রাফায়েল নাদালের প্রিয় প্রাঙ্গণ রোলাঁ গারোয় গত মাসে ফ্রেঞ্চ ওপেন জিতে নাদালকেই ছাড়িয়ে গেছেন নোভাক জোকোভিচ। জিতেছেন ২৩তম গ্র্যান্ড স্লাম। এবার যে নিজেকে সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে নিতে চাইছেন, সেটা তাঁর পারফরম্যান্সের সঙ্গে কথাতেও স্পষ্ট। জোকোর দাবি, উইম্বলডনের শিরোপাদৌড়ে তিনিই এগিয়ে।
গত রাতে রাশিয়ার আন্দ্রেই রুবলেভকে ৪–৬, ৬–১, ৬–৪, ৬–৩ গেমে হারিয়ে উইম্বলডনের সেমিফাইনালে উঠেছেন জোকো। গ্র্যান্ড স্লাম ট্রফিতে চুমু আঁকা যাঁর অভ্যাস, তাঁর কাছে সেমিফাইনাল আর এমন কী! ৩৬ বছর বয়সী টেনিস কিংবদন্তি শেষ চারে নাম লেখাতে না পারলেই বরং অবিশ্বাস্য লাগত। তবু এ ম্যাচ এতটা আলোচনায় এসেছে রজার ফেদেরারকে ছুঁয়ে জোকোর আত্মরতির কারণে।
কালকের জয়ে উইম্বলডনে টানা পঞ্চম ও সব মিলিয়ে ১২ বার সেমিফাইনালে উঠেছেন জোকোভিচ। আর গ্র্যান্ড স্লামে ফেদেরারের ৪৬ বার শেষ চারে ওঠার রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন। তবে এটুকুতেই হয়তো সন্তুষ্ট নন, সর্বোচ্চ ৮ উইম্বলডন জয়েও ফেদেরারকে ছুঁতে চান।
লন্ডনের অল ইংল্যান্ড ক্লাবে এখন পর্যন্ত ৭ বার ট্রফি উঁচিয়ে ধরা জোকোভিচ বলেছেন, ‘শুনতে অহংকারী মনে হতে পারে। তবে আমি নিজেকেই ফেবারিট মনে করছি। এখানে সর্বশেষ চারটি শিরোপা জিতেছে। ফলের ভিত্তিতে নিজের ক্যারিয়ারকে বিচার করলে এবারও না জেতার কোনো কারণ নেই।’
কাল কোর্টে নেমে আরেকটি মাইলফলক ছুঁয়েছেন জোকোভিচ। রুবলেভের বিপক্ষে ম্যাচটা ছিল তাঁর গ্র্যান্ড স্লাম ক্যারিয়ারের ৪০০তম। রুশ প্রতিপক্ষকে হারিয়ে সেন্টার কোর্টে এক দশক অজেয় থাকার কীর্তিও গড়েছেন। সবাই তাঁকে হারাতে চান, ব্যাপারটা বেশ উপভোগ করেন সার্বিয়ান মহাতারকা, ‘যেকোনো খেলোয়াড় এমন উচ্চতায় উঠতে চায়, যাকে বাকিরা হারাতে চায়। যতবার কোর্টে নামি, ততবারই চাপে থাকি। তারা আমাকে পরাস্ত করতে চায়, জয় চায়। কিন্তু আমি হতে দিই না। আমি এটা (চ্যালেঞ্জ) ভালোবাসি।’
এটিপি র্যাঙ্কিংয়ের সাতে থাকা রুবলেভ এ পর্যন্ত ৮ বার গ্র্যান্ড স্লামের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে সববারই হেরে গেলেন। প্রথম সেট জিতে এগিয়ে গিয়েও বিদায় নিতে হওয়ায় যতটা না নিজের ভুল খুঁজে পেয়েছেন, তার চেয়ে বেশি জোকোভিচকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন, ‘কিঞ্চিৎ সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছিলাম। কিন্তু পারিনি। তিনি পেরেছেন। এ কারণেই তিনি নোভাক (জোকোভিচ), ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়।’
জোকোভিচ যতই আত্মবিশ্বাসী হন, ২৪তম গ্র্যান্ড স্লাম জেতা খুব একটা সহজ হবে না। র্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর তারকা কার্লোস আলকারাজ ও তিনে থাকা দানিল মেদভেদেভও যে লড়াইয়ে ভালোভাবেই আছেন। ২০ বছর পর টেনিসের তিন নক্ষত্রের বাইরে (ফেদেরার, নাদাল, জোকোভিচ) শীর্ষ বাছাই হিসেবে উইম্বলডনে নাম লিখিয়ে নিজের সামর্থ্যের জানান আগেই দিয়ে রেখেছেন আলকারাজ।
আজ তৃতীয় ও চতুর্থ কোয়ার্টার ফাইনাল জিততে পারলে সেমিফাইনালে আলকারাজ–মেদভেদেভ মুখোমুখি হবেন। অতি আত্মবিশ্বাসী জোকোভিচকে এখনই ফাইনালে তুলে দিলে তাঁর প্রতিপক্ষ হতে পারেন আলকারাজ–মেদেভেদেভের মধ্যে যেকোনো একজন।