রাজনীতিতে গিয়ে জীবনের সবচেয়ে বাজে কাজটা করেছিলেন জয়াসুরিয়া

প্রথমে আপৎকালীন কোচ হয়ে এখন পুরোদমেই শ্রীলঙ্কার প্রধান কোচ তিনি। ‘মাতারা হারিকেন’ সনাৎ জয়াসুরিয়ার অধীনে শ্রীলঙ্কা দল সাফল্যও পেতে শুরু করেছে। কাল কলম্বোর টিম হোটেলে বসে তারেক মাহমুদকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাবেক শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক কথা বলেছেন ক্রিকেটের বিবর্তন, নিজের কোচিং দর্শন এবং রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার ভুল করা নিয়েও—

প্রথম আলো:

কোচ হিসেবে নতুন ভূমিকা কেমন লাগছে?

সনাৎ জয়াসুরিয়া: খারাপ নয়, তবে এটা সব সময়ই বড় চ্যালেঞ্জ। স্থানীয় কোচদের সব সময়ই চ্যালেঞ্জের মধ্যে থাকতে হয়। তবে আমি কাজটা উপভোগ করছি।

প্রথম আলো:

আপনি তো অনেক ভূমিকায়ই ছিলেন, কোনটা বেশি চ্যালেঞ্জিং? কোচের ভূমিকা, নাকি খেলোয়াড়ের, নাকি নির্বাচকের, নাকি সংসদ সদস্যের?

জয়াসুরিয়া: সংসদ সদস্য হয়ে অবশ্যই আমি আমার জীবনের সবচেয়ে বাজে কাজটা করেছি। আমি জীবনে আর এটা করব না। ক্রিকেটের কথা যদি বলেন, খেলোয়াড় এবং কোচ দুই ভূমিকাতেই অনেক চ্যালেঞ্জ থাকে। তবে আমি দীর্ঘ সময় ধরে ক্রিকেট খেললেও আগে কখনো কোচ হইনি। কাজেই এটাই বেশি চ্যালেঞ্জিং।

রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্তকে জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল মনে করেন সনাৎ জয়াসুরিয়া
ছবি: ইনস্টাগ্রাম
প্রথম আলো:

শ্রীলঙ্কা দল এখন একটা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দলে অনেক তরুণ ক্রিকেটার। আপনি কি তাঁদের মধ্য থেকে কোনো জয়াসুরিয়া খুঁজে পেয়েছেন?

জয়াসুরিয়া: ঠিক একই রকম কাউকে পাওয়া কঠিন। তবে তারা সঠিক পথে আছে। তারা অনেক কিছু নিয়ে কাজ করছে। আমার কোচিং স্টাফের সবাই স্থানীয়, শ্রীলঙ্কান। ভালো করার জন্য তারা সবাই অনেক পরিশ্রম করছে এবং নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে যেন খেলোয়াড়েরা ভালো করে। স্থানীয় কোচ হওয়ায় তাদেরও অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। আমাকেও অনেক চ্যালেঞ্জ নিতে হয়। তবে আমরা এটাকে জীবনের অংশ হিসেবে নিয়েছি। প্রত্যাশা আমাদের সবারই অনেক বেশি। খেলাটা ক্রিকেট এবং আমাদের এটাকে উপভোগ করতে হবে।

প্রথম আলো:

আপনি যখন খেলেছিলেন, তখনকার তুলনায় বর্তমান ক্রিকেটে কতটা পরিবর্তন দেখেন?

জয়াসুরিয়া: ক্রিকেট এখন পুরোপুরিই বদলে গেছে। ওই সময় আমরা খুবই সীমিত কিছু শট খেলতাম। আর এখন তো আপনি উইকেটের ৩৬০ ডিগ্রিতেই শট খেলতে পারবেন। এখনো বেশির ভাগ সময় খেলোয়াড়েরা তাদের স্বভাবজাত খেলাটাই খেলে, যেটা আমরাও খেলতাম। তবে প্রযুক্তি এবং আরও নানা কারণে খেলাটা অনেক বদলে গেছে। কোনো কোনো দিক দিয়ে এটা ঠিক আছে, আবার কোনো কোনো দিক দিয়ে মনে হতে পারে এটা স্বাভাবিক নয়। খেলোয়াড়েরা উপভোগ করছে, এটাই ভালো দিক।

নিজের সময়ে সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন ছিলেন সনাৎ জয়সুরিয়া
ছবি: এএফপি
প্রথম আলো:

আপনাদের সময় যে ক্ল্যাসিক্যাল ক্রিকেটটা আপনারা খেলতেন, আপনি কি সেটা মিস করেন?

