উত্তর লন্ডনের রাজত্ব মরিনিওর হাতেই

আর্সেনালের বিপক্ষে ম্যাচ আর মরিনিও জিতবেন না, তা কি হয়?ছবি : রয়টার্স

এর আগে যখন দুই দফা চেলসির ম্যানেজার ছিলেন, আর্সেনাল-টটেনহামের বিপক্ষে লন্ডন ডার্বিগুলো জিততে বড় ভালোবাসতেন জোসে মরিনিও। কালের পরিক্রমায় চেলসি ছেড়ে এখন টটেনহামের দায়িত্বে মরিনিও। তাতে কী? পুরোনো অভ্যাসে কি আর মরচে পড়ে?

আবারও লন্ডন ডার্বিতে জিতলেন এই পর্তুগিজ কোচ। উত্তর লন্ডনের প্রতিবেশী আর্সেনালের বিপক্ষে মরিনিওর স্পার্সের জয়টা ২-০ গোলের। আর জিতেই নিজের ৪০তম লন্ডন ডার্বি জিতে নিয়েছেন মরিনিও।

টটেনহামের হয়ে গোল করেছেন ইংলিশ স্ট্রাইকার হ্যারি কেইন ও দক্ষিণ কোরীয় ফরোয়ার্ড সন হিউং মিন। আক্রমণভাগে আদর্শ জুটি বলতে যা বোঝায়, এই মৌসুমে এই দুজন প্রতিনিয়ত যেন সেই আদর্শ জুটিরই প্রমাণ দেখিয়ে যাচ্ছেন ফি হপ্তায়। দুই গোলের মধ্যে প্রথম গোল সনের, বানিয়েছেন কেইন। কেইনের করা দ্বিতীয় গোলের উৎস আবার সন!

কেইন-সন, এই দুজনই টানছেন টটেনহামকে।
ছবি : রয়টার্স

মৌসুমের মাত্র ১১ ম্যাচ যেতে না যেতেই দুজনের যুগলবন্দীতে ১১টা গোল দেখে ফেলেছে প্রিমিয়ার লিগ। জুটি বেঁধে এভাবে এক মৌসুমে গোল করা ও করানোয় কেইন-সনের ওপরে আছেন ব্ল্যাকবার্ন রোভার্সের ইংলিশ স্ট্রাইক জুটি অ্যালান শিয়ারার ও ক্রিস সাটন এবং বোর্নমাথের উইঙ্গার রায়ান ফ্রেজার ও স্ট্রাইকার ক্যালাম উইলসন।

শিয়ারার-সাটন একে অন্যকে দিয়ে ১৩ গোল করিয়েছিলেন ১৯৯৫-৯৬ মৌসুমে, সে তুলনায় ফ্রেজার-উইলসনদের রেকর্ডটা সাম্প্রতিক, ২০১৮-১৯ মৌসুমে দুজন মিলেমিশে ১২ গোল করেছেন, করিয়েছেন।

আর্সেনালকে আরও ভুগিয়েছে তারকা মিডফিল্ডার থমাস পার্টের চোট।
ছবি : রয়টার্স

ম্যাচের ১৩ মিনিটেই এগিয়ে যায় টটেনহাম। মাঝমাঠে বল পেয়ে দ্রুত প্রতি–আক্রমণ শুরু করার জন্য সনকে পাস দেন কেইন। বাঁ প্রান্ত দিয়ে বেশ কয়েক গজ দৌড়ে যাওয়ার পর কাট ইন করে ডান পায়ের বুলেট শটে দৃষ্টিনন্দন গোল করেন সন। এই গোলে সহায়তা করে ১১ ম্যাচেই ১০ অ্যাসিস্ট হয়ে গেছে কেইনের। এত কম ম্যাচে এত বেশি অ্যাসিস্টের রেকর্ড এর আগে এই আর্সেনালের জার্মান মিডফিল্ডার মেসুত ওজিলেরই ছিল, ২০১৫-১৬ মৌসুমে।

ওজিল এই ম্যাচে ছিলেন না। যথারীতি তাঁকে স্কোয়াডের বাইরে রেখেই দল সাজিয়েছিলেন কোচ মিকেল আরতেতা। কিন্তু টটেনহামের জমাট রক্ষণ ভাঙার জন্য ওজিলের সৃষ্টিশীলতার যে কত দরকার ছিল, এ ম্যাচে আবারও বোঝা গেছে। উইলিয়ান, লাকাজেত, অবামেয়াং—প্রত্যেকেই ছিলেন নিষ্প্রভ। উল্টো প্রথমার্ধের একদম শেষ দিকে আরেকটা গোল খেয়ে বসে আর্সেনাল। এবার সহায়তাকারীর ভূমিকায় সন, গোলদাতা কেইন।

ম্যাচের শুরুতেই দুর্দান্ত এক গোল করে বসেন সন।
ছবি : রয়টার্স

লিগের ইতিহাসে এক ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ড-দিদিয়ের দ্রগবা জুটিরই পরস্পরকে গোল করানোর সংখ্যা বেশি। মরিনিওর অধীনেই তারকাখ্যাতি পাওয়া এ দুজন একে অপরকে দিয়ে গোল করিয়েছেন ৩৬টি। সন-কেইনের ওপরেও এখন মরিনিওর ছায়া। মরিনিও কি পারবেন তাঁর সাবেক শিষ্যদের মতো এই শিষ্যদেরও মহাতারকা বানাতে? সময়ই বলে দেবে!

পূর্ণ ৩ পয়েন্ট পেয়ে মোট ২৪ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের শীর্ষেই আছে স্পার্স। সমান পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে পিছিয়ে থাকা লিভারপুল আছে দুইয়ে।