১২ ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়ে জিমি বললেন সবই ষড়যন্ত্র

রাসেল মাহমুদ জিমি

ঘরোয়া হকির সবচেয়ে বড় তারকা রাসেল মাহমুদ জিমিকে নিষিদ্ধের সুপারিশ করেছিল হকির শৃঙ্খলা কমিটি। সে সুপারিশের ভিত্তিতে আজ হকি ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির সভায় ১২ ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হয়েছে তাঁকে।

এ ছাড়া মোহামেডানের সিয়াম ৩ ম্যাচ, সাদ ৭ ম্যাচ, নয়ন ২ ম্যাচ, মালয়েশিয়ান জুলপিদাম ২ ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছেন। মোহামেডানের সহকারী কোচ রাসেল খান পাঁচ ম্যাচ, কোচ গোপীনাথান কৃষ্ণমূর্তি আজীবন নিষিদ্ধ হয়েছেন। মোহামেডানের ম্যানেজার আরিফুল হককে নিষিদ্ধ করা হয়েছে চার বছর।

আবাহনীর তিন খেলোয়াড় পুষ্কর খীসা মিমো ২ ম্যাচ, আফনান ইউসুফ ২ ম্যাচ ও নাঈম ৩ ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছেন। কোচদের মধ্যে অ্যাজাক্সের এহতেশামকে ১০ ম্যাচ, দিলকুশার তাবিব ই নূরকে ৫ বছর ও পুলিশের মাকসুদুল আলম হাবুলকে ৩ ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সাবেক তিন খেলোয়াড় সাজেদ এ আদেল, তারেক এ আদেল ও জহিরুল ইসলাম মিতুল এবং মোহামেডানের পরিচালক জামাল রানা আজীবন নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন। এ ছাড়া দুই ক্লাব বাংলাদেশ স্পোর্টিং ও আজাদ স্পোর্টিংকে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন

হকি ফেডারেশনের সভায় সদ্য সমাপ্ত প্রিমিয়ার লিগে সমান ৩৭ পয়েন্ট পাওয়া আবাহনী ও মেরিনার্সকে যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়েছে। নিয়মানুযায়ী প্লে অফ হওয়ার কথা ছিল। ফেডারেশন প্লে অফ করতে চেয়েছিল। কিন্তু দুই ক্লাবই সময় চাওয়ায় লিগ কমিটি যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করার সুপারিশ করে নির্বাহী কমিটিতে।

১২ ম্যাচ নিষিদ্ধ রাসেল মাহমুদ জিমি
প্রথম আলো

বাইলজকে পাশ কাটিয়ে নির্বাহী কমিটি গতকাল দুই ক্লাবকে যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন করেছে।
দুই ক্লাবকে যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন ঘোষণার কারণ ব্যাখ্যা করে হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক সাঈদ বলেন, ‘দুই ক্লাবই ম্যাচটি খেলতে দুই মাস সময় চেয়েছে। কিন্তু আমাদের পক্ষে এত সময় দেওয়া সম্ভব নয়। লিগ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে নির্বাহী কমিটি দুই ক্লাবকে যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করেছে।’

কোচ–খেলোয়াড়–কর্মকর্তাদের নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তের সুপারিশ এসেছে ফেডারেশনের শৃঙ্খলা কমিটি থেকে। কিন্তু কমিটিতে কারা আছেন কেউ জানে না। ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক বিষয়টি আড়াল করে বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ অভ্যন্তরীণ বিষয়। শৃঙ্খলা কমিটিতে কারা আছেন এটি হকি ফেডারেশন প্রকাশ করতে বাধ্য নয়।’

তিন কার্ড পাওয়ায় জিমি আবাহনীর বিপেক্ষে অঘোষিত ফাইনালে খেলতে পারেননি। এরপরও হকি ফেডারেশন তাঁকে ১২ ম্যাচ নিষিদ্ধ করেছে। এ নিয়ে সাধারণ সম্পাদকর ভাষ্য, ‘প্রতিটি ম্যাচের আম্পায়ারস রিপোর্ট ও ভিডিও বিশ্লেষণ করে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে। তার কারণে খেলা বারবার স্থগিত হয়েছে।’ তবে এ অভিযোগ উড়িয়ে প্রথম আলোকে জিমি বলেছেন, ‘আমার বিরুদ্ধে এটা ষড়যন্ত্র এবং অবশ্যই সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। কী কারণে শাস্তি দিল, কেন দিল, কিছুই বুঝলাম না।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘রিভিউ তো চাইতেই হবে। আর রিভিউ চাইলে খেলা বন্ধ হবে, এটাই স্বাভাবিক। এখানে আমার দোষ কোথায়?’

আরও পড়ুন

সবচেয়ে অবাক করা বিষয়, মালয়েশিয়ান কোচ গোপীনাথনের আজীবন নিষিদ্ধ হওয়া। বিকেএসপি, জাতীয় দলের পর এ বছর মোহামেডানের হয়ে কোচিং করাতে এসেছিলেন তিনি। আর এসেই পেলেন বিরাট শাস্তি। হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকের ব্যাখ্যা, ‘তিনি বাংলাদেশের হকি নিয়ে গণমাধ্যমে বিরুপ মন্তব্য করেছে, যা দেশের ও হকি ফেডারেশনের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। তিনি আন্তর্জাতিক কোচ হয়েও নিয়ম বহির্ভূতভাবে বারবার ম্যাচের মধ্যে গিয়েছেন।’

আজীবন নিষিদ্ধদের ব্যাপারে সাধারণ সম্পাদকের ব্যাখ্যা, ‘তারেক আদেল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ইউটিউব চ্যানেলে হকি ফেডারেশন নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছেন। সাজেদ আদেল-মিতুল একটি আদালতের রিট নিয়ে এশিয়ান হকি ফেডারেশনে সবার কাছে মেইল এবং হোয়াটসঅ্যাপ করেছেন, যা তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। মোহামেডানের পরিচালক জামাল রানাও হকি ফেডারেশন নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছেন।’ তবে নিয়ম অনুযায়ী শাস্তিপ্রাপ্তরা আপিল করতে পারবেন।