কী শাস্তি হবে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের?

মোহাম্মদ আশরাফুলের শাস্তি হলে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসেরও কেন হবে না? বিপিএল ফিক্সিং-বিতর্কে জড়িয়ে পড়া এই ফ্র্যাঞ্চাইজির শাস্তিটা এখন রীতিমতো গণদাবি। তবে বিস্ময়কর হলেও সত্য, অভিযোগ প্রমাণিত হলে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস মালিকপক্ষের কী শাস্তি হতে পারে, সে ব্যাপারে স্পষ্ট করে বলতে পারছে না বিসিবিও!

আকসুর কাছে দেওয়া আশরাফুলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বিপিএলে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের মালিকপক্ষই ফিক্সিংয়ে বাধ্য করেছিল তাঁকে। সংবাদমাধ্যমের কাছে মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে ফিক্সিংয়ের অভিযোগ এনেছেন দলের বোলিং কোচ মোহাম্মদ রফিকও। এসব অভিযোগ আকসুও আমলে নিয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। কিন্তু অপরাধীর কাঠগড়ায় দাঁড়ানো আশরাফুল আর ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের মধ্যে এখন পর্যন্ত বড় পার্থক্য হলো, আশরাফুল অন্যায়টা স্বীকার করে ক্রিকেট থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কৃত হয়েছেন। আর অভিযোগ অস্বীকার করা মালিকপক্ষের ব্যাপারে এখনো নেওয়া যায়নি কোনো সিদ্ধান্তই। আশরাফুলের পরিবার থেকে শুরু করে সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যেও তাই ক্ষোভ-হতাশা। ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের অপরাধটা না শেষ পর্যন্ত ধামাচাপাই দেওয়া হয়, আছে সে শঙ্কাও।

মালিকেরা দোষী প্রমাণিত হলে ফ্র্যাঞ্চাইজিকে বহিষ্কার করা হবে কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে পরশুর সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান ‘অবশ্যই’ বললেও এ ব্যাপারে বিপিএলের ‘বাইলজ’ বা ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে চুক্তিতে আসলে কী আছে, সেটা কেউ বলতে পারছেন না। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের প্রধান আফজালুর রহমান সিনহা বললেন, পুরো বিষয়টাই বোর্ড ভেবে দেখবে, ‘এ ব্যাপারে আমি একা বলতে পারব না। যেটা আইনের মধ্যে আছে সেটাই হবে। সবার সিদ্ধান্ত নিয়েই হবে। তবে বোর্ড সভাপতি বলেছেন, ফিক্সিংয়ের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স দেখাবেন।’

আইনে কী আছে, তা এড়িয়ে গেলেন বিসিবির ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরীও, ‘ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে চুক্তিতে কী আছে সেটা প্রকাশ করা ঠিক হবে না। তদন্ত শেষ হলে বলা যাবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আকসুর সুপারিশের ভিত্তিতে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ অবশ্য যেকোনো চুক্তিতেই এক পক্ষ চুক্তি ভঙ্গের মতো কাজ করলে অপর পক্ষ চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সেটা এখানেও প্রযোজ্য হতে পারে বলে জানালেন নিজামউদ্দিন চৌধুরী। তবে ক্রিকেটকে কলুষিত করার অপরাধ প্রমাণিত হলে শুধু চুক্তি বাতিলই যথেষ্ট শাস্তি কিনা, সে প্রশ্ন আছে।

শাস্তি তো পরে, যত দূর জানা গেছে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের কর্ণধার সেলিম চৌধুরীকে এখনো জিজ্ঞাসাবাদেরই সুযোগ পাননি আকসু কর্মকর্তারা। আকসুর সর্বশেষ ঢাকা সফরের আগেই বিদেশে চলে গেছেন তিনি, ফেরেননি কাল পর্যন্তও। তাঁর ছেলে ও ফ্র্যাঞ্চাইজির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিহাব চৌধুরীর ভাষ্য অনুযায়ী বেলজিয়াম সফররত সেলিম চৌধুরী দেশে ফিরতে পারেন আজকালের মধ্যে, ‘আব্বু এখন বেলজিয়ামে। আমার জানামতে আকসুর সঙ্গে তাঁর কথা হয়নি। তবে তাঁরা আমার সঙ্গে কথা বলেছেন।’

ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার অভিযোগ শুরু থেকেই অস্বীকার করে আসছে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস মালিকপক্ষ। এ অপরাধের সম্ভাব্য শাস্তি কী হতে পারে, সেটা নিয়েও নাকি ভাবিত নন শিহাব, ‘কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজির বিরুদ্ধে ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হলে কি শাস্তি হতে পারে, সেটা আমার জানা নেই। চুক্তিতে কী আছে তা-ও জানি না। যতক্ষণ না আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত এটা দেখার প্রয়োজন মনে করছি না।’