মেরিনার্সকে হারিয়ে লিগ জমিয়ে দিল আবাহনী

মেরিনার্সকে হারিয়ে আবাহনীর খেলোয়াড়দের উচ্ছ্বাসছবি: প্রথম আলো

আবাহনীর সঙ্গে ড্র করলেই চ্যাম্পিয়ন—এমন সমীকরণ সামনে রেখে আজ খেলতে নেমেছিল মেরিনার্স ইয়াংস। শেষ মিনিট পর্যন্ত দলটি ৩-২ গোলে এগিয়ে থেকে শিরোপার স্বপ্ন দেখছিল। কিন্তু শিরোপা আর মেরিনার্সের মাঝখানে যখন কয়েক সেকেন্ডের দূরত্ব, তখনই হকি তার আসল সৌন্দর্য নিয়ে হাজির মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে।

হারতে বসা ম্যাচে শেষ মিনিটে দুই গোল করে নাটকীয়ভাবে ৪-৩ গোলে ম্যাচ জিতে নিয়েছে আবাহনী। ফলে উৎসবের প্রস্তুতি নিয়ে এসেও মেরিনার্স চ্যাম্পিয়ন হতে পারল না আজ। তাদের যাবতীয় উৎসব পিছিয়ে দিল আবাহনী। ম্যাচে ৭টি গোলের একটি পেনাল্টি স্ট্রোকে, বাকি ৬টি পেনাল্টি কর্নারে। অর্থাৎ আজ কোনো ফিল্ড গোল হয়নি।

আবাহনী–মেরিনার্স ম্যাচের একটি মুহূর্ত
ছবি: প্রথম আলো

প্রিমিয়ার হকি লিগের শেষ ম্যাচে শনিবার মেরিনার্সের মুখোমুখি মোহামেডান। মেরিনার্সকে সেদিন মোহামেডান হারাতে পারলে তিন বড় দলেরই পয়েন্ট সমান ৩৯ হবে। সে ক্ষেত্রে তিন দলের মধ্যে প্লেঅফ হওয়ার কথা। অন্তত লিগের বিধিতে সেটিই বলা আছে। আজকের নাটকীয়তার পর শেষ পর্যন্ত কী হবে বলা যাচ্ছে না। তবে আজ না পারলেও মোহামেডানের বিপক্ষে এক পয়েন্ট পেলেও চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে মেরিনার্স।

আবাহনীর আজকের জয়ে দারুণ উজ্জীবিত সাদা–কালোরা। তারাও চাইবে মেরিনার্সকে হারাতে। আবাহনী আজ একটা সুযোগ করে দিয়েছে। সেটা কাজে লাগানোই এখন লক্ষ্য মোহামেডানের।

আজ ম্যাচ শেষ হওয়ার মাত্র ৪৭ সেকেন্ড আগে আবাহনী ৩-৩ করার পর বাকি ছিল মাত্র ২ সেকন্ডে। তখন আবার পেনাল্টি কর্নার পায় আবাহনী এবং তা থেকে ডিফেন্ডার খোরশেদুর রহমানের গোল অবিশ্বাস্য এক জয় এনে দেয় আবাহনীকে। শেষ মিনিটে জোড়া গোল করে আবাহনীর নায়ক খোরশেদুর রহমান। বৃথা গেছে মেরিনার্সের সোহানুরের দুরন্ত হ্যাটট্রিক।

ম্যাচের সপ্তম মিনিটে প্রথম আক্রমণেই ডাচ ফরোয়ার্ড কেলারম্যানের ফ্রি হিটে আচমকা রোমান সরকারের আলতো ফ্লিকে আবাহনী গোল করে। শ্রীলঙ্কার আম্পায়ার গোল দেন। তবে মেরিনার্স গোল পুনর্বিবেচনা চাইলে গোল বাতিল করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে আবাহনী গোলকিপার আবু সাইদ (নিপ্পন) ছুটে যান তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে। গোল না দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান। আবাহনীর অন্য খেলোয়াড়েরাও প্রতিবাদ জানাতে থাকেন এই সময়।

ম্যাচ শেষে আবাহনীর খেলোয়াড়দের জয়োচ্ছ্বাস
ছবি: প্রথম আলো

শেষ পর্যন্ত গোল বাতিলই হয়েছে। এই ঘটনায় ১৫ মিনিট একটানা খেলা বন্ধ ছিল। পরপরই খেলা শুরুর প্রথম মিনিটেই পেনাল্টি স্ট্রোকে হল্যান্ডের তারকা কেলারম্যান সহজেই ১-০ করেন। ১৪ মিনিটে পেনাল্টি কর্নারে মেরিনার্সের মিলনের পুশ, সুখজিতের স্টপ ও সোহানুরের হিটে ১-১। ১৭ মিনিটে ভারতীয় ফরোয়ার্ড অভিষেকের পাসে সোহানুরের আলতো প্লেসিংয়ে মেরিনার্স এগিয়ে যায় ২-১ গোলে।

এরপর মেরিনার্সের সুখজিতের হিট লাগে আবাহনীর পোস্টে। একবার নিশ্চিত গোল আটকান আবাহনীর গোলকিপার। ২৫ মিনিটে পেনাল্টি কর্নারে ২-২ করেন আবাহনীর ডাচ তারকা মরিস। মেরিনার্স গোল পুনর্বিবেচনা চাইলেও এটি বৈধ গোল হয়। পরপরই সোহানুরের হ্যাটট্রিক পূর্ণ। মেরিনার্স এগিয়ে গেল ৩-২ গোলে। এরপর শেষ মিনিটের নাটকে আবাহনীর জয়।

প্রথম কোয়ার্টারে মিনিটে মিনিটে খেলা বন্ধ ছিল। দুই দলই আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধাচরণ করেছে বারবার। আস্তে আস্তে এই ধারাটা কমে আসে। ম্যাচও শেষ হয় শান্তিপূর্ণভাবে। তবে এক ঘণ্টার ম্যাচ শেষ হয়েছে প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টায়।