কানসেলোকে আর সিটিতে ফেরত আনতে চান না গার্দিওলা

গার্দিওলার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করে সিটি ছেড়েছেন কানসেলোএএফপি

গত মৌসুমে ম্যানচেস্টার সিটির অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার ছিলেন তিনি। কাতার বিশ্বকাপের আগপর্যন্তও দারুণ ফর্মে ছিলেন জোয়াও কানসেলো। কিন্তু বিশ্বকাপের পর হঠাৎ করেই পেপ গার্দিওলার একাদশে অনিয়মিত হয়ে গেলেন পর্তুগিজ এই ফুলব্যাক। শোনা গেল, গার্দিওলার সঙ্গে নাকি তাঁর সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। সেই গুঞ্জন আর মিথ্যে বলে উড়িয়ে দেওয়ার উপায় থাকল না, যখন দেখা গেল, ধারে এই ডিফেন্ডারকে বায়ার্ন মিউনিখে পাঠিয়ে দিয়েছে সিটি। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, এখন শোনা যাচ্ছে, কানসেলোর আর সিটিতে ফেরার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। গার্দিওলার দলে আর খেলার সম্ভাবনা নেই কানসেলোর।

আরও পড়ুন


ভ্যালেন্সিয়া, ইন্টার মিলান ও জুভেন্টাসে খেলে ইউরোপের ফুটবলে নজর কাড়েন কানসেলো। তবে তিনি সময়ের সেরা ফুলব্যাকদের একজন হয়ে ওঠেন আসলে পেপ গার্দিওলার অধীন ম্যানচেস্টার সিটিতেই। রক্ষণের দুই পাশেই স্বছন্দে খেলতে পারেন, আক্রমণেও দুর্দান্ত—সব মিলিয়ে কানসেলো হয়ে উঠেছিলেন গার্দিওলার দলের অন্যতম সেরা তারকা। তবে কাতার বিশ্বকাপের পর তিনি সিটির একাদশে অনিয়মিত হয়ে পড়েন। বিশ্বকাপের পর খেলা ১০ ম্যাচের মাত্র ৩টিতে শুরুর একাদশে ছিলেন কানসেলো। শোনা যাচ্ছে, তাঁর সঙ্গে গার্দিওলার সম্পর্কে ফাটল দেখা দেয় সম্ভবত এর আগেই।

গার্দিওলা-কানসেলো: এখন দুজনার দুটি পথ দুদিকে...
এএফপি

এরপর গত মাসে আর্সেনালের বিপক্ষে এফএ কাপের ম্যাচে একাদশে জায়গা না পেয়ে ক্ষোভ দেখানোয় কোচ ও ক্লাবের সঙ্গে কানসেলোর সম্পর্ক পুরোপুরি ভেঙে পড়ে। জানুয়ারির এই দলবদলের সময় তাই কানসেলোকে বায়ার্নে ধারে পাঠিয়ে দেয় সিটি। আপাতত এই মৌসুমের বাকি সময়টা সেখানে তিনি ধারে থাকবেন। তবে মৌসুম শেষে সাত কোটি ইউরোতে তাঁকে কিনে নেওয়ার সুযোগ থাকছে বায়ার্নের।

পেপ গার্দিওলা আর ফেরত আনতে চান না কানসেলোকে
এএফপি
সে এমন এক খেলোয়াড়, যে অনুশীলনে নিজের সেরাটা দেয়। তবে আমার নতুন ছকে সে খেলার সুযোগ কিছুটা কম পাচ্ছে। সে কম খেলছে, এটা বলা যাবে না। কারণ, গত বছর সবচেয়ে বেশি সময় খেলা খেলোয়াড়দের একজন ছিল সে।
পেপ গার্দিওলা

শোনা যাচ্ছে, গার্দিওলাই আর চান না, কানসেলো সিটিতে ফেরত আসুক। সিটির কর্তাব্যক্তিরাও এ নিয়ে গার্দিওলার সঙ্গে একমত বলে জানিয়েছে ইংল্যান্ডের বেশ কয়েকটি পত্রিকা। গার্দিওলা অবশ্য সরাসরি কানসেলোর বিষয়ে নেতিবাচক কিছু বলেননি। কানসেলোকে কেন সিটি ছাড়তে হলো, এই ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সিটি কোচ গত সপ্তাহে দলের এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আমাদের শেষ দুটি প্রিমিয়ার লিগ জয়ের পেছনে ওর (কানসেলোর) অনেক বড় ভূমিকা। তবে বিশ্বকাপের পর আমি কিছুটা অন্যভাবে দলকে খেলানো শুরু করেছি। আমি যা দেখেছি, সেই অনুযায়ী যেসব খেলোয়াড় ওই ছকে মানানসই, তাদের বেশি সুযোগ দেওয়ার চেষ্টা করছি। সে এমন এক খেলোয়াড়, যে অনুশীলনে নিজের সেরাটা দেয়। তবে আমার নতুন ছকে সে খেলার সুযোগ কিছুটা কম পাচ্ছে। সে কম খেলছে, এটা বলা যাবে না। কারণ, গত বছর সবচেয়ে বেশি সময় খেলা খেলোয়াড়দের একজন ছিল সে।’

এরই মধ্যে বায়ার্নের হয়ে অভিষেক হয়েছে কানসেলোর
এএফপি

বায়ার্ন মিউনিখে কানসেলো অনেক ভালো করবেন বলে প্রত্যাশা গার্দিওলার, ‘সে যত বেশি খেলার সুযোগ পাবে, তত খুশি থাকবে। আমরা সবাই মিলে তাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সিটি, বায়ার্ন ও সে। বায়ার্ন তাকে চেয়েছিল, কারণ সে দুর্দান্ত এক খেলোয়াড়। আমি ওর সম্পর্কে একটাও বাজে কথা বলব না। ওর নিষ্ঠা, পরিশ্রম, খেলার প্রতি আন্তরিকতা কেমন, আমরা সবাই জানি।’
তবে গার্দিওলা কিছু না বললেও সিটিতে যে কানসেলোর আর ফেরত আসার সম্ভাবনা নেই, সেটা কিছুটা স্পষ্ট হয়ে গেছে এরই মধ্যে। ইংল্যান্ডের বেশ কয়েকটি পত্রিকা লিখেছে, কানসেলোকে ফেরত আনার ইচ্ছা নেই সিটির ম্যানেজমেন্টেরও, সেটা গার্দিওলার ইচ্ছার কারণেই। তাঁর জায়গায় ২৭ বছর বয়সী ডাচ ডিফেন্ডার নাথান আকে খেলছেন আপাতত। ১৮ বছর বয়সী রিকো লুইসকেও বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করছেন পেপ গার্দিওলা। বোঝাই যাচ্ছে, মৌসুম শেষে হয়তো বায়ার্নেই স্থায়ী হতে হবে কানসেলোকে।

আরও পড়ুন