এই সাক্ষাৎকার যে বিভাগের জন্য নেওয়া হচ্ছে, সেটির নাম ‘তারাদের অন্য ভুবন’। তারা মানে তারকা। তা, আপনার কাছে তারকার অর্থ কী?
নাজমুল হোসেন: আপনি তারকা কাকে বলবেন, রাস্তা দিয়ে একটা মানুষ হেঁটে যাচ্ছেন, আপনি দেখে চিনে ফেলছেন। কেন চিনে ফেলছেন? তাঁর হয়তো কাজের জন্য, সেটা অনেক ক্ষেত্রে নেগেটিভ অর্থেও হয়, পজিটিভ ক্ষেত্রেও হয়। আমি পজিটিভ অর্থেই বলি। তারকা বলতে আমি যে রকম বুঝি সাকিব আল হাসান। আমি বুঝি লিওনেল মেসি, আমি বুঝি বিরাট কোহলি, শচীন টেন্ডুলকার। তাঁদের সাফল্য ও অর্জনের জন্য মানুষ যেভাবে ফলো করে, পাগলের মতো ভালোবাসে। অনেকেই হয়তো অনেক সাকসেসফুল, কিন্তু কিছু মানুষ থাকে না, যাঁদের নিয়ে কেউ হয়তো চিন্তা করে, যদি তাঁকে কাছ থেকে একবার দেখতে পেতাম।
আমাকে যদি বলেন, ছোটবেলায় আমি কী চিন্তা করতাম, আমার স্বপ্নই ছিল সাকিব আল হাসানের সঙ্গে ড্রেসিংরুম শেয়ার করব, তাঁর হাত থেকে ডেব্যু ক্যাপটা নেব। কেন আমার এটা মনে হয়েছিল? উনি বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার, নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার। বাংলাদেশের মতো একটা জায়গা থেকে এ রকম একটা অবস্থানে যাওয়া সম্ভব, এটা আমি কখনো চিন্তা করিনি। ওনাকে দেখার পর বুঝেছি, এটা সম্ভব। আমার কাছে তারকা বলতে এঁরাই।
আপনি কি নিজেকে তারকা মনে করেন না?
নাজমুল: এখন পর্যন্ত না। আমার কাছে মনে হয় যে এই জায়গায় যাওয়ার জন্য অনেক অনেক কাজ করা বাকি। তবে আমার মনে হয় যে লম্বা একটা সময় আছে, ইনশা আল্লাহ আমি যদি সুস্থ থাকি। এ মুহূর্তে আমি নিজেকে তারকার কাতারে ফেলি না।
আপনাকে রাস্তায় দেখলেও তো মানুষ চিনে ফেলে। তাহলে নিজেকে তারকা ভাবেন না কেন?
নাজমুল: কারণ, আমার কাছে মনে হয়, বাংলাদেশ ক্রিকেটকে আমার দেওয়ার আরও অনেক কিছু আছে। আমার অ্যাবিলিটি অনুযায়ী আমি যতটুকু ক্রিকেট খেলেছি বা আমি এখন বাংলাদেশ টিমের ক্যাপ্টেন, আমি খুবই খুশি। এতে আমি গর্বিতও। কিন্তু আমি তখনই নিজেকে তারকা মনে করব, আমার হাত ধরে যদি বাংলাদেশ দল একটা ট্রফি জেতে। ওই দলের ক্যাপ্টেন হওয়ারও দরকার নেই, আমি ওই দলের একজন খেলোয়াড় হতে পারলেই খুশি। তখন আমি হয়তো তারকার কাতারে পড়ব।
একটু আগে তো বললামই, তারকা বলতে কী বোঝায়। নরমাল অ্যাচিভমেন্ট তো অনেক মানুষই করেছে, কিন্তু যদি বিশেষ কিছু করতে না পারেন...। আপনি যদি লিওনেল মেসির কথাও বলেন, বিশ্বকাপ জেতার আগেও কিন্তু একটা প্রশ্নবোধক ছিল। আমি এ জন্যই নিজেকে এই জায়গাটাতে মনে করি না। আমি মনে করি, আমি আমার সামর্থ্য অনুযায়ী এখনো বাংলাদেশ ক্রিকেটকে কিছু দিতে পারিনি।
আপনি কি ইচ্ছা হলেই যেখানে খুশি ঘুরতে যেতে পারেন, রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ফুচকা খেতে পারেন?
