এখনো বিশ্বাস করি ব্রাজিল কাপ জিততে পারে

কাল (আজ) বিশ্বের অন্যতম সেরা দুটি দল, ব্রাজিল ও জার্মানি বেলো হরিজেন্তের এস্তাদিও মিনেইরোতে মুখোমুখি। ২০০২ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় সর্বশেষ সেমিফাইনাল খেলেছিল ব্রাজিল। তাদের সর্বশেষ শিরোপার সুখস্মৃতিও সেবার। আবার তারা শেষ চারে। অন্যদিকে গত দুবার তৃতীয় হয়েছে জার্মানি। তারপর এটা তো ঠিক, ১৯৯০ সালের পর তারা আর বিশ্বকাপ জেতেনি। সেই অচলায়তন এবার জার্মানি ভেঙে দিতে চাইবেই।

 সেমিফাইনালের আগে বড় একটা ধাক্কা খেয়েছে ব্রাজিল। মেরুদণ্ডে চোট পেয়ে নেইমার চলে গেছে দলের বাইরে। বলাই বাহুল্য, লুইস ফেলিপে স্কলারির জন্য এটা সংকট। শুধু তো নেইমারই নয়, নিষেধাজ্ঞার খড়্গে থিয়াগো সিলভাও খেলতে পারবে না আজ। নিশ্চিতই স্কলারির কপালে ভাঁজ পড়বে। কিন্তু ব্রাজিলের আরও বেশ কয়েকজন দুর্দান্ত খেলোয়াড় আছে। তাদের এখন দায়িত্ব নেইমারের অভাবটা বুঝতে না দেওয়া। যদিও কাজটা মোটেই সহজ নয়। তবে স্কলারির ট্যাকটিকসের ওপর আমার ভরসা আছে। আমি এখনো বিশ্বাস করি, ব্রাজিল কাপ জিততে পারে। স্কলারির সবচেয়ে বড় গুণ দলকে উদ্দীপ্ত করার ক্ষমতা। নেইমারকে কীভাবে খেলাতে হয়, সেটা তিনি দেখিয়েছেন। আমার মনে হয়, নেইমারকে ছাড়া কীভাবে খেলতে হবে সেটাও তিনি দেখাতে পারবেন। নেইমার ও থিয়াগো সিলভার অনুপস্থিতির সুযোগ জার্মানি নেওয়ার চেষ্টা করবে। তবে শুরুতে যদি ব্রাজিল একটা গোল দিয়ে দিতে পারে, তাহলে ওদের প্রতিরোধ ভাঙা জার্মানির জন্য শক্ত হবে।

তবে ব্রাজিল কিন্তু অতীত থেকে অনুপ্রেরণা নিতে পারে। বিশ্বকাপের সময় এর আগেও ব্রাজিল নিজেদের সেরা খেলোয়াড়কে হারিয়েছে। তার পরও কিন্তু বিশ্বকাপ জিতেছে ব্রাজিল।

ফ্রান্সের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেই শেষ চারে এসেছে জার্মানি। গোল করা ছাড়া তো ফ্রান্স প্রায় সবকিছুই করেছে ওই ম্যাচে। জার্মানির রক্ষণ তাদের সঙ্গে বেমানানভাবে বেশ কিছু সুযোগ দিয়েছিল। গোল করতে না পারার পেছনে ফ্রান্সের নিজেদের ব্যর্থতা তো আছেই, ম্যানুয়েল নয়্যারের অবদানও কম নয়। জার্মানির এই দলটা দারুণ প্রতিভাবান। লাম, নয়্যার, বোয়াটেং, শোয়েনস্টাইগার, গোটশে, ক্রুস, মুলার—গত কয়েক মৌসুমে দুর্দান্ত খেলা বায়ার্ন মিউনিখের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় আছে তাদের। ওজিল, পোডলস্কি, ক্লোসাদের মতো ম্যাচের ভাগ্য বদলে দেওয়ার মতো খেলোয়াড়ও আছে। জোয়াকিম লো এখনো অপরাজিত। গ্রুপপর্বে ঘানার সঙ্গে ম্যাচ ছাড়া তারা বাকি সব ম্যাচই জিতেছে। কিন্তু সেমিফাইনাল পর্ব পেরোনো তাদের জন্য বড় একটা চ্যালেঞ্জ।

আরও বেশ কয়েকটি দলের সেমিফাইনালে ওঠার মতো যোগ্যতা ছিল। দুর্দান্ত খেলেও তারা বাদ পড়ে গেছে। কলম্বিয়ার নামটাই আগে বলতে হবে, যত দূর সম্ভব যাওয়ার মতো সামর্থ্য ওদেরও ছিল। সুযোগ কাজে লাগাতে না পারার মাশুল দিতে হয়েছে ফ্রান্সকে, দারুণ লড়েও হেরে গেছে চিলি, হল্যান্ডকে টাইব্রেকারের পরীক্ষায় যেতে বাধ্য করেছে কোস্টারিকা। সবচেয়ে মজার ব্যাপার, এবার সেমিফাইনালের দুটি ম্যাচই হবে ইউরোপিয়ান বনাম লাতিন আমেরিকান লড়াই।