার ফাইনালে। শুধু তাঁরাই নন, নারী ইভেন্টে ব্রাজিলকে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন সিলভানা লিমা নামের আরেক সার্ফার।

সার্ফিংয়ে ব্রাজিল এখন ‘পাওয়ার হাউজ’
ছবি: রয়টার্স

সার্ফিংয়ে ব্রাজিল এক দশক ধরেই সাফল্য পেয়ে আসছে। ফুটবলের সঙ্গে তুলনা করা হয়তো যাবে না, কিন্তু সার্ফিংয়ে ব্রাজিল এখন রীতিমতো ‘পাওয়ার হাউস’। পুরো ব্যাপারটিই এখন ‘ব্রাজিলিয়ান ঝড়ে’ পরিণত হয়েছে।

২০১৪ সালে সার্ফিংয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা জীবন পুরোপুরি বদলে দেয় মেদিনার। তারকাখ্যাতি তো পেয়েছেনই। ফুটবল আর ভলিবল–প্রিয় ব্রাজিলিয়ানরা তাঁকে আপন করে নিয়েছে। তবে তাঁর আরও পথ পেরোনো বাকি, স্বপ্নটা তাঁর আরও বড়—অলিম্পিকের সোনা জিতে ঢুকে যেতে চান ব্রাজিলীয় খেলাধুলার ইতিহাসে, ‘২০১৪ সালে আমি যখন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হলাম, তখন সবাই আমার খোঁজখবর নেওয়া শুরু করল। সার্ফিং নিয়ে আগ্রহ দেখানো শুরু করল। মোট কথা, সবাই যেন আরও বেশি করে আগ্রহী হয়ে উঠল খেলাটির প্রতি। এটা বড় পাওয়া আমাদের জন্য। ২০১৪ সালের আগের জীবন আর এর পরের জীবন পুরোপুরিই ভিন্ন।’