আক্রমণাত্মক ব্যাটিং কেন, এমন প্রশ্নে ‘অবাক’ মুমিনুল

এমন হারের পরও ‘আক্রমণাত্মক’ ব্যাটিংয়ের চেষ্টার দায় দেখছেন না মুমিনুলছবি: শামসুল হক

চট্টগ্রামে বাজে হারের পর মিরপুরে বৃষ্টি কিছুটা স্বস্তি হয়ে আসবে বলে ভেবেছিলেন বাংলাদেশের অনেক ক্রিকেটপ্রেমী। হয়তো মনে মনে ধরে নিয়েছিলেন, অন্তত এবার তো হারতে হবে না বাংলাদেশকে! তবে প্রথম তিন দিনে যে ম্যাচে হয়েছে ৬৩.২ ওভার, সে ম্যাচই শেষ দিনের শেষ সেশনে গিয়ে পাকিস্তানের কাছে ইনিংস ব্যবধানে হেরে বসেছে বাংলাদেশ!

চতুর্থ দিন পাকিস্তান ইনিংস ঘোষণার পর ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ করেছে বেশ অস্থিরচিত্তের ব্যাটিং। আক্রমণ করতে গিয়েও উইকেট হারিয়ে এসেছেন ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু এর আগে নাজমুল হোসেন বলেছিলেন, সেভাবে আগ্রাসী ব্যাটিং বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা করেননি। ম্যাচ হারের পর আজ অধিনায়ক মুমিনুল হক তো আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের কারণ জানতে চেয়ে করা প্রশ্নে ‘অবাক’ই হলেন। বাংলাদেশ অধিনায়কের মতে, আক্রমণাত্মক খেলেননি কেউই।

বাংলাদেশ অধিনায়কের মতে, আক্রমণাত্মক খেলেননি কেউই।
ছবি: প্রথম আলো

চতুর্থ দিনই ৭৬ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশকে চোখ রাঙাচ্ছিল পরাজয়। আজ শেষ দিন দ্রুতই ফলোঅনে পড়লে বাড়ে সে শঙ্কা। দ্বিতীয় ইনিংসে লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিমের পর মুশফিকের সঙ্গে সাকিব আল হাসান ও পরে মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে সাকিবের জুটিতে ম্যাচ বাঁচানোর আশা করেছিল বাংলাদেশ। তবে শেষ পর্যন্ত হারের শঙ্কাই সত্যি হলো।

এমন হারের পরও ‘আক্রমণাত্মক’ ব্যাটিংয়ের চেষ্টার দায় দেখছেন না মুমিনুল, ‘কেউ আক্রমণাত্মক খেলেনি। আপনার প্রশ্ন শুনে অবাক হয়েছি। সবাই যদি ধরেই খেলে, তাহলে রান করবে কোন সময়। ওরা ৩০০ রান করেছে, আপনারও তো রান করতে হবে। যারা আউট হয়েছে, তারা হিসেবি ঝুঁকি নিয়ে খেলেছে। যেখানে বল বেশি বাঁক খায়, সেখানে না মারলে হয় না। ওই সময় আমরা আউট হয়েছি, তাই এমন মনে হচ্ছে। আমাদের রান করার শটগুলোই খেলতে হয়েছে। কিন্তু সেটা আক্রমণাত্মক ব্যাটিং ছিল না।’

‘যে সংস্করণেই খেলেন না কেন, রান করাটা গুরুত্বপূর্ণ। আমি যদি শুধু রক্ষণাত্মক খেলি, (তাহলে) হবে না। রানও নিতে হবে।'
ছবি: প্রথম আলো

আগের দিন নাজমুলের মতো আজ মুমিনুলও বলেছেন, মিরপুরের এমন উইকেটে শুধু রক্ষণে ভর করে টিকে থাকা কঠিন। তবে নিজের আউটের ধরন নিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক খুশি নন মোটেও, ‘আমার আউটটাই ভুল। আমার হয়তো তাড়াহুড়ো করে রান নেওয়া উচিত হয়নি। কিন্তু সবাই মারতে গিয়ে আউট হয়নি। প্রথম ইনিংসে উইকেটে মুশফিক ভাই ও লিটনকে সমর্থন করব। কারণ, তখন উইকেটে বল ঘুরছিল অনেক। মুশফিক ভাই স্কয়ার অব দ্য উইকেটে মেরেছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ব্যাটে-বলে সংযোগ হয়নি। আসলে এসব উইকেটে বেশি রক্ষণাত্মক খেললে কঠিন হয়ে যায়। বাকিদের না, মনে হয় আমার উইকেটটাই বেশি বাজে ছিল। ওই সময় এসব রান না নেওয়াটাই ভালো।’

অবশ্য শুধু ‘আক্রমণাত্মক’ শট নয়, বাংলাদেশকে ডুবিয়েছে দুই ইনিংসে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দুই রানআউটও। প্রথম ইনিংসে মুমিনুল নিজে রানআউট হয়েছেন, দ্বিতীয় ইনিংসে হয়েছেন মুশফিক। মুমিনুল সাফাই গাইতে চাইলেন এসব রানআউট নিয়েও, ‘যে সংস্করণেই খেলেন না কেন, রান করাটা গুরুত্বপূর্ণ। আমি যদি শুধু রক্ষণাত্মক খেলি, (তাহলে) হবে না। রানও নিতে হবে। এতে মাঝেমধ্যে একটু ভুল–বোঝাবুঝি হয়। মুশফিক ভাইয়ের রানআউটটা দুর্ভাগ্য ছিল। ব্যাটটা নিচে থাকলে উনি বেঁচে যেতেন।’