৯টি ফেডারেশনে সরকার যে অ্যাডহক কমিটি করেছে, তাতে বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে শুধু আপনিই আছেন। আপনাকে আবার দায়িত্ব দেওয়ার কারণ কী বলে মনে হয়?
ব্রিগেডিয়ার (অব.) জেনারেল জি এম কামরুল ইসলাম: ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে আমি স্কোয়াশের সাধারণ সম্পাদক। চেষ্টা করেছি খেলাটা এগিয়ে নিতে। গত ৫৩ বছরের মধ্যে দেশের স্কোয়াশ সবচেয়ে ভালো অবস্থায় এখন। যদিও আরও অনেক কিছু করা সম্ভব। এ কারণেই হয়তো সরকার আমার ওপর আস্থা রেখেছে।
৫৩ বছরের মধ্যে দেশের স্কোয়াশ সবচেয়ে ভালো অবস্থায় আছে বলছেন। কিন্তু গত এসএ গেমসেই তো কোনো পদক পায়নি স্কোয়াশ। এর ব্যাখ্যা কী?
কামরুল ইসলাম: ২০১৯ এসএ গেমসে আমরা নেপালের কাছে হেরে পদক পাইনি। এসএ গেমসে স্কোয়াশে ৪টি পদক। পুরুষ বিভাগে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা তিনটি পায়। ৪ নম্বরটা বাংলাদেশ পেত ভোলা, স্বপন, সোহেল, রাজু, শহীদরা যখন খেলত। ২০০৬, ২০১০ ও ২০১৬ এসএ গেমসে চতুর্থ হয়ে পদক আসে। দুই বছর ধরে স্কোয়াশে আমাদের মেয়েদের টিমও হয়েছে। পরের এসএ গেমসে মেয়েরাও খেলবে এবং আশা করি ভালো করবে।
কিন্তু স্কোয়াশের প্রচার নেই, প্রসারও নেই। অনেকে মনে করেন, স্কোয়াশ শুধু খেলার জন্যই খেলা। কী বলবেন?
কামরুল ইসলাম: বর্তমান প্রেক্ষাপটে আপনার ধারণাটা সঠিক। কিন্তু এটা পরিবর্তন করে স্কোয়াশকে সাধারণ মানুষের কাছে নিতে আমরা কাজ করছি। আমাদের দেশে স্কোয়াশের যে অবকাঠামো আছে, সেগুলো চালু করতে পারলে এই প্রচেষ্টা সফল হবে। উপমহাদেশে স্কোয়াশ খেলার ঐতিহ্য আছে। পাকিস্তান, ভারত, শ্রীলঙ্কা স্কোয়াশে খুবই ভালো। সাম্প্রতিক কালে নেপালও খেলছে। আমাদেরও অনেক সম্ভাবনা আছে।
কিসের ভিত্তিতে সম্ভাবনার কথা বলছেন? দেশে স্কোয়াশ খেলোয়াড়ের সংখ্যাই–বা কত?
কামরুল ইসলাম: সংখ্যাটা ৩০০-৪০০ হবে। তবে নিয়মিত খেলে ২০০ জন। আর আশার ভিত্তি হলো, আমরা শিক্ষিত-মেধাবী নবীন খেলোয়াড় তৈরি করেছি। ওদের ভালো পরিবেশ দিতে পারলে সম্ভাবনা আছে বৈকি। ইতিমধ্যে বিকেএসপিতে ১৫ জন ছেলেকে নিবিড়ভাবে দেশি ও বিদেশি কোচের অধীন প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
কিন্তু দেশে যে স্কোয়াশ নামে একটা খেলা আছে, ফেডারেশন আছে, লোকে তো জানেই না। আপনি এই খেলায় বা ফেডারেশনে কী সংস্কার আনবেন?
কামরুল ইসলাম: স্কোয়াশের এলিট তকমা ভেঙে দিতে চাই। স্কোয়াশ হবে জনগণের খেলা। ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদেরও তুলে আনব, যাতে মেয়েদেরও ক্ষমতায়ন হয়। এটাই হবে আমাদের একটা সংস্কার। মানুষকে স্কোয়াশ সম্পর্কে জানানোর উদ্যোগও নেওয়া হবে।
আপনার এত আত্মবিশ্বাসী হওয়ার কারণ কী?
কামরুল ইসলাম: কারণ, আমরা একটা শক্তিশালী কমিটি পেয়েছি। আমাদের নতুন নতুন উদ্ভাবনী পদ্ধতি, যেমন ক্লাসরুম স্কোয়াশ এবং স্কোয়াশ লেখাপড়া প্রকল্প অনেক সুফল দিচ্ছে। সুতরাং আমাদের ভালো না করার কোনো বিকল্প নেই।
ক্লাসরুম স্কোয়াশের কথা বললেন। এটা আসলে কী?
কামরুল ইসলাম: যেহেতু আমরা বিভিন্ন স্কুল-কলেজের মাধ্যমে খেলাটা ছড়িয়ে দিতে চাইছি তৃণমূল পর্যায়ে, তাই একটা স্ট্যান্ডার্ড কোর্ট না হলেও একটা ক্লাসরুমেই খেলাটা শেখাচ্ছি। আর সেটা স্কুল-কলেজের ক্লাসরুমে। দেয়ালে মার্কিং করে ওটাকেই কোর্ট হিসেবে ধরে স্কোয়াশ খেলা হয়।
মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে স্কোয়াশ ফেডারেশনের অফিস। ওটার বর্তমান অবস্থা কী?
কামরুল ইসলাম: ওই অফিসে আমরা যাই সপ্তাহে এক-দুদিন। বাকি সময় যেসব জায়গায় খেলা হয়, ওই সব জায়গায় থাকি। ক্যান্টনমেন্ট থেকে মিরপুর পর্যন্ত এলাকার স্কুলগুলোতে আমাদের কার্যক্রম বেশি।
স্কোয়াশের একটা কমপ্লেক্স হবে শোনা গিয়েছিল কয়েক বছর ধরে। সেটার সর্বশেষ খবর কী?
কামরুল ইসলাম: বনানীতে সাড়ে ১২ কাঠা জায়গা রাউজক বরাদ্দ দিয়েছে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় মূল্য পরিশোধ করলে (সাড়ে ছয় কোটি টাকা) জায়গাটা আমরা বুঝে পাব। আমাদের নিজস্ব একটা স্কোয়াশ কমপ্লেক্স খুবই প্রয়োজন।
আপনি দীর্ঘদিন গলফ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আপনার সময় সিদ্দিকুর রহমানসহ অনেক গলফার তৈরি হয়েছে। স্কোয়াশে কীভাবে এলেন?
কামরুল ইসলাম: স্কোয়াশের সঙ্গে সম্পৃক্তরা অনেকটা জোর করে আমাকে স্কোয়াশে এনেছে। আমি না বলতে পারিনি।