সেই থিমের হাতেই ইউএস ওপেনের শিরোপা

ইউএস ওপেন দিয়েই গ্র্যান্ডস্ল্যাম জয়ের সূচনা ডমিনিক থিমেরছবি: রয়টার্স

এর আগে তিনটি গ্র্যান্ডস্লামের ফাইনালে উঠেছিলেন। জিততে পারেননি একবারও। এবার যেন তাঁর প্রতিজ্ঞাটা ছিল অন্যরকম। নয়তো দুই সেটে পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত জয়টা পেলেন কী করে!

হ্যাঁ, ইউএস ওপেন জিতেছেন অস্ট্রিয়ার ডমিনিক থিম। ২০১৪ সালের পর এই প্রথম ইউএস ওপেন দেখল নতুন এক চ্যাম্পিয়নকে। প্রতিপক্ষ জার্মানির আলেক্সান্ডার জভেরভকে পরাস্ত করেছেন ২–৬, ৪–৬, ৬–৪, ৬–৩, ৭–৬(৬) গেমে।

প্রথম দুই সেট হেরে গিয়েছিলেন থিম।
ছবি: রয়টার্স

রাফায়েল নাদাল ছিলেন না, ছিলেন না নোভাক জোকোভিচ। ওদিকে চোটের কারণে রজার ফেদেরারও নেই। থিম সহ তরুণদের সামনে তাই সূবর্ণ সুযোগ এসেছিল প্রথম গ্র্যান্ডস্ল্যাম জেতার। ফাইনালে ওঠা থিম কিন্তু সেই সুযোগের সদ্ব্যবহারের বদলে সেটি হারিয়ে ফেলতে বসেছিলেন প্রায়। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে পরপর দুটি গ্র্যান্ডস্ল্যামের ফাইনালে (ফ্রেঞ্চ ওপেন ও অস্ট্রেলিয়ান ওপেন) তিনি হেরেছিলেন যথাক্রমে নাদাল ও জোকোভিচের কাছে। এ বছর অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালেও হেরেছেন জোকোভিচের কাছে। প্রথম দুই সেটে পিছিয়ে পড়ার পর অনেকেই ভেবেছিলেন জভেরভের কাছে তিনি আরও একটি ফাইনাল হারতে বসেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তীব্র মানসিক শক্তিরই জয় হয়েছে। ২০০৪ সালে ফ্রেঞ্চ ওপেনে গাস্তন গডিওর পর এই প্রথমবারের মতো কোনো গ্র্যান্ডস্ল্যামের ফাইনাল জিতলেন প্রথম দুই সেটে পিছিয়ে পড়া খেলোয়াড়। ইউএস ওপেন এমন কীর্তি শেষবার দেখেছিল ১৯৪৯ সালে—পাচো গঞ্জালেস করেছিলেন সেই দুঃসাধ্য কাজ।

দারুণভাবে ফাইনালে ওঠা থিম ফেবারিটই ছিলেন ফাইনালে। ২২ বছর বয়সী জভেরভ প্রথমবার খেলেছেন ফাইনালে। মুখোমুখি লড়াইয়ে জভেরেভের চেয়ে এগিউএ ছিলে থিমই। ২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে শেষবার ফাইনাল খেলেছিলেন জার্মান খেলোয়াড় রেইনার শুটলার। জভেরভের সামনে হাতছানি ছিল বরিস বেকারের পর প্রথম জার্মান হিসেবে গ্র্যান্ডস্ল্যাম জয়ের।

ম্যাচটা হয়েছে দুর্দান্তই। রীতিমতো স্নায়ুক্ষয়ী। ম্যাচের শুরুতেই স্নায়ুর লড়াইয়ে কিছুটা পিছিয়ে পড়েছিলেন থিম। প্রথমেই ৫–১ ব্যবধানে সেটে পিছিয়ে মনে হচ্ছিল সন্ধ্যাটা তাঁর জন্য দুঃস্বপ্নেই পরিণত হবে। আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে বাজছিল থিমের আরও একটি পরাজয়ের সূচনা সংগীত।

দারুণ লড়েছেন জভেরভ
ছবি: রয়টার্স

কিন্তু এর পরপরই ঘুরে দাঁড়ান অস্ট্রিয়ান তারকা। তবে জভেরভও ছেড়ে কথা বলেনি। মোটকথা দুই খেলোয়াড়ই নিজেদের অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন। একবার থিম এগিয়ে গেছেন তো পরের বারই জভেরভই হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছেন। আফসোস একটাই এমন দুর্দান্ত এক লড়াই দেখার জন্য আর্থার অ্যাশে খুব বেশি দর্শক ছিল না। চার ঘণ্টার এই লড়াইটা কেবল শারীরিক শক্তির সর্বোচ্চ প্রয়োগই ছিল না, ছিল মানসিক দৃঢ়তা প্রদর্শনের ক্ষেত্রও।

ম্যাচ শেষে থিম নিজের প্রথম গ্র্যান্ডস্ল্যাম জয়ের উচ্ছ্বাস গোপন রেখেই এমন একটা লড়াইয়ের জন্য প্রতিপক্ষ জভেরভকেও কৃতিত্ব দিয়েছেন। তাঁর মতে, এ ম্যাচের জয়ী তাঁরা দুজনই, 'দুর্দান্ত লাগছে যে আমরা দুজনের পথ এভাবে মিলে গেছে এবং আমরা এই মূহুর্ত একসঙ্গে শেয়ার করতে পারছি। এমন ম্যাচে দুজন বিজয়ী হলেই ভালো হত। আমাদের দুজনেরই জয় প্রাপ্য।'