জয়াসুরিয়া: বিষয়টা হলো আমরা কখনো রিভার্স সুইপ, সুইচ শট—এসব খেলিনি। এগুলো সব নতুন নতুন শট। এখনকার দিনে খেলোয়াড়েরা যেকোনো শট খেলতে পারে। এটা ভালো, তবে কোচ হিসেবে আমাদের তাদেরকে সাহস দিতে হবে, যেন তারা তাদের সহজাত খেলাটা খেলতে পারে।

প্রথম আলো:

আপনি আপনার সুবর্ণ সময়ে যেভাবে রান করতেন, তখনকার ব্যাটসম্যানরা ওই স্ট্রাইক রেটে খেলার কথা চিন্তাও করতে পারত না। ‘মাতারা হারিকেন’ কি তাহলে সময়ের চেয়ে এগিয়ে ছিল?

জয়াসুরিয়া: তা নয়, আমি আসলে আমার সহজাত খেলাটাই খেলতাম সব সময়। টেস্ট বলুন, ওয়ানডে বলুন, সব সময় চেষ্টা করেছি নিজের খেলাটা খেলতে। একজন খেলোয়াড় যদি প্রকৃতিদত্তভাবে প্রতিভাবান হয়, তাহলে তাকে তার মতো করে খেলতে দেওয়া উচিত। তবে একই সঙ্গে খেলোয়াড়টিকে স্মার্টও হতে হবে, যেন প্রয়োজনে সে পরিস্থিতি বুঝে খেলতে পারে।

প্রথম আলো:

আপনি নিজে একজন কিংবদন্তি, খেলেছেনও অনেক কিংবদন্তির সঙ্গে। এই মুহূর্তে কাদেরকে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ মনে করেন?

জয়াসুরিয়া: পাতুম নিশাঙ্কা, কামিন্দু মেন্ডিস, জানিথ লিয়ানাগে, মিলান রত্নায়েকে—এরা সবাই প্রতিভাবান এবং সব সময় শতভাগ দিয়ে খেলে। কিছু খেলোয়াড়ের কমিটমেন্ট অসাধারণ। চারিত আসালাঙ্কাকে যেভাবে খেলতে দেখি…সে–ই ভবিষ্যৎ। কুশল মেন্ডিসের কথাও বলব। আমাদের অনেক প্রতিভাবান ক্রিকেটার আছে। গত কয়েকটি ওয়ানডেতে চারিত আসালাঙ্কা যে রকম ইনিংস খেলেছে, এটা আমি কখনো দেখিনি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে আমরা সংগ্রাম করেছি, সে সেঞ্চুরি করেছে। গতকালও (পরশু) দ্রুত ৪ উইকেট হারিয়ে আমরা সংগ্রাম করছিলাম, সে আবারও সেঞ্চুরি করল। চাপের মধ্যে সে সত্যিই অসাধারণ খেলছে। অন্যদের শেখার জন্য এটা ভালো উদাহরণ।

গত বছরের অক্টোবরে শ্রীলঙ্কা দলের স্থায়ী কোচ হন সনাৎ জয়াসুরিয়া
ছবি: প্রথম আলো
প্রথম আলো:

গত চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে শ্রীলঙ্কা দল খেলতে পারেনি। এখন আবার ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়ে ৪ নম্বরে। দলের ওয়ানডে পারফরম্যান্স ফিরিয়ে আনছেন কীভাবে?

জয়াসুরিয়া: আমাদের দলে অনেক প্রতিভা আছে। কোচ হিসেবে আমার এবং আমার কোচিং স্টাফের দায়িত্ব হলো তাদের আত্মবিশ্বাসী করে তোলা, তাদের ভালোভাবে অনুশীলন করানো। সে জন্য যা যা দরকার, সবই তাদের দেওয়া হচ্ছে। এখানে আত্মবিশ্বাসটাই আসল। সঙ্গে কোচিং স্টাফের ওপর তাদের আস্থা রাখাটাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আমরা তাদের সঙ্গে খুবই ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে পারছি। কারণ, আমাদের সংস্কৃতি এক, ভাষা এক, আমরা জানি তাদের সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হবে, কীভাবে তাদের বোঝাতে হবে। তাদের সন্তুষ্ট রাখতে পারাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।

প্রথম আলো:

এখানে এসে শুনেছি অনুশীলনে আপনি মৌলিক বিষয়গুলোর ওপরই বেশি জোর দিয়ে থাকেন। একটু কি ব্যাখ্যা করবেন বিষয়টা?

