বিশ্বসেরা সাঁতারুকে কেড়ে নেবে মানসিক অবসাদ?

মাইকেল ফেলপসকে সর্বকালের সেরা অলিম্পিয়ানও হয়তো বলা যায়।ছবি: ইনস্টাগ্রাম

তাঁকে যদি সর্বকালের সর্বসেরা অলিম্পিয়ান বলা হয়, আপত্তি করার তেমন লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া আসরে ২৩টি সোনার পদক জয় করা কি চাট্টিখানি কথা?

সাঁতারের ইতিহাস বলতে গেলে এককালে নিজেই ভেঙেছেন, একাই গড়েছেন। সাঁতার বলতে এককালে মাইকেল ফেলপস ছাড়া মানুষ তেমন কি কাউকে চিনত? কেউ সাঁতার দেখুক বা না দেখুক, মাইকেল ফেলপসকে চেনেন না, এমন ক্রীড়ামোদী খুঁজে পাওয়া যাবে না।

ফেলপস ছিলেন এমনই। খেলোয়াড় কোনো একটা নির্দিষ্ট খেলাকে অতিক্রম করে আকাশ ছুঁয়েছেন, এমন উদাহরণ বলতে গেলে পাওয়াই যায় না, যাঁদের পাওয়া যায়, তাঁর মধ্যে ফেলপসের নাম থাকবে সবার আগে। সেই ফেলপসই কিনা এখন আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছেন!

মানসিক অবসাদের করাল গ্রাসে ক্রীড়াবিশ্ব কত খেলোয়াড়কেই তো হারিয়েছে। ক্রিকেটার মার্কাস ট্রেসকোথিক, জোনাথন ট্রটের মতো খেলোয়াড়েরা তো মানসিক অবসাদের সঙ্গে পেরে না উঠে অবসরই নিয়ে নিলেন। ক্যারিয়ারের বিভিন্ন সময়ে এই অদৃশ্য শত্রুর সঙ্গে লড়েছেন কতশত ক্রীড়াতারকা। এখন দেখা গেল, এই তারকায় যুক্ত আছেন ফেলপসও।

স্ত্রী নিকোলের সঙ্গে ফেলপস।
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

সম্প্রতি ফেলপসের সহধর্মিণী নিকোল জানিয়েছেন, মানসিক অবসাদের জন্য প্রিয়তম স্বামীকে হারানোর আশঙ্কা করছেন তিনি। টুডে ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি নিজের এই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন।

আর এই ভয়ের সময়টা নিকোল বেশি কাটিয়েছেন আরেক ক্রীড়াতারকা কোবি ব্রায়ান্টের অকালমৃত্যুর পর, ‘ভ্যানেসা ব্রায়ান্ট যখন কোবি ব্রায়ান্টকে হারাল, আমি শুধু মাইকেলের মুখের দিকে চাইতাম, আর জিজ্ঞাসা করতাম, আমরা কী তোমাকে সাহায্য করতে পারি? কারণ, আমি যদি তোমাকে হারাই, আমি জানি না আমি কী করব।’

মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সবাইকে সচেতনও করে চলেছেন ফেলপস।
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

ফেলপস নিজেও বছর দুয়েক আগে নিজের এই অদৃশ্য শত্রুর ব্যাপারে জানিয়েছিলেন সবাইকে। সিবিএসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ২০১৮ সালে ফেলপস জানিয়েছিলেন, ‘আমার এক অংশ কখনো কখনো চাইত বেঁচে না থাকতে। ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকের পর এমনটা মনে হয়েছিল সবচেয়ে বেশি। অনেক উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গিয়েছি তখন।’

করোনাভাইরাসের কারণে এখন বলতে গেলে গৃহবন্দী অবস্থাতেই থাকতে হয় ফেলপসদের। আর সেটিই কাল হয়েছে এই কিংবদন্তি সাঁতারুর জন্য বলে জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী, ‘রোগটা যাচ্ছেই না। আমি ভেবেছিলাম হয়তো আমি রোগটা সারাতে পারব। ওর থেরাপিস্ট হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু দিন যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি একটা জিনিস বুঝেছি, ওকে যত ভালোবাসিই না কেন, ওর মাথায় কী চলছে না চলছে, সেটা বোঝার সাধ্য আমার নেই।’