বাবার নাম ভিভিয়ান রিচার্ডস

>ক্রিকেটাররা আগে নায়িকাদের প্রেমে পড়েন, না কি নায়িকারা আগে ক্রিকেটারদের, এটা গবেষনার বিষয় হতে পারে। গবেষনার ফল যা-ই হোক, এই দুইয়ের মধ্যে যে একটা অমোঘ আকর্ষণ কাজ করে, তাতে সন্দেহ নেই। যুগ যুগ ধরে ক্রিকেটার আর নায়িকাদের সফল-ব্যর্থ অজস্র প্রেমই এর সাক্ষী। ২২ গজের সঙ্গে রুপালি পর্দার এই প্রেমের গল্প নিয়েই নতুন ধারাবাহিকের আজ প্রথম পর্ব-
ভিভ রিচার্ডস ও নীনা গুপ্তা। ফাইল ছবি
ভিভ রিচার্ডস ও নীনা গুপ্তা। ফাইল ছবি

১৯৮৮ সালের নভেম্বরে মুম্বাইয়ের এক হাসপাতালে কন্যা সন্তানের জন্ম দিলেন ভারতীয় এক অভিনেত্রী। ঘটনাটা ঘটল বেশ গোপনে, কারণ ত্রিশ ছুঁই ছুঁই সেই অভিনেত্রী তখনো অবিবাহিতা।


কিন্তু চাইলেও কি সব গোপন রাখা যায়! জন্ম নিবন্ধনের জন্য মায়ের নামের সঙ্গে যে বাবার নামটাও লাগবে! মাসাবা গুপ্তা নামে সেই কন্যার মায়ের কাছে জানতে চাওয়া হলো বাবার নামের ঘরে কী লেখা হবে? আত্মবিশ্বাসী কন্ঠে নীনা গুপ্তা বললেন, 'আইজ্যাক ভিভিয়ান আলেকসজান্ডার রিচার্ডস।'


এরপর তো আর ঘটনা গোপন থাকে না। খবর চলে গেল সাত সমুদ্র তেরো নদী পেরিয়ে অ্যান্টিগায়, বাবার প্রতিক্রিয়া জানতে হবে তো! খুব স্পষ্ট করে ভিভ রিচার্ডস বলে দিলেন, তিনি সবটাই জানেন, এটা তাঁরই কন্যা।

অবশ্য এর অনেক বছর আগে থেকেই ভিভ রিচার্ডস-নীনা গুপ্তার প্রেম নিয়ে ক্রিকেট ও বলিউড পাড়া থেকে শুরু করে সংবাদমাধ্যমে নানা মুখরোচক গল্প শোনা যাচ্ছিল। সম্ভবত আশির দশকের শুরুর দিকে কোনো এক ভারত সফরে আসা ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের সবচেয়ে আকর্ষনীয় পুরুষটির প্রেমে পড়েছিলেন উঠতি ভারতীয় অভিনেত্রী নীনা। ভিভ তখন বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক। তাতে কি, প্রেম কবে এসব বাধা মেনেছে! তবে নীনার সঙ্গে তাঁর জড়িয়ে পড়ার আরও একটা কারণ হতে পারে, ওই সময় স্ত্রী মিরিয়ামের সঙ্গে বিচ্ছেদ চলছিল ভিভের। দুজন আলাদা থাকেন।

ভিভ রিচার্ডস, নীনা গুপ্তা ও মাসাবা। ফাইল ছবি
ভিভ রিচার্ডস, নীনা গুপ্তা ও মাসাবা। ফাইল ছবি

ওই সময়টায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের এক ভারত সফরে হঠাৎ করে দুজন খবরের শিরোনাম। কী ব্যাপার? কলকাতা ক্লাবে ড্রেস কোড না থাকায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি ভিভকে, সঙ্গী ছিলেন নীনা গুপ্তা। বোঝা যাচ্ছিল একসঙ্গে বেশ সময় কাটাচ্ছেন দুজন। তবে সেটা যে এতদূর গড়িয়েছে, মাসাবার জন্মের আগ পর্যন্ত বোঝা যায়নি।


২২ গজের ভিভের চেয়ে নীনার সাহস কম ছিল না খুব একটা। 'আনওয়েড মাদার' হয়েই মাসাবাকে বড় করেছেন, যদিও ভিভ রিচার্ডস ঠিক বাবার দায়িত্ব ওইভাবে পালন করতে পারেননি। তবে মাসাবা নিজেই বলেছেন, ছোটবেলায় মাঝে মাঝে যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজে বাবার কাছে বেড়াতে যেতেন, সেগুলো তার জীবনের সেরা আনন্দময় সময়।


প্রেমটা টেকেনি, ভিভ রিচার্ডস তাঁর স্ত্রীর কাছে ফিরেছেন। নীনাও এর পরে নানান জনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে অবশেষে ২০০৮ সালে বিয়ে করেন দিল্লির এক ব্যবসায়ীকে। তবে ২২ গজ আর রূপালি পর্দার স্মরনীয় প্রেমকাহিনী হিসেবে ভিভ-নীনার গল্প রয়ে গেছে অমর হয়ে।