নাজমুল: না, সেটা তো সম্ভব হয় না। তবে এটা আমি মিস করি না। কারণ, আমি ছোটবেলা থেকেই চেয়েছি আমাকে মানুষ ফলো করবে, আমার সঙ্গে কথা বলতে চাইবে, আমার ফ্যান-ফলোয়ার থাকবে। আমি কখনো চাইনি যে টংদোকানে বসে চা খাই, আমি কখনো চাইনি রাস্তায় দাঁড়িয়ে-বসে ফুচকা খাই। মাঝেমধ্যে আমার শখ হয়, মাঝেমধ্যে লুকিয়ে বা মাস্ক পরে বা কোনোভাবে ব্যবস্থা করে হয়তো যাই, কিন্তু আমার স্বপ্নই ছিল আমি নিজেকে ভালো একটা অবস্থানে নিয়ে যাব। ইশ্, যদি একটু ফুচকা খেতে পারতাম বন্ধুদের সঙ্গে বসে, আমি এই জিনিসটা মিস করি না। এই শখটা আমি পূরণ করি। কিন্তু এটা শখের বশে, ফ্রেন্ডদের সময় দিতে হবে, এই কারণে। কিন্তু আমি সব সময়ই বড় তারকা হতে চেয়েছি। যেটা আমি এখনো হতে পারিনি, একদিন হতে চাই।
আপনার চোখে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় তারকা কে? পুরো বিশ্বের কথাও যদি বলতে বলি...
নাজমুল: বাংলাদেশে আমার কাছে সাকিব আল হাসান। কারণ, আমি একটু আগেও বললাম, সাকিব ভাই আমাদেরকে, বিশেষ করে আমাকে ক্রিকেটে আসার পেছনে মোটিভেট করেছেন। তাঁকে দেখে তাঁর মতো হওয়ার ইচ্ছা জেগেছে। আমার চোখে উনি অন্য রকম একটা জায়গায় আছেন। আরও অনেকেই আছেন, কিন্তু আমার চোখে উনিই সবচেয়ে বড় তারকা।
তাহলে তো ধরেই নেওয়া যায়, সাকিব ভাইয়ের মতো আপনার চোখেও বিশ্বের সবচেয়ে বড় তারকা লিওনেল মেসি। সাকিব তো কার সঙ্গে দেখা করতে চান জিজ্ঞেস করলে বলেন, লিওনেল মেসি। আপনিও কি তা-ই বলবেন?
নাজমুল: হানড্রেড পার্সেন্ট। আমি ফুটবল খেলা খুব একটা পছন্দ করি না। যখন দেখি যে মেসি খেলছেন, তখনই খেলাটা দেখি আরকি, যদি সময় থাকে। আমি মেসির ফ্যান। বলতে পারেন, আর্জেন্টিনা আর মেসির ফ্যান। কোনো দিন মেসির সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেলে খুব ভালো লাগবে। আমি, সাকিব ভাই, মেসি—তিনজন মিলে আড্ডা মারতে পারলে তো দারুণ হবে!
আপনার দেখা প্রথম বড় তারকা কে?
নাজমুল: টিভিতে দেখে সব সময় শচীন টেন্ডুলকারের কথা মনে হতো। তাঁকে দেখে মনে হতো, তিনি অন্য রকম…খেলাই তো দেখতাম, বাইরের কোনো কিছু দেখতাম না। কিন্তু মাঠে যখন নামতেন, দর্শক যেভাবে হইচই, লাফালাফি করত; শচীন টেন্ডুলকারকে দেখে মনে হতো, হি ইজ সামথিং ডিফারেন্ট।
সামনাসামনি দেখা প্রথম বড় তারকা?
