আফগানিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে শ্রীলঙ্কা

বোলাররা ভালোই লড়েছিলেন। কিন্তু লঙ্কান বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি আফগান ব্যাটসম্যানরা। ছবি: রয়টার্স
বোলাররা ভালোই লড়েছিলেন। কিন্তু লঙ্কান বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি আফগান ব্যাটসম্যানরা। ছবি: রয়টার্স

এশিয়া কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে ভালোভাবেই চেপে ধরেছিল আফগানিস্তান। পরের ম্যাচে বাংলাদেশকে ৩২ রানে হারাল। আজ শ্রীলঙ্কাকেও ভীষণ চাপে রাখল আফগানরা। ১৮৪ রানেই ফেলে দিয়েছিল শ্রীলঙ্কার ছয় উইকেট। যেন আকাশেই উড়ছিল আফগানিস্তান। কিন্তু শ্রীলঙ্কান বোলাররা তাদের বাস্তবতার জমিনে টেনে নামালেন। ২৫৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে ভোকাট্টা ঘুড়ির মতো ছন্দ হারিয়ে মাটিতে নেমে এল আফগানরা। ৩৮.৪ ওভারে অলআউট হলো ১২৪ রানে, হারতে হলো ১২৯ রানের বিশাল ব্যবধানে। এ জয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে চলে গেল অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের দল।
৮ রানে প্রথম উইকেট হারালেও আসগর স্টানিকজাই ও নূর আলীর ৪৫ রানের জুটি ভালোমতোই পথ দেখাচ্ছিল। স্টানিকজাই ফিরতেই টালমাটাল আফগানিস্তান। ১ উইকেটে ৫৩ থেকে মুহূর্তেই ৫ উইকেটে ৭৩। ২০ রানের মধ্যেই হারিয়েছে চার উইকেট। শ্রীলঙ্কান বোলারদের তোপে পড়ে এরপর আর মাথা তুলে দাঁড়াতেই পারেনি আফগানরা। ব্যাটসম্যানদের যাওয়া আসার মিছিলে একমাত্র ব্যতিক্রম মোহাম্মদ নবী। চতুরঙ্গা ডি সিলভার শিকার হওয়ার আগে আফগান অধিনায়ক করেন দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৭। শ্রীলঙ্কার পক্ষে সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট নেন থিসারা পেরেরা ও অজন্তা মেন্ডিস।
অথচ আজ দীর্ঘ সময় শ্রীলঙ্কাকেই চাপেই রেখেছিল আফগানিস্তান। ৪৫ ওভারেও ২০০ পূর্ণ করতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। তবে শেষ ৫ ওভারে ৫৪ রান তোলায় নির্ধারিত ৫০ ওভারে লঙ্কানদের স্কোর ৬ উইকেটে ২৫৩।
লঙ্কানদের ওপর চাপটা শুরু থেকেই শুরু করেছিল আফগানরা। ৮৩ রানেই পড়ে গিয়েছিল ৩ উইকেট। এরপর কুমার সাঙ্গাকারা আর দিনেশ চান্ডিমালের ৭৪ রানের জুটি শ্রীলঙ্কাকে কক্ষপথে ফেরায়। কিন্তু ১৫৭ রানে চতুর্থ উইকেট পড়ার পর আবারও লঙ্কান ইনিংসে মৃদু ভূমিকম্প। ২৭ রানের মধ্যে তিন উইকেট হারিয়ে ১৮৪/৬ হয়ে যায় তারা। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের অপরাজিত ৪৫ রান শেষ পর্যন্ত ভালো পুঁজি এনে দেয় তাদের।
আফগান বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ২ উইকেট মিরওয়াসি আশরাফের। এ থেকেই বোঝা যায়, একক প্রচেষ্টায় নয়, আফগান বোলার এবং ফিল্ডাররা কাঁধ মিলিয়েই আবার লড়ছেন। প্রথম ব্রেক থ্রুটা অবশ্য এনে দিয়েছিলেন শাপুর জাদরান। দলীয় ১৪ রানেই ফিরিয়েছিলেন লাহিরু থিরিমান্নেকে। কুশল পেরেরা আর মাহেলা জয়বর্ধনেও অল্প রানে ফিরে গেলে ২১.২ ওভারে ৮৩ রানে ৩ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। এর পরই সাঙ্গাকারা-চান্ডিমালের সেই জুটি। হামজা হোটাক এই জুটি ভাঙেন চান্ডিমালকে বোল্ড করে। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সাঙ্গাকারা ৭৬ রান করে বিদায় নেন রানআউটের খাঁড়ায়। আজ ম্যাচ সেরা তিনিই। কয়েক বলের মধ্যে চুতরঙ্গ ডি সিলভা নিশ্চিত রানআউটের হাত থেকে বেঁচে গেলেও জাদরানের শিকার হন শেষ পর্যন্ত। এর পরই অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ও থিসারা পেরেরার ওভারে ৮.৪৪ গড়ে রান তোলা ৬৯ রানের জুটিটাই শেষ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কা অল্প রানেই গুটিয়ে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচিয়েছে।
আজ হারলেও আফগানরা এরই মধ্যে একটি সুখবর পেয়ে গেছে। বাংলাদেশকে হারানোর পর আফগানিস্তান ঢুকে পড়েছে আইসিসি ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে। ৩২ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে তাদের অবস্থান ১২ নম্বরে। দশ টেস্ট খেলুড়ে দেশ ও আয়ারল্যান্ডের পরই মোহাম্মদ নবীর দলের অবস্থান।