বেকারের দিনগুলো কাটবে জেলে

টেনিস কিংবদন্তি বরিস বেকারছবি: রয়টার্স

জেলের ঘানি টানতেই হবে তিনটি উইম্বলডন ও ছয়টি গ্র্যান্ড স্লাম বিজয়ী বরিস বেকারকে। দেউলিয়া আইনে দোষী সাব্যস্ত করে লন্ডনের একটি আদালত আজ জার্মান কিংবদন্তিকে আড়াই বছর কারাবাসের রায় দিয়েছেন।

ব্রিটেনের দেউলিয়া আইনে গত মাসে চারটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন ৫৪ বছর বয়সী বেকার। দেনার দায় থেকে মুক্তি পেতে লাখ লাখ পাউন্ডের সম্পত্তি লুকিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। বিবিসি জানিয়েছে, বেকার ২৫ লাখ পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৭ কোটি টাকা) মূল্যমানের সম্পত্তি লুকিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আদালত।

লন্ডনের সাউথওয়ার্ক ক্রাউন আদালতের বিচারক ডেবোরা টেলর রায় ঘোষণার সময় বেকারকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘নিজের অপরাধের জন্য আপনার মধ্যে কোনোরকম অনুশোচনা আমরা দেখিনি। কোনো প্রকার নম্রতাও দেখাননি আপনি।’

বিচারক জানান, আড়াই বছর কারাবাসের রায়ের মধ্যে অর্ধেক সময় বেকারকে জেলে থাকতে হবে। বাকি সময় তিনি জামিনে থাকবেন। এই রায় ঘোষণার সময় বেকারের জীবনসঙ্গী লিলিয়ান এবং সন্তান নোয়া আদালতে ছিলেন এবং তাঁদের মধ্যে কোনো বিকার দেখা যায়নি বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।

লন্ডনের সাউথওয়ার্ক ক্রাউন আদালতে ঢোকার পথে জীবনসঙ্গী লিলিয়ানের সঙ্গে বরিস বেকার
ছবি: রয়টার্স

২০১৭ সালে বরিস বেকারকে দেউলিয়া ঘোষণা করা হয়। তখন প্রায় ৫ কোটি পাউন্ড দেনার দায় ছিল তাঁর ঘাড়ে। এ সময়ে মধ্যে ২০টি মামলা থেকে রেহাই পেলেও বাকি ৪টি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন বেকার। টেনিসের সাবেক এই নাম্বার ওয়ান স্পেনের মায়োর্কাতে বিপুল সম্পত্তি কিনেছিলেন। সে সম্পদের বিপরীতে দেনা শোধ করতে না পারায় ২০১৭ সালের ২১ জুন তাঁকে দেউলিয়া ঘোষণা করা হয়েছিল।

জার্মানিতেও নিজের সম্পত্তি লুকিয়েছেন বেকার। একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে ৮ লাখ ২৫ হাজার পাউন্ড ইউরো দেনাও গোপন করেছেন মাত্র ১৭ বছর বয়সে প্রথম গ্র্যান্ড স্লামজয়ী এই কিংবদন্তি। এ ছাড়া দুটি উইম্বলডন ট্রফি এবং কিছু পদকের কথাও গোপন করেন বেকার। আদালতকে তখন তিনি জানিয়েছিলেন, ট্রফি ও পদকগুলো কোথায় আছে, সেটি তিনি জানেন না।

২০১২ সাল থেকে ব্রিটেনে বসবাস করা বেকার আদালতের জুরিদের জানান, প্রথম স্ত্রী বারবারা বেকারের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের কারণে ক্যারিয়ারের তাঁর আয় করা প্রায় ৫ কোটি ডলার ধরে রাখতে পারেননি।

এ মাসের শুরুতে আদালতকে বেকার বলেছিলেন, তাঁর সম্পত্তির দেখভালের দায়িত্ব তত্ত্বাবধায়কদের দেওয়া ছিল। বহুদিন ধরে তাঁদের ওপর আস্থা রেখেই চলছিলেন তিনি। তাঁদের সব ধরনের সাহায্য করেছেন, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ শুনে কাজ করেছেন। তাঁর আইনজীবী জোনাথন লেইডল বলেছে, তাঁদের অনেকেই সুপরামর্শ দিয়েছেন। আবার অনেকেই সুবিধা ভোগ করতে চেয়েছেন। বরিস বেকার মানুষকে অতি মাত্রায় বিশ্বাস করেন, এটাই নাকি তাঁর কাল হয়েছে।