বাড়ি থেকে মেয়েরা ওজন কমিয়ে এসেছে

প্রায় সাত মাস পর বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ভবনে শুরু হয়েছে নারী ফুটবলারদের ক্যাম্প। এএফসি অনূর্ধ্ব-১৭ ও এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্ব সামনে রেখে কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের অধীনে অনুশীলন করছে বয়সভিত্তিক দুটি দল। বাছাইপর্বে বাংলাদেশের মেয়েদের সম্ভাবনা নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন গোলাম রব্বানী
নারী ফুটবল দলের কোচ গোলাম রব্বানী
ছবি: প্রথম আলো

প্রশ্ন :

প্রায় সাত মাস পরে অনুশীলন শুরু হয়েছে। কীভাবে সাজানো হয়েছে অনুশীলনের সূচি?

গোলাম রব্বানী: প্রতিদিন দুই সেশন অনুশীলন রাখা হয়েছে। ভোরের সেশনে ফিটনেসের সঙ্গে টেকনিক্যাল বিষয়গুলো দেখানো হয়। দুপুরে বাফুফে ভবনে হয় ফিটনেসের অন্যান্য কাজ।

প্রশ্ন :

লম্বা বিরতির পর মেয়েদের কোন ঘাটতিগুলো বেশি চোখে পড়ছে?

গোলাম রব্বানী: স্বাভাবিকভাবেই ওদের ফিটনেস অনেক নিচে নেমে গেছে। বলের সঙ্গেও তো তেমন সংযোগ ছিল না কারও। তবে ওদের খাওয়াদাওয়ার বিষয়টি বেশি চোখে পড়েছে। সাধারণত অনুশীলনের বাইরে থাকলে খেলোয়াড়দের ওজন বেড়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু বাড়ি থেকে মেয়েরা উল্টো ওজন কমিয়ে এসেছে। তার মানে বাড়িতে ভালো খাওয়াদাওয়া হয়নি।

সাত মাস পর শুরু হয়েছে নারী ফুটবলারদের ক্যাম্প।
ছবি: প্রথম আলো

প্রশ্ন :

এ ঘাটতি পূরণ হতে কত দিন সময় লাগতে পারে?

গোলাম রব্বানী: ফিটনেস আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে ছয় সপ্তাহের মতো লাগতে পারে। মেয়েরা অনুশীলনে খুব চেষ্টা করছে। ওরা নিজেরাও বুঝতে পারছে নিজেদের অবস্থা। এই কয়েক দিনের মধ্যেই কিছুটা উন্নতি চোখে পড়ছে।

প্রশ্ন :

আপনার অধীনে অনূর্ধ্ব-১৭ ও অনূর্ধ্ব-২০ দুটি দল আছে। আগামী বছর মার্চ (অনূর্ধ্ব-২০) ও এপ্রিলে (অনূর্ধ্ব-১৭) খেলা শুরু হওয়ার আগে কোন দলটি তৈরি করা বেশি চ্যালেঞ্জ?

গোলাম রব্বানী: অনূর্ধ্ব-১৭ দল নিয়েই বেশি কাজ করতে হবে। ওদের অভিজ্ঞতা খুবই কম। বেশির ভাগই নতুন খেলোয়াড়। আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা নেই। এই দলটাকে তৈরি করতে হবে। অনূর্ধ্ব-২০ দলে জাতীয় দলে খেলা অনেক খেলোয়াড় আছে।

মেয়েদের ফিটনেস নিয়েই কাজ করবেন কোচ গোলাম রব্বানী আপাতত।
ছবি: প্রথম আলো

প্রশ্ন :

২০১৮ সালে সর্বশেষ অনূর্ধ্ব-১৯ এএফসি চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্বে (বর্তমানে যেটি অনূর্ধ্ব-২০) বাংলাদেশ ভালো করতে পারেনি। এবার চূড়ান্ত পর্বে খেলার সম্ভাবনা কেমন?

গোলাম রব্বানী: আগেরবারের চেয়ে এবারের দলটা ভালো। আমরা আশাবাদী। তবে দেখতে হবে আমাদের গ্রুপে কোন দলগুলো পড়ে। জাপান-কোরিয়ার (উত্তর ও দক্ষিণ) মতো দল পড়ে গেলে তো আবার বিপদ!

প্রশ্ন :

অনেক দিন ম্যাচ না খেলায় মেয়েদের প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ম্যাচ খেলার মানসিকতা নষ্ট হয়ে যাওয়ার কথা। সেটি ফিরিয়ে আনতে কোনো পরিকল্পনা দিয়েছেন ফেডারেশনকে?

গোলাম রব্বানী: বিষয়টি ফেডারেশনকে জানানো হয়েছে। বিদেশি দলের বিপক্ষে আমাদের বেশ কয়েকটি ম্যাচ খেলতে হবে।

প্রশ্ন :

লিগের জন্য বসুন্ধরা কিংস তাদের খেলোয়াড়দের ক্যাম্পে ডেকে নিয়েছে। কিন্তু অন্য দলগুলো তো লিগের ব্যাপারে উদাসীন.

গোলাম রব্বানী: বসুন্ধরা তাদের খেলোয়াড়দের ডেকে নিয়েছে, এটাকে ভালো উদ্যোগ বলব। যেহেতু লিগের খেলা আছে সামনে, তাদের খেলোয়াড়দের ছাড়তেই হবে। তারা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য দল গড়েছে।

প্রশ্ন :

প্রায় সাত বছর পর লিগ শুরু হয়েছে (বর্তমানে করোনার কারণে স্থগিত হয়ে যাওয়া মেয়েদের লিগ অক্টোবরে শুরুর কথা বলেছিল বাফুফে)। নতুন কোনো খেলোয়াড় কি পেয়েছেন?

গোলাম রব্বানী: লিগ থেকে আমরা কিছু খেলোয়াড় পেয়েছি। বেগম আনোয়ারা স্পোর্টিং ক্লাবের ডিফেন্ডার ফারজানা আক্তার ও কাচারিপাড়ায় একাদশ থেকে আনিকা তানজুমকে পেয়েছি। আরও কিছু খেলোয়াড় পাব বলে আশা করছি।

প্রশ্ন :

প্রায় ১৯ মাস ধরে জাতীয় নারী ফুটবল দল কোনো ম্যাচ খেলে না। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?

গোলাম রব্বানী: ফেডারেশন পরিকল্পনা করছে যত তাড়াতাড়ি জাতীয় দলটাকে মাঠে ফেরানো যায়।