বাসের সিট পছন্দ হয়নি দেখে...

রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে জোড়া গোল আছে ডেনিসের।ছবি : টুইটার

কোথাও যাত্রা করার সময় বাসে চাপলে লোকদের বিভিন্ন বায়নাক্কা থাকে। কারও জানালার পাশের সিটটা লাগে, কারও আবার সামনের সিটে পা মেলে দেওয়ার একটু বাড়তি জায়গা না পেলে হয় না। কেউ আবার পেছনের সিটে বসতেই পারেন না। কারও আবার ড্রাইভারের পাশের ইঞ্জিনে বসে পথ চলতে বেশ লাগে। কেউ কেউ আবার ফ্যানের নিচে ছাড়া বসতেই চান না। পছন্দের সিটটা না পেলে মুখ গোমড়া হয়ে যায় নিমেষে। যাত্রাটা যেন ঠিক ‘শুভ’ হয় না তাঁদের ক্ষেত্রে!

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, ইউরোপে খেলা ফুটবল তারকারাও দিন শেষে আসলে আর দশটা অমন মানুষের মতো মানুষ। তাঁদেরও বাসে চাপার সময় পছন্দের সিট দরকার। তাঁরাও চান পছন্দের সিটে বসে ফুরফুরে মেজাজে যাত্রা করতে। আর পছন্দের সিটটি না পেলে তাঁদের মেজাজও তিরিক্ষি হয়ে যায়। তবে পছন্দের সিট পাননি দেখে রেগেমেগে বাস থেকে নেমে গিয়ে খেলতেই যাননি, এমনটা এর আগে কখনো হয়েছে বলে মনে পড়ে না। ঠিক এই কাজটাই করেছেন বেলজিয়ামের ক্লাব ব্রুগার নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার ইমানুয়েল ডেনিস।

আর্সেনাল, নাপোলি, ইন্টার মিলান, লিডস ইউনাইটেডের মতো ক্লাবগুলো ডেনিসকে চেয়েছিল বলে খবর বেরিয়েছিল।
ছবি : টুইটার

ক্লাব ব্রুগা গত রাতে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে খেলার জন্য জার্মানিতে গিয়েছিল। ব্রুগা বনাম ডর্টমুন্ড, নিরপেক্ষ ফুটবল–ভক্তদের কাছে ম্যাচটা তেমন আলোড়ন সৃষ্টি করবে না, জানাই ছিল। তা–ও হালকা আগ্রহ ছিল ডর্টমুন্ডের হরলান্ড না ব্রুগার ডেনিস, কে বেশি আলো ছড়াতে পারেন, সেটা নিয়ে। হরলান্ডকে নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই, কিন্তু ব্রুগার ২৩ বছর বয়সী ডেনিস বেশ নাম কামাচ্ছেন এক মৌসুম ধরে। এমনকি গত মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদের মাঠে গিয়ে দুটি গোল করে এসেছিলেন এই ডেনিস। মৌসুমের শুরুতে আর্সেনাল, নাপোলির মতো ক্লাবগুলো তাঁকে চাইছে, এমন খবরও বেরিয়েছিল। সেই ডেনিস আর হরলান্ডের লড়াইয়ে কে জেতেন, এ নিয়ে কারও আগ্রহ থেকে থাকলে তাতে জল ঢেলে দিয়েছেন ডেনিস নিজেই।

হরলান্ডের নৈপুণ্যে জিতেছে ডর্টমুন্ড।
ছবি : রয়টার্স

কিন্তু কেন? ডর্টমুন্ডের মাটিতে খেলার জন্য নিজেদের ক্লাব বাসে করেই জার্মানি গিয়েছেন ব্রুগার খেলোয়াড়েরা। বাসে উঠে ডেনিস দেখেছেন, তাঁর পছন্দের সিটটি চলে গেছে অন্য আরেকজনের দখলে। ব্যস, আর যায় কোথায়! রেগেমেগে বাস থেকে নেমে গেছেন এই নাইজেরিয়ান। পরে আর সতীর্থদের সঙ্গে ডর্টমুন্ডেই যাননি। ব্রুগাও মাঠে নেমেছে তাদের সবচেয়ে বড় শক্তিকে ছাড়াই। যদিও ডেনিসের এই কাণ্ড নিয়ে ব্রুগা বা ব্রুগার ম্যানেজার, কেউই আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেননি। ব্রুগার ম্যানেজার ফিলিপ ক্লেমেন্ত শুধু জানিয়েছেন, শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে দলের সঙ্গে আনা হয়নি ডেনিসকে, যে কারণে ডেনিসকে জরিমানাও করা হবে সামনে। কিন্তু সে শৃঙ্খলাভঙ্গটা কেমন, সেটা জানিয়েছে ডাচ পত্রিকা হেট লাটস্টে নিউস। তারাই গুমর ফাঁস করে দিয়েছে ব্রুগার, জানিয়েছে, পছন্দের সিট না পাওয়ার কারণেই ডেনিসের অনুপস্থিতি।

পরে হরলান্ড ঠিকই আলো ছড়িয়েছেন এই ম্যাচে। করেছেন জোড়া গোল, ডর্টমুন্ডও জিতেছে ৩-০ গোলে। ঘরে বসে ম্যাচ দেখতে দেখতে ডেনিসের আফসোস হয়েছে কি না, কে জানে!