নাজমুল: সামনাসামনি দেখেছি, দেখে খুবই নার্ভাস লাগছে, এমন কারও কথা বলতে বললে তামিম ইকবাল। আমার মনে হয় ওটা প্রিমিয়ার লিগে। আবাহনীর হয়ে যখন প্রথম বছর খেলি, তখন উনি আমাদের দলে খেলেছিলেন। শেষের কিছু ম্যাচে তো সাকিব ভাইও। এটা সম্ভবত ২০১৬ সালে। ওনাকে যখন ড্রেসিংরুমে দেখি, আমি খুব নার্ভাস ছিলাম। কারণ, আমরা সবাই জানি উনি বাংলাদেশের কত বড় খেলোয়াড়।
আমি নিজেও তো তখন ওপেনার। তামিম ভাইকে দেখে আমার মনে হতো, কীভাবে একটা মানুষ এ রকম বড় বড় ইনিংস খেলেন বা এ রকম বড় বড় বোলারের বিপক্ষে এমন ডমিনেট করে ইনিংস খেলেন। আমার কাছে কেন জানি মনে হতো, উনি খুব রাগী বা অ্যাগ্রেসিভ কথাবার্তা বলেন বা একা একা থাকতে পছন্দ করেন। আমি না ব্যাটিংটা মিলিয়ে ফেলতাম ওনার সঙ্গে। কারণ, ব্যাটিংয়ে ওনাকে সব সময় অ্যাগ্রেসিভ দেখতাম। আস্তে আস্তে যখন মেশা শুরু হলো, কথা বলা শুরু হলো, দেখলাম খুবই ফ্রেন্ডলি, অনেক হেল্পফুল, জুনিয়রদের খুব হেল্প করেন।
প্রথম কার অটোগ্রাফ নিয়েছেন?
নাজমুল: কারও অটোগ্রাফই নিইনি। এমনকি সাকিব ভাইয়েরও না। মুশফিক ভাই যখন জাতীয় লিগে রাজশাহী টিমে খেলতেন, তখনো আমার অটোগ্রাফ নেওয়ার কথা মনে হয়নি। আমার কেন যেন মনে হতো, আমি একদিন বড় প্লেয়ার হব, আমিই একদিন অটোগ্রাফ দেব। আমার মধ্যে সব সময় এই জিনিসটা কাজ করত। আমি কারও অটোগ্রাফ নেব বা নিজে থেকে ছবি তুলতে যাব, এটা বলতে গেলে করিইনি।
আপনি নিজে প্রথম কবে অটোগ্রাফ দিয়েছেন, মনে আছে?
নাজমুল: সম্ভবত আন্ডার নাইনটিনে খেলার পর। স্কুলের কোনো একটা প্রোগ্রামে।
আপনার হিরো সাকিবের কোন জিনিসটা আপনার সবচেয়ে ভালো লাগে?
নাজমুল: উনি খুব হেল্পফুল এবং নিজে কী করতে চান, সে ব্যাপারে খুবই ক্লিয়ার। ওনার যে জিনিসটা আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে, উনি সামনাসামনি কথা বলতে পছন্দ করেন, স্ট্রেট ফরোয়ার্ড।
খেলার বাইরে আপনার সময় কাটানোর প্রিয় মাধ্যম কী?
নাজমুল: আমি মুভি দেখতে খুব পছন্দ করি। একটা মুভি আমাকে ১০ বার দেখতে বললেও কোনো অসুবিধা নেই।
কী ধরনের মুভি দেখেন?
নাজমুল: নির্দিষ্ট নেই। ইংলিশ মুভি কম দেখি। বেশির ভাগ দেখি যেগুলোতে সাসপেন্স থাকে, থ্রিলার টাইপের।
প্রিয় নায়ক-নায়িকা?
নাজমুল: প্রিয় নায়ক অনেক আছে। নায়িকা নেই। নায়িকা আমার বউ। এটাও লিখে দেবেন নাকি (হাসি)?
সবকিছুই লেখা হবে। এটাও লেখা হবে যে আপনি এটা বলছেন বউ ইন্টারভিউটা পড়বে, এই ভয়ে আপনি প্রিয় নায়িকার নাম বলছেন না...
নাজমুল: (হাসি) বউ আমার পাশেই বসে আছে।
ওহ্, এ কারণেই ভয়। তা, নায়ক কে কে প্রিয়?
নাজমুল: শাহরুখ খানকে খুব ভালো লাগে।
নায়িকাও বলে ফেলেন, ভয় কী?
