ওয়াসিম আকরাম ছাড়া আর কারা ছিলেন ওয়ার্নের শতাব্দীসেরা পাঁচে?

শেন ওয়ার্ন ও ওয়াসিম আকরাম, একসময় দুজন ব্যাটসম্যানদের মনে কাঁপন ধরিয়ে দিতেন ম্যাচের পর ম্যাচছবি: টুইটার

ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা লেগ স্পিনার একজন। আরেকজনকে তর্ক সাপেক্ষে ইতিহাসের সেরা পেসার বলা যেতেই পারে।

বলা হচ্ছে শেন ওয়ার্ন আর ওয়াসিম আকরামের কথা। একসময় দুজন ব্যাটসম্যানদের মনে কাঁপন ধরিয়ে দিতেন ম্যাচের পর ম্যাচ। একজন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে, একজন পাকিস্তানের। মাঠে দুজন প্রবল প্রতিপক্ষ ছিলেন, বিশ্বকাপের ফাইনালেও দেখা হয়েছিল দুজনের। তবে মাঠের ‘শত্রুতা’ দুজনের পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধে দাগ ফেলতে পারেনি। নিজের আত্মজীবনী ‘নো স্পিন’-এ ওয়াসিমের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন ওয়ার্ন।

৫২ বছর বয়সে মারা গেছেন শেন ওয়ার্ন
ছবি: রয়টার্স

একবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে উইজডেনের শতাব্দীসেরা পাঁচ ক্রিকেটারের তালিকায় স্থান হয়েছিল ওয়ার্নের। সঙ্গে ছিলেন স্যার ডন ব্র্যাডম্যান, স্যার ভিভ রিচার্ডস, স্যার জ্যাক হবস ও স্যার গ্যারি সোবার্স। অসাধারণ এই স্বীকৃতি পাওয়ার পর ওয়ার্নের মনে হয়েছিল, তাঁকে যদি সেরা পাঁচ ক্রিকেটার নির্বাচন করার দায়িত্ব দেওয়া হতো—কাকে কাকে রাখতেন? এ প্রসঙ্গেই ওয়াসিম আকরামকে টেনেছিলেন ওয়ার্ন, ‘ব্র্যাডম্যান তো থাকতেনই। আমার সবচেয়ে প্রিয় খেলোয়াড় ভিভ রিচার্ডসও থাকতেন। আমার তালিকায় ডেনিস লিলিও থাকতেন। পরদিন পুরো তালিকাটা হাতে পাওয়ার পর দেখলাম, ভোটাভুটিতে লিলি ষষ্ঠ। অন্যদের মধ্যে শচীন টেন্ডুলকার, লারা ও ওয়াসিম আকরাম থাকত।’

ওয়াসিমকে কেন নিতেন, সে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন নিজের আত্মজীবনীতে, ‘আমি যেসব বোলারের মুখোমুখি হয়েছি, তাদের মধ্যে তার বলে গতি ও অসাধারণ দক্ষতার সমন্বয় ঘটেছিল। ওয়াসিম মাঠে থাকলে ম্যাচে প্রাণের সঞ্চার হতো। অসাধারণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই খেলোয়াড় নতুন-পুরোনো দুই রকম বলে তো বটেই, ব্যাট হাতেও ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার সামর্থ্য রাখত। আমাকে ভোট দিতে বলা হলে আমি ব্র্যাডম্যান, সোবার্স, লিলি, ভিভ রিচার্ডস আর ওয়াসিমকেই ভোট দিতাম।’

নিজের শতাব্দীসেরা ক্রিকেটারের তালিকায় ওয়াসিমের সঙ্গে শচীন টেন্ডুলকার, ব্রায়ান লারাকেও রেখেছিলেন ওয়ার্ন
ফেসবুক

ওয়াসিম আকরাম নিজেও ওয়ার্নকে নিজের অনেক কাছের বন্ধু বলেই মনে করতেন। প্রিয় বন্ধুর মৃত্যুতে আর দশজনের মতো ওয়াসিমের মনেও ঝড় বয়ে যাচ্ছে। তাঁর শোকবার্তাতেও তাই অবিশ্বাসের ছাপ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওয়াসিম লিখেছেন, ‘আমার বন্ধু ওয়ার্নির হঠাৎ মৃত্যুসংবাদ শুনে আমি প্রচণ্ড ধাক্কা খেয়েছি, অনেক কষ্ট পেয়েছি। আমাদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ হতো, অনেক পরোপকারী ছিল ও। কিংবদন্তি বোলার হওয়ার পাশাপাশি ও অসাধারণ বিনোদনদায়ী একজন ক্রিকেটার ছিল। ওর পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি সহমর্মিতা জানাই। শান্তিতে থেকো, বন্ধু!’

ওয়ার্নের মৃত্যুতে ক্রিকেট–বিশ্বই যেমন শোকাহত, ওয়াসিম আকরামের কষ্টটা সেখানে কতটা বেশি, তা তো অনুমান করাই যায়।