ইংল্যান্ডকে বিদায় বলে দিলেন বিশ্বকাপ জয়ের সারথী

বিদায় বলে দিলেন অ্যানিয়া শ্রাবসোলআইসিসি

রাজেশ্বরী গায়কোয়াড় বোল্ড হলেন ভুল লাইনে খেলতে গিয়ে। উদ্‌যাপন করতে গিয়ে যেন উড়ে বেড়াতে শুরু করলেন অ্যানিয়া শ্রাবসোল। লর্ডসের ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে বিশ্বকাপ জিতল ইংল্যান্ড, ৪৬ রানে ৬ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা শ্রাবসোলই। পাঁচ বছর পর আরেকটি বিশ্বকাপ ফাইনালেও শেষের দৃশ্যপটে থাকলেন, আউট হলেন শেষ ব্যাটার হিসেবে। এবার আর চ্যাম্পিয়ন হতে পারল না ইংল্যান্ড। ক্রাইস্টচার্চে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওই ম্যাচটি ইংল্যান্ডের হয়ে শেষ হয়ে থাকল শ্রাবসোলের।

আজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিয়েছেন ইংল্যান্ডের ২০১৭ বিশ্বকাপ জয়ে বড় ভূমিকা রাখা এই পেসার। এর মাধ্যমে শীর্ষ পর্যায়ে ১৪ বছরের ক্যারিয়ারের ইতি। ইংল্যান্ডের হয়ে দুটি করে বিশ্বকাপ ও অ্যাশেজজয়ী এই পেসার সব মিলিয়ে ইংল্যান্ডের হয়ে ১৭৩ ম্যাচে নিয়েছেন ২২৭ উইকেট। মেয়েদের ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের হয়ে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ উইকেট তাঁর, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতেও।

২০১৭ বিশ্বকাপ ফাইনালে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন শ্রাবসোল
রয়টার্স

বিশ্বকাপ পারফরম্যান্সেই ২০১৮ সালে প্রথম মেয়ে ক্রিকেটার হিসেবে উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালম্যানাকে প্রচ্ছদে এসেছিলেন। দেশকে একবার নেতৃত্বও দিয়েছেন। বিদায়বেলায় মেয়েদের ক্রিকেটের দারুণ এক সময়ের অংশ থাকতে পেরে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন শ্রাবসোল, ‘১৪ বছর ধরে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়েছি। মেয়েদের ক্রিকেটের এমন প্রসারের সময় সম্পৃক্ত থাকতে পারাটা সম্মানের। তবে এখন অনেক দ্রুত এগোচ্ছে এটি, আমি ঠিক তাল মেলাতে পারছি না। যে কারণে সরে যাওয়ার উপযুক্ত সময় মনে হচ্ছে এটিকে।’

সরে যাচ্ছেন শুধুই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে। আরও কিছুদিন ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলে যাবেন। র‍্যাচেল হেহো ফ্লিন্ট ট্রফি, শার্লট এডওয়ার্ডস কাপের সঙ্গে খেলবেন দ্য হান্ড্রেড টুর্নামেন্টেও।

ইংল্যান্ডের হয়ে দুইটি বিশ্বকাপ জিতেছেন শ্রাবসোল
ইংল্যান্ড ক্রিকেট

২০০৮ সালে ১৭ বছর বয়সে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে ইংল্যান্ডের হয়ে অভিষেক। পেছনে ফিরে অনুমিতভাবেই ২০১৭ সালের বিশ্বকাপের কথা আলাদা করে বলেছেন ৩০ বছর বয়সী পেসার, ‘ইংল্যান্ডের হয়ে এত দিন খেলার সৌভাগ্যের কথা আমার দূরতম স্বপ্নেও ছিল না। একটা ম্যাচ খেলতে পারলেই খুশি থাকতাম। অনেক উত্থান-পতন হয়েছে, তবে লর্ডসে বিশ্বকাপ উঁচিয়ে ধরার জন্য সবই মেনে নেওয়া যায়।’

অবসরের সময় আলাদা করে ধন্যবাদ জানিয়েছেন পরিবারকে, ‘অনেকেই আমাকে সমর্থন দিয়েছেন এ পথে। সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। তবে পরিবারের নিরঙ্কুশ সমর্থন ছাড়া খেলতে পারতাম না। প্রতিটি ধাপেই তারা আমার সঙ্গে ছিল।’

থেমে গেল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শ্রাবসোলের পথচলা
রয়টার্স

ইসিবির মেয়েদের ক্রিকেটের মহাব্যবস্থাপক ক্লেয়ার কনোর কৃতজ্ঞতাভরে স্মরণ করেছেন শ্রাবসোলের অবদান, ‘অ্যানা ইংলিশ ক্রিকেট, বিশেষ করে মেয়েদের ক্রিকেটে সবচেয়ে নিবেদিতদের একজন। ১৪ বছর ধরে সবকিছুই উজাড় করে দিয়েছে সে। ক্রাইস্টচার্চে বিশ্বকাপ ফাইনালে ইংল্যান্ডের হয়ে বোলিংয়ে সেরা পারফরমার ছিল, যেমন ছিল ২০১৭ সালে লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ের জাদুকরী ওই দিনে। প্রতিটি মেয়েকে উৎসাহিত করার সঙ্গে যা কিছু করেছে, তার জন্য আমরা তাকে ধন্যবাদ জানাই। জীবনের পরবর্তী ধাপের জন্য শুভকামনা।’

এমন প্রশংসা আরও অনেকের কাছ থেকেই পাচ্ছেন শ্রাবসোল। যাঁদের মধ্যে আছেন বিভিন্ন সময়ে তাঁর সতীর্থ হেদার নাইট, কেট ক্রস, ক্যাথরিন ব্রান্ট, সারাহ টেলর, শার্লট এডওয়ার্ডস প্রমুখ।