নাজমুল: নায়িকা...নায়িকা, আমার আলিয়া ভাটকে ভালো লাগে।
ক্রিকেটার না হলে কী হতেন?
নাজমুল: এমন নয় যে ছোটবেলা থেকে ক্রিকেটারই হতে চেয়েছি। হঠাৎ হয়ে গেছি। ক্রিকেটার না হলে...ছোটবেলায় আমি পড়াশোনায় ভালো ছিলাম। হয়তো পড়াশোনা করে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার কিছু একটা হতাম। বিজনেসম্যান হতাম না, এতটুকু শিওর।
কেন, বিজনেসম্যান হলে সমস্যা কী?
নাজমুল: সমস্যা আসলে বিজনেসটা আমার মাথায় ঢোকে না। তা ছাড়া আমার ধারণা, বিজনেস করলে নিজেকে প্রচুর সময় দিতে হয়।
বেড়ানোর জন্য প্রিয় দেশ বা প্রিয় জায়গা?
নাজমুল: মালদ্বীপ।
ও হ্যাঁ, মনে পড়েছে। আপনার মালদ্বীপে যাওয়া নিয়ে একটা ট্যুর কোম্পানি রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছিল...তা কয়বার গেছেন মালদ্বীপে?
নাজমুল: একবারই গেছি। পরে সময় হয়নি, সুযোগ পাইনি। সুযোগ পেলে আবার যেতে চাই। আবার যেতে চাই। আবার যেতে চাই।
আপনার সংসারজীবন নিয়ে কথা বলি। বিয়ে করছেন কত সালে?
নাজমুল: এই যে ভালো সময় প্রশ্ন করছেন। এখনই বউ চলে গেছে। বিয়ের তারিখটা তো মনে নেই। চার বছর মনে হয় হয়েছে, কোভিডের সময় করলাম। তাহলে সাড়ে চার বছরের মতো হয়।
আপনার বয়স তখন কত?
নাজমুল: আমার তখন ২৩ প্লাস।
বিয়েটা একটু তাড়াতাড়ি হয়ে গেল না?
নাজমুল: তাড়াতাড়ি বলতে কি...ওই সময় আসলে বিয়ের প্ল্যান ছিল না। কোভিড চলে এল, হঠাৎ করে সারাক্ষণ বাসায়। আমার রিলেশনশিপ ছিল আমার বউয়ের সঙ্গে। আমার আব্বার সঙ্গে আমি খুবই ফ্রি, আব্বা বললেন, এটাই বিয়ে করার পারফেক্ট সময়। আমি বললাম, কেন? উনি বললেন, বউকে সময় দিতে পারবে। খেলাটেলা শুরু হয়ে গেলে তো সময় দিতে পারবে না। এরপর দুই ফ্যামিলি কথা-টথা বলে একমত হলো যে এটাই ভালো সময়। তো, ওইভাবে হয়ে গেছে আরকি! কোভিডের কারণে তাড়াতাড়ি বিয়েটা হয়ে গেছে, নয়তো দুই-তিন-চার বছর পর হতো।
আপনার বউ কি ক্রিকেট ফলো করেন?
নাজমুল: কম, খুব কম। আপনি খেয়াল করে দেখবেন, আমি ভালো খেললেও আমার বউয়ের কোনো ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখবেন না, খারাপ খেললেও না। খারাপ খেলার পর ভালো খেললে ‘আজকে দেখিয়ে দিল’, এ রকম চিন্তা দেখবেন না।
আপনার বউয়ের কি ফেসবুক আছে?
নাজমুল: সে খুব ব্যস্ত। নিজেকে নিয়ে, ফ্যামিলিকে নিয়ে, আমাকে নিয়ে। সব সময় চেষ্টা করে, আমি কীভাবে আরও মেন্টালি ভালো থাকতে পারি। যে জিনিসটা আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সে বিশ্বাস করে, আমি ভালো খেললে এটা মানুষ অটোমেটিক্যালি দেখবে। আমার স্ট্যাটাস দিয়ে বোঝানোর দরকার নেই। আমি এই কথা বললাম বলে অনেক বউ আবার রাগ করবে (হাসি)।
করুক রাগ। বাংলাদেশের ক্রিকেটে এটাই আমার সবচেয়ে বিরক্ত লাগে। ক্রিকেটারদের বউয়েরা এসব স্ট্যাটাস দেওয়ার কারণেই পরে ক্রিকেটারদের পরিবার নিয়ে টানাটানি শুরু হয়। আচ্ছা, আপনি তো কম বয়সে বাবাও হয়ে গেছেন। ছেলের বয়স কত?
