আর্জেন্টিনার আক্রমণভাগ এখনো জ্বলে ওঠেনি!

আর্জেন্টিনা আর হল্যান্ডের লড়াই দেখার জন্য মুখিয়ে আছে ফুটবলবিশ্ব। তারা যে শুধু পরাশক্তি তা-ই নয়, দুদলই সুন্দর ফুটবল খেলে। বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা দুই আক্রমণভাগ লড়াই করবে ফাইনালে জায়গা করে নেওয়ার জন্য। দলীয় ভারসাম্য বিচারে আর্জেন্টিনা আর হল্যান্ড দুই দলই অসাধারণ। ডাচদের আছে আরিয়েন রোবেনের মতো ম্যাচ উইনার, পিনোকীয়র মতো ওর সৃষ্টিশীল চলাফেরা প্রতিপক্ষের জন্য বিপজ্জনক। আর্জেন্টিনার আছে লিওনেল মেসি, কিন্তু অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়ার অভাববোধ করবে ওরা।
লুই ফন গালের অধীনে ডাচরা দুর্দান্তভাবে টুর্নামেন্ট শুরু করেছিল গতবারের চ্যাম্পিয়ন স্পেনকে উড়িয়ে দিয়ে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দল হয়েছে আরও পরিণত। সন্দেহ নেই, মূল কৃতিত্ব রবিন ফন পার্সি আর আরিয়েন রোবেনের। গতবার শিরোপার এত কাছে এসেও না পাওয়ার দুঃখ ভুলে ওরা দলকে এগিয়ে নিয়ে গেছে সামনের দিকে। ২০১০-এর সেই দলে ছিলেন ওয়েসলি স্নাইডারও। তিনজনেই এখন আছেন ফন গালের দলে, যারা টেকনিক্যাল দৃষ্টিকোণ থেকে খুব শক্তিশালী আর প্রতি-আক্রমণে সিদ্ধহস্ত। দেখবেন, ওরা রক্ষণভাগ গুছিয়ে অপেক্ষা করবে কখন প্রতিপক্ষ ভুল করবে। কিন্তু এটা তখনই করা সম্ভব, যখন অন্য দল আক্রমণ করবে। কিন্তু যদি ওরা আক্রমণ না করে? আমি নিশ্চিত, সাবেলা এমন কৌশলই অবলম্বন করবেন হল্যান্ডের সঙ্গে।
মেসি হলো ‘ক্যাপ্টেন ফ্যানটাস্টিক’-এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। ও একাই পুরো দেশের প্রত্যাশার চাপ সামলে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে ম্যাচ জিতিয়ে যাচ্ছে। গ্রুপপর্বে মেসি গোল করেছে প্রতিটি ম্যাচেই, প্রথম চার ম্যাচেই ও ছিল সেরা খেলোয়াড়। আর্জেন্টিনার আক্রমণভাগ এখনো নিজেদের সেরাটা খেলতে পারেনি, কিন্তু ধীরে ধীরে ওরা তুলনামূলকভাবে ভালো করেছে। ফুটবলের সবচেয়ে বড় পুরস্কার জেতা থেকে মেসির দল মাত্র দুটি ম্যাচ দূরে, কিন্তু ডি মারিয়াকে ছাড়া কাজটা দ্বিগুণ কঠিন হয়ে গেল।
তবে রোবেনকে ঠেকাতে পারলেই কাজ অর্ধেক হয়ে যাবে। অবশ্য হল্যান্ড প্রথমে গোল করলেও মেসির দল ম্যাচে সমতা আনতে পারবে বলেই আমার বিশ্বাস। চার বছর আগে আর্জেন্টিনা জার্মানির কাছে হেরেছিল ৪-০ গোলে, কিন্তু সেই দল থেকে এই দল অনেক পরিণত। আর ওরা খেলছেও চেনা পরিবেশে। মেসি তার ম্যাজিক দেখাতে পারলেই আর্জেন্টাইনদের স্বপ্ন হবে সত্যি।