নাদালকে হারানোর সবচেয়ে ভালো সুযোগ জোকোভিচের

আরেকটি গ্র্যান্ড স্লামের ফাইনালে জোকোভিচ।ছবি: এএফপি

লাল দুর্গটার মালিকানা রাফায়েল নাদালের। এখানে অন্যরা ক্ষণিকের অতিথি। ১৫ বছরে যে খেলোয়াড় ১২ বারই শিরোপা জেতেন, তাঁর মুখোমুখি কে হতে চায়? ফ্রেঞ্চ ওপেনে নোভাক জোকোভিচ নিজেও নাদালের এ জয়যাত্রার শিকার। দুবার ফাইনালে তাঁর মুখোমুখি হয়ে হেরেছেন দুবারই। নাদালের কারণেই সংগ্রহে ফ্রেঞ্চ ওপেনটা যোগ করতে ২০১৬ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে জোকোভিচকে।

এর পর আর ফ্রেঞ্চ ওপেনের ফাইনাল খেলা হয়নি জোকোভিচের। নিজের প্রথম ফ্রেঞ্চ ওপেন জয়ের আগে আরও তিনবার সুযোগ পেয়েছিলেন। ২০১৫ সালে স্তান ভাভরিঙ্কা তাঁকে হতাশ করেছেন। ২০১২ ও ২০১৪ ফ্রেঞ্চ ওপেনে সেটা করেছেন নাদাল। এবারও ফাইনালে সেই নাদালকে পাচ্ছেন সার্বিয়ান। তবে এবার ফাইনাল ভাগ্য বদলানোর আশা জোকারের। কারণ ফ্রেঞ্চ ওপেনে সর্বশেষ মুখোমুখি লড়াইয়ে যে জয়ী তিনিই।

সে রাফা, সে ফাইনাল খেলছে, আমরা ক্লে কোর্টে খেলছি।
নোভাক জোকোভিচ

২০১৫ ওপেনেই সে কাজটা করা হয়ে গেছে। সেবার কোয়ার্টার ফাইনালে নাদালকে সরাসরি সেটে হারিয়েছেন জোকোভিচ। সে ম্যাচ দিয়েই রোলাঁ গারোতে টানা ছয় হারের ধারা থামিয়েছিলেন জোকোভিচ। সব প্রতিযোগিতা মিলে মুখোমুখি লড়াইয়েও এখন এগিয়ে গেছেন এই সার্বিয়ান। ২৯-২৬ ব্যবধানে এগিয়ে আছেন জোকোভিচই। কিন্তু, এ যে নাদালের মঞ্চ। কাজটা কঠিন সেটা জানেন জোকোভিচ, তবে বর্তমান পরিস্থিতিকেই নিজের সেরা সুযোগ মানছেন, ‘মে বা জুন মাসে যে ধরনের পরিস্থিতি থাকে, তার চেয়ে অনেক ভিন্ন এখন পরিস্থিতি। আমার ধারণা এটা আমার জন্য খুব ভালো সুযোগ। বল এখন আর কাঁধ উচ্চতায় উঠছে না, যেটা ওর পছন্দ। কিন্তু কোর্টের কন্ডিশন যেমনই হোক, সে তো আছে। সে রাফা, সে ফাইনাল খেলছে, আমরা ক্লে কোর্টে খেলছি।’

আগামীকাল রজার ফেদেরারকে ছোঁয়ার আশায় নামবেন ১৯ গ্র্যান্ড স্লাম জয়ী নাদাল। ওদিকে ফেদেরারের সঙ্গে ব্যবধান দুইয়ে নামিয়ে আনার আশায় নামবেন জোকোভিচ। গত ইউএস ওপেনে লাইন জাজের গায়ে বল মেরে নিষিদ্ধ না হলে কাল হয়তো ১৯ তম গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের জন্যই নামতে পারতেন জোকোভিচ।

ফেদেরারকে ছোঁয়ার অপেক্ষায় নাদাল।
ছবি: এএফপি

আগামীকাল নাদালের সম্পত্তিতে ভাগ বসাতে পারলে স্প্যানিশ তারকার কাছাকাছি চলে যাবেন। কিন্তু হার তাঁকে টেনিসের দুই কিংবদন্তির চেয়েই তিন গ্র্যান্ড স্লাম পিছিয়ে দেবে। ফলে বেশ বড় এক চ্যালেঞ্জ জোকোভিচের সামনে। তবে সার্বিয়ান একে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় ম্যাচগুলোর একটি বলে মানতে রাজি নন, ‘গ্র্যান্ড স্লামের ফাইনাল মানেই বড় কিছু। তবে এর মানে এটা নয় যে আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় ম্যাচ এটি। এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু ম্যাচ ছিল। আমি তুলনা করতে পছন্দ করি না, তবু যদি করতেই হয়, গুরুত্বের দিক থেকে তাঁর (নাদালের) বিপক্ষে খেলা প্রথম উইম্বলডন ফাইনালটা থাকবে। ছোট বেলা থেকে উইম্বলডন জেতার স্বপ্ন দেখে বড় হয়েছি। এটাই হয়তো সবচেয়ে আলাদা হয়ে আছে। ২০১৬ সালে অ্যান্ডি মারের বিপক্ষে ফ্রেঞ্চ ওপেন ফাইনালও তাই। জেতার আগে যত ফ্রেঞ্চ ওপেন ফাইনাল খেলেছি সবগুলোই আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ ছিল।’

টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন নাদাল। এখনো পর্যন্ত কোনো সেট হারেননি ১২ বারের চ্যাম্পিয়ন। ওদিকে সেমিতেও কঠিন সময় পার করতে হয়েছে জোকোভিচকে। সিতসিপাসকে হারাতে পঞ্চম সেট পর্যন্ত খেলতে হয়েছে তাঁকে। তবু রবিবারের ফাইনালে নিজের সেরা সুযোগ দেখছেন জোকোভিচ, ‘এই গ্র্যান্ড স্লামই সবচেয়ে কম (একবার) জিতেছি আমি। তাই আরেকটি জেতার জন্য খুবই অনুপ্রাণিত। আজকের (গতকাল) ম্যাচের পরও শারীরিকভাবে ক্লান্ত নই। দারুণ লড়াই ছিল কিন্তু আমার ভালোই লাগছে। আমার মতে সেরে ওঠার জন্য দেড় দিন যথেষ্ট সময়। রাফার সঙ্গে দারুণ এক লড়াইয়ের অপেক্ষায় আছি।’