নাজমুল: ওর বয়স এখন ১৮ মাস।
ছেলের নাম কী?
নাজমুল: ইজহান মালিক আরাফ।
আপনার একটা স্বপ্নের দিন কেমন, তাতে খেলা না থাকলে ভালো...
নাজমুল: কোনো একটা পাহাড়ে চলে যেতে চাই। যেখানে আমার বন্ধুরা থাকতে পারে। খুব বেশি না, হাতে গোনা কয়েকজন। বৃষ্টি হলে খুব ভালো হয়, বসে আড্ডা মারব।
পাহাড় কেন, সাগরের চেয়ে পাহাড় ভালো লাগে?
নাজমুল: দুটোই পছন্দ। কিন্তু পাহাড়ে বসে আছি, বৃষ্টি হচ্ছে, হাতে একটা কফির মগ, অন্য রকম একটা ভাইব না? এ রকম একটা দিন কাটালে অবশ্যই ভালো লাগবে।
বাংলাদেশ দলে আপনার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু কে?
নাজমুল: মোসাদ্দেক হোসেন।
সব কথা খুলে বলা যায়, এমন বন্ধুও কি মোসাদ্দেক?
নাজমুল: হৃদয় আছে। বন্ধু বলব না, ও আবার আমার ছোট। কিন্তু বন্ধুর মতো। তবে আমরা খুবই ফ্রি। হৃদয়ের সঙ্গে আমার খুব ভালো আন্ডারস্ট্যান্ডিং। সবার সঙ্গেই ভালো সম্পর্ক, কিন্তু হৃদয়ের সঙ্গে সবচেয়ে ভালো।
আপনার প্রিয় খাবার?
নাজমুল: ভাত, ডাল, ভর্তা, ভাজি।
একদম বাঙালি খাবার...
নাজমুল: হুম।
এমন কোনো দেশ কি আছে, যেখানে গিয়ে মনে হয়েছে, এখানে থেকে গেলে ভালো হতো...
নাজমুল: নাহ্, কোনো জায়গায় আমার এটা মনে হয়নি। কোনো দেশেই মনে হয় না। কারণ, আমি বাংলাদেশকে ভালোবাসি, বাংলাদেশে থাকতে আমার খুবই ভালো লাগে। আমি জানি না ভবিষ্যতে কী আছে। আমার যে রকম নিউজিল্যান্ড খুব পছন্দের, কিন্তু ৮-১০ দিন পর আর ভালো লাগে না। ইউএসএতে বিশ্বকাপ হলো, ওখানে দেখলাম অনেক বিজি লাইফ। বাংলাদেশই আমার সবচেয়ে ভালো লাগে, বাংলাদেশে চ্যালেঞ্জ আছে।
কী রকম চ্যালঞ্জ?
নাজমুল: সবকিছুতেই চ্যালেঞ্জ। বাসা থেকে বের হবেন, ট্রাফিকের চ্যালেঞ্জ। আমি একটা উদাহরণ দিলাম আরকি। আপনি শখ করে একটা গাড়ি কিনতে চান, আপনি দেশের বাইরে বিএমডব্লিউ অনেক দেখতে পাবেন, সবার কাছে বিএমডব্লিউ আছে। বাংলাদেশে কয়টা বিএমডব্লিউ আছে? কয়জন মানুষ চালায়! এখানে যদি আপনি একটা বিএমডব্লিউ কিনতে চান, অনেক কষ্ট করে কিনতে হবে। এটার মধ্যে কিন্তু আনন্দ আছে। আপনি দেশের বাইরে চালাবেন, ওই আনন্দ কাজ করবে না। এ জন্য কখনো কখনো মনে হয়, জীবনে কিছু চ্যালেঞ্জের দরকার নেই।