জয়াসুরিয়া: কোচ হিসেবে আমরা ওদের কিছু ফাইন টিউনিংয়ের কাজ করি, ওদের সঙ্গে আলোচনা–বিশ্লেষণ করি, ওদের সব ধরনের ডেটা–পরিসংখ্যান দিই। এই ক্রিকেটাররা জুনিয়র পর্যায় থেকে শুরু করে অনেক ক্রিকেট খেলে এই পর্যায়ে এসেছে। আপনি নিশ্চয়ই জানেন আমাদের জুনিয়র ক্রিকেট সিস্টেম কতটা ভালো। মনে আছে, কার্লটন বার্নান্ডোজসহ আমাদের এখান থেকে অনেকে গিয়ে বাংলাদেশেও জুনিয়র ক্রিকেট নিয়ে কাজ করেছে। এখন তো আপনারাও ভালো করছেন। আমাদের সিস্টেমটা খুব ভালো। ক্রিকেটাররা উঠে আসছে, আমরা তাদের ফাইন টিউনিংটাই করি। প্রত্যেক খেলোয়াড়কে ভিন্ন ভিন্নভাবে সামলাতে হয়। সৌভাগ্যবশত আমি কান্ডাম্বি, পিয়াল বিজয়তুঙ্গা, উপুল চন্দনা, দর্শনা কাপুগের মতো সাপোর্ট স্টাফদের পেয়েছি। তারা সবাই স্থানীয়, তারা শ্রীলঙ্কার হয়ে খেলেছে। আমাদের সবার ওপর সব সময় ভালো খেলার চাপ থাকে। আপনি যখন শ্রীলঙ্কান হবেন, আপনার কাছে প্রত্যাশা থাকবে আকাশসম। অনেকটা বাংলাদেশের মতো…ঠিক বললাম কি না (হাসি)? মানুষ এখন শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটকে ভালোবাসতে শুরু করেছে। কয়েক বছর আগেও তারা ক্রিকেট থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। কিন্তু এখন আবার খেলা দেখতে আসছে, খেলোয়াড়দের ভালোবাসছে। খেলোয়াড়েরাও সাধারণ মানুষের খুব কাছাকাছি থাকছে, এটা একটা আশীর্বাদ। আশা করি মানুষ শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটকে আরও ভালোভাবে অনুসরণ করবে এবং আমি চাইব শ্রীলঙ্কার মানুষ খেলোয়াড়দের পক্ষে থাকবে।

জয়াসুরিয়ার কোচিংয়ে শ্রীলঙ্কা অনেক উন্নতি করেছে
ছবি: আইসিসি
প্রথম আলো:

বাংলাদেশের বিপক্ষে আপনি অনেক ম্যাচ খেলেছেন, বাংলাদেশের ক্লাব ক্রিকেটেও খেলেছেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মানসিকতা সম্পর্কে আপনার কিছুটা ধারণা থাকার কথা। বাংলাদেশ ৫ রানে ৭ উইকেট হারাতে পারে, এটা কি ভাবতে পেরেছিলেন আপনি?

জয়াসুরিয়া: আপনি তো প্রতিদিন এ রকম পরিস্থিতিতে পড়বেন না। এটা একদিন হতেই পারে। তাই বলে মানুষ যেন খেলোয়াড়দের অকারণে চাপে ফেলে না দেয়। এ রকম পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আমরাও গিয়েছি, আমি গিয়েছি। সম্প্রতি ক্যান্ডিতে ভারতের বিপক্ষে টি–টোয়েন্টিতে আমাদের অল্প কিছু রানই লাগত জিততে, কিন্তু ম্যাচটা ভারত জিতে যায় (সুপার ওভারে)। সূর্যকুমার বোলিংয়ে এসে উইকেট নিয়ে নিল, বিশ্বাস হয়! মানুষ দুশ্চিন্তায় পড়ে গেল। কিন্তু খেলোয়াড়েরাই পারে পরিস্থিতি ঘুরিয়ে দিতে, খেলাটাই এ রকম। হ্যাঁ, এসব নিয়ে আলোচনা হতে হবে। কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল। আপনি যদি তাদের আত্মবিশ্বাস দিতে পারেন যে তোমরা আবার ফিরে আসবে এবং ভালো করবে; সেটাই মূল বিষয়। অবশ্যই গঠনমূলক সমালোচনা থাকবে। আমি যদি ভালো না করি, আমাদের দল যদি ভালো করে, আমাদের তা মেনে নিতে হবে। তবে এ রকম বিপর্যয় প্রতিদিন হবে না।

প্রথম আলো:

বাংলাদেশের ক্রিকেট একটা বদলের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সাকিব, তামিম, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহর মতো অভিজ্ঞরা নেই। পরিবর্তনের এই সময়টায় বাংলাদেশের কীভাবে এগোনো উচিত?

