ওয়ার্নকে ধুয়ে দিলেন 'উদ্ধত' স্যামুয়েলস

ফাইনাল শেষে ইডেনের সংবাদ সম্মেলনে এভাবেই বসেছিলেন মারলন স্যামুয়েলস ছবি: এএফপি।
ফাইনাল শেষে ইডেনের সংবাদ সম্মেলনে এভাবেই বসেছিলেন মারলন স্যামুয়েলস ছবি: এএফপি।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি এলেন প্যাড পরেই। ২০১২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালেও ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন, এবারও তা-ই। চোখ-মুখ থেকে যেন ঠিকরে বেরোচ্ছিল এক ধরনের ঔদ্ধত্য। আর সেটা প্রকাশ করতে যেন মারলন স্যামুয়েলস বেছে নিলেন ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনটা।
ইংল্যান্ড অধিনায়ক এউইন মরগানের ব্রিফিং তখনো চলছিল, একটু আগে-ভাগেই চলে এসেছিলেন স্যামুয়েলস। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলেন। কিন্তু ‘চ্যাম্পিয়ন’ স্যামুয়েলসের ধৈর্যচ্যুতি ঘটল খুব তাড়াতাড়িই। বলেই বসলেন, ‘কী ব্যাপার আমার পর্ব শুরু হবে কখন?’ মরগানের ব্রিফিং শেষে তিনি যখন চেয়ারে বসলেন তখন সবার চক্ষু-চড়কগাছ! একি, স্যামুয়েলস যে প্যাড পরা পা দুখানা তুলে দিয়েছেন সামনের টেবিলে! পরে বোঝা গেল, প্যাড পরা থাকায় টেবিলের নিচে পা রাখতে অসুবিধা হচ্ছিল স্যামুয়েলসের। কিন্তু তাই বলে টেবিলে পা তুলে দিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব কবে কোন খেলোয়াড় দিয়েছেন!
আইসিসির মিডিয়া কর্তাও যেন তখন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট। হজম করে গেলেন পুরো বিষয়টা! ‘আর ইউ কমফোর্টেবল?’ —সাংবাদিকদের প্রশ্ন করলেন স্যামুয়েলস। পরের দশ মিনিট যেন ঝড়ই বয়ে গেল ইডেনের সংবাদ সম্মেলন-কক্ষে। ক্যারিবীয় এই তারকার মুখ যেন আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ আর তা থেকে বেরিয়ে এলো লাভা। সেই লাভায় পুড়লেন শেন ওয়ার্ন, বেন স্টোকসরা।
স্যামুয়েলসের সঙ্গে মাঠেই একচোট হয়ে গিয়েছিল বেন স্টোকসের। শেষ ওভারে স্টোকসের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়েছে। পরে ইংলিশ অলরাউন্ডার কার্লোস ব্রাফেটের কাছে পরপর চারটি ছয় খাওয়ার পর তাঁকে ভীষণ খেপিয়েছেন স্যামুয়েলস। ম্যাচ শেষে প্রায় ছুটেই যাচ্ছিলেন ইংলিশ ডাগ আউটের দিকে। ভাগ্যিস, সতীর্থরা টেনে ধরেছিলেন তাঁকে। সংবাদ সম্মেলনেও স্টোকসকে ফালি ফালি করলেন স্যামুয়েলস, ‘আরে, ও সব সময় বেশি কথা বলে। কতবার বলেছি, খেলার সময় আমার সঙ্গে কথা বলবে না, তাও আসে। এখনো বোঝো, শেষ পর্যন্ত কি হলো! ভালো লাগল তো এবার!’
ওয়ার্নের সঙ্গে তাঁর শত্রুতাটা তো অনেক পুরোনো। সেই বিগ ব্যাশের ঝগড়াটা আজও বুকে বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছেন স্যামুয়েলস। সেদিন ভারতের বিপক্ষে সেমিফাইনালে আউট হওয়ার পর ধারাভাষ্যকক্ষে বসে থাকা ওয়ার্নের মন্তব্যও তাঁতিয়ে দিয়েছে তাঁকে। কাল ম্যাচ সেরা হওয়ার পর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে নাসের হুসেইনের কাছে প্রতিক্রিয়া জানানোর সময় হঠাৎ করেই সেই ওয়ার্নের প্রসঙ্গ টেনে আনলেন, ‘আজ সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর একটি ব্যাপারই আমার মাথায় ছিল। শেন ওয়ার্ন খুব বেশি বকবক করছে। এই ম্যাচ-সেরার ট্রফি তাঁর জন্য। আমি ব্যাট হাতে জবাব দেই, মাইক্রোফোনে নয়।’
পরে সংবাদ সম্মেলনে এসে সরাসরিই বললেন, ‘আমি যখনই খেলতে নামি, ওয়ার্নের যেন কোনো একটা সমস্যা হয়। অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজ খেলার সময়ও ওয়ার্ন আমাকে নিয়ে অনেক কিছু বলেছে। আমি তাকে কখনোই অশ্রদ্ধা করিনি। কিন্তু মনে হয়, তার ভেতরে অনেক কিছু জমা হয়ে আছে যেগুলো বের হয়ে আসা উচিত।’
বলতে বলতেই শেন ওয়ার্নের প্লাস্টিক সার্জারি করা নিয়েও খোঁচা মারেন স্যামুয়েলস, ‘জানি না সে কেন এসব করছে। হয়তো আমার চেহারাটা আসল, ওরটা আসল নয়—এ কারণেই!’ ক্রিকইনফো।