‘বায়ার্নে আমার গল্প শেষ’—ঘোষণা লেভানডফস্কির

বায়ার্ন ছাড়তে চান লেভানডফস্কিছবি: রয়টার্স

‘শেষ।’

ঘোষণাটা রবার্ট লেভানডফস্কির। বায়ার্ন মিউনিখ ছাড়ি ছাড়ি করছিলেন মৌসুম মাঠে থাকতেই। আজ নিজের মুখেই কথাটা বলে ফেললেন পোলিশ স্ট্রাইকার, বায়ার্নের সঙ্গে পথচলার গল্পটা শেষ। দলবদল করাই সেরা সমাধান মনে করেন লেভা।

২০১৪ সালে বায়ার্নে