জয়াসুরিয়া: আমার তো মনে হয় জুনিয়র ক্রিকেটারদের নিয়ে এরই মধ্যে দলটা গুছিয়ে উঠেছে। আশা করি, নতুন খেলোয়াড়দের তুলে আনতে জুনিয়র ক্রিকেট সিস্টেমটাকে তারা ভালো করবে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনূর্ধ্ব–১৯, অনূর্ধ্ব–১৭—এসবই মূল জায়গা কাজ করার। জুনিয়র পর্যায় থেকে ভালো ক্রিকেটার না পেলে সমস্যায় পড়তে হবে। শ্রীলঙ্কায় ক্রিকেটের উন্নয়নের জন্য অনেক অর্থ ব্যয় করা হয়। বাংলাদেশকেও তাই করতে হবে। সব দেশেই এ রকম পরিবর্তনের সময় আসে। ওই সময়টায় নতুনদের সুযোগ দিতে হবে, আত্মবিশ্বাস জোগাতে হবে।

প্রথম আলো:

কোচ হিসেবে আপনি কি অনেক কঠোর, নাকি…

জয়াসুরিয়া: (হেসে উঠে প্রশ্ন থামিয়ে দিয়ে) মানুষ কী বলে? না, সে রকম কিছু নয়। আমি চাই খেলোয়াড়েরা সুশৃঙ্খল থাকুক, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ক্রিকেট খেললে সুশৃঙ্খল হতে হবে। দলে কোনো কঠিন নিয়মকানুন নেই। খেলোয়াড়দের খেলাটা উপভোগ করতে হবে। আমাদের তাদের দেখাশোনা করতে হবে, তাদের ভালোবাসতে হবে। তবে কিছু বিষয়ে কঠোর হতেই হয়। সেটা তারা সহজভাবেই নিয়েছে এবং উপভোগ করছে। এসব নিয়ে তারা চিন্তিত নয়।

প্রথম আলো:

আপনার কোচিংয়ের নিজস্ব ধরনটা কী?

জয়াসুরিয়া: আমি সব সময় চাই খেলোয়াড়েরা তাদের স্বভাবজাত ক্রিকেট খেলুক, যেটা আমি খেলেছি। কিছু খেলোয়াড় আছে, যারা খুব বেশি কথা বলতে চায় না, খুব বেশি তথ্য জানতে চায় না। আমরাও বিষয়টা যতটা সম্ভব সহজ–সরল রাখি, যেন তাদের মাথাটা পরিষ্কার থাকে।

প্রথম আলো:

সনাৎ জয়াসুরিয়া তাহলে তাঁর কোচিং জীবন উপভোগই করছেন…

জয়াসুরিয়া: অবশ্যই, কারণ সাপোর্ট স্টাফ এবং ক্রিকেটাররা আমাকে শতভাগ সমর্থন দিচ্ছে। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের কথাও বলতে হয়। আমি যা চাচ্ছি, শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট আমাকে তা–ই দিচ্ছে। তাদের আশীর্বাদ এবং সমর্থন একজন কোচ হিসেবে আমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ভুল বুঝতে পারার পর শ্রীলঙ্কার সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠেন সনাৎ জয়াসুরিয়া
ছবি: এক্স
প্রথম আলো:

শেষ প্রশ্ন। বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক নাঈমুর রহমান রাজনীতিতে যোগ দিয়ে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। দেশে ক্ষমতার পালাবদলের পর কিছু অভিযোগে কাল (পরশু) তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজনীতিতে জড়িয়ে সাকিব আল হাসানও এখন দেশে যেতে পারছেন না। মাশরাফি বিন মুর্তজা আত্মগোপনে আছেন। এসব কারণেই কি আপনি রাজনীতিকে অপছন্দ করতে শুরু করেন?

জয়াসুরিয়া: কারণটা তা নয়। এটা (রাজনীতি) আসলে ক্রিকেটারদের কাজ নয়। অন্যরা কী বলবেন জানি না। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, রাজনীতিতে যোগ দিয়ে আমি ভুল করেছিলাম। খেলা সবাই ভালোবাসে। পুরো জাতি আপনাকে ভালোবাসবে। আপনি যদি রাজনীতি করেন, সেটা ভাগ হয়ে যাবে, ভক্তরা ভাগ হয়ে যাবে। কাজেই ক্রিকেটারদের ক্রিকেটই উপভোগ করা উচিত, সেটা যেভাবেই হোক। আমি রাজনীতিতে জড়িয়ে আমার জীবনের সবচেয়ে বাজে সিদ্ধান্তটা নিয়েছিলাম। ১০ বছরের বেশি হলো তা থেকে সরে এসেছি। এখন আমি এমনকি রাজনীতি নিয়ে কথা বলতেও পছন্দ করি না।