গোলাপি–লাল পোশাকে কাকে স্মরণ করলেন সেরেনা

অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে বিশেষ এ পোশাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সেরেনা উইলিয়ামসছবি: টুইটার

করোনাভাইরাস ক্রীড়াঙ্গনে অনেকের প্রস্তুতিতেই বাধা সৃষ্টি করেছে। অস্ট্রেলিয়ান ওপেন শুরুর আগে অনেক খেলোয়াড়ই এ নিয়ে অনুযোগ করেছেন।

কিন্তু মেলবোর্ন পার্কে সেরেনা উইলিয়ামসকে দেখে তা বোঝার উপায় আছে? তরতর করে জিতে চলেছেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে সাতবারের এ চ্যাম্পিয়ন। আজ যেমন দ্বিতীয় রাউন্ডে সার্বিয়ান নিনা স্তোয়ানোভিচকে দাঁড়াতেই দেননি। মাত্র ৬৯ মিনিটের লড়াইয়ে ৬-৩, ৬-০ গেমে জিতে তৃতীয় রাউন্ডে উঠেছেন মার্কিন কৃষ্ণকলি।

দশম বাছাই সেরেনা উইলিয়ামসকে এবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে অন্য রকম পোশাকে দেখা যাচ্ছে। বেশ ফ্যাশনসচেতন সেরেনা এবার বছরের প্রথম গ্র্যান্ড স্লামের শুরু থেকে খেলছেন এক পা-ওয়ালা ক্যাটস্যুট পরে।

গাঢ় লাল-গোলাপি ও কালো রঙের ক্যাটস্যুটে এবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে লড়ছেন সেরেনা। এ পোশাকে ডান পা পুরো ঢাকলেও বাঁ পা ঢাকেননি ৩৯ বছর বয়সী কিংবদন্তি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। সেরেনাও জানিয়েছেন তাঁর এই বিশেষ ধরনের পোশাক পরার রহস্য।

ফ্লোরেন্স গ্রিফিথ জয়নারকে মনে পড়ে? ১৯৮৮ সিউল অলিম্পিকে মেয়েদের ১০০ মিটার, ২০০ মিটার ও ৪০০ মিটার রিলে দৌড়ে সোনার পদক জিতেছিলেন প্রয়াত এ দৌড়বিদ।

সেই অলিম্পিকের ট্রায়ালে ১০০ মিটার দৌড়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছিলেন ‘ফ্লো-জো’খ্যাত মার্কিন অ্যাথলেট। সে বছর ২০০ মিটারেও বিশ্ব রেকর্ড গড়েন তিনি। তাঁর এ দুটি রেকর্ড এখনো কেউ ভাঙতে পারেননি।

যুক্তরাস্ট্রের কিংবদন্তি দৌড়বিদ ফ্লোরেন্স গ্রিফিথ জয়নার
ছবি: টুইটার

১৯৯৮ সালে মাত্র ৩৮ বছর বয়সে ঘুমের মধ্যে একধরনের মৃগীরোগে আক্রান্ত হয়ে (এপিলেপটিক সিজার) না ফেরার দেশে পাড়ি জমানো অ্যাথলেট ফ্লোরেন্স ছিলেন ভীষণ ফ্যাশনসচেতন।

ট্র্যাকে সাধারণ উজ্জ্বল রঙের পোশাক পরে নামতেন। এমনকি হুডি পরেও নেমেছেন। ৩৩ বছর আগের সেই সিউল অলিম্পিকে সেরেনার মতো এমন ক্যাটস্যুট পরে নেমেছিলেন ফ্লোরেন্স।

পার্থক্য শুধু বাঁ পায়ে—ফ্লোরেন্সের সেই পোশাকের এক পাশ ছিল বিকিনি মডেলের। সেরেনারটা তা নয়, বাঁ পায়ের ঊরু কিছুটা ঢেকেছেন।

দৌড়ানোর জন্য এমন পোশাককে ‘ওয়ান লেগড’ বলেছিলেন নিজেই নিজের পোশাকের ডিজাইন করা ফ্লোরেন্স। তাঁর ফ্যাশনসচেতনতার আরেকটি বৈশিষ্ট্য ছিল ট্র্যাকে নামতেন বড় বড় নখ রেখে, নেইলপলিশও মাখতেন।

সিউল অলিম্পিকের ট্রায়ালে নখ রাখেন ৪ ইঞ্চি লম্বা, মূল প্রতিযোগিতায় তা আরও ২ ইঞ্চি করে বাড়িয়ে লাল, সাদা, নীল ও সোনালি নেইলপলিশ মেখে ট্র্যাকে নেমেছিলেন ফ্লোরেন্স। আর ছিল বড় বড় চুল। অনেক নারী অ্যাথলেট চুল ছেঁটে ফেলতেন অতিরিক্ত গতি পেতে, কিন্তু ফ্লোরেন্স বড় চুলের সঙ্গে ভারী গয়নাও পড়ে ঝড় তুলেছেন গতির ট্র্যাকে।

টেনিস কোর্টে ফ্লোরেন্সের সেই পোশাক ফিরিয়ে কিংবদন্তি দৌড়বিদকেই মনে করিয়ে দিয়েছেন আরেক কিংবদন্তি—সেরেনা, ‘ফ্লো-জোর কাছ থেকে প্রেরণা পেয়েছি। তিনি ছিলেন অসাধারণ একজন অ্যাথলেট। বড় হয়ে ওঠার সময় তাঁকে দেখেছি। তাঁর পোশাক ছিল অসাধারণ। এবার নতুন বছরে কী করা যায়, সেটা নিয়ে আমরা ভাবছিলাম। নাইকির দল ফ্লো-জোর পোশাক অবলম্বনে পরিকল্পনা করল। আমার অবস্থা তখন, এটা তো অসাধারণ! তিনি ছিলেন অসাধারণ স্টাইল আইকন। আমরা তাঁর পোশাক অবলম্বনে এটায় হালকা কিছু পরিবর্তন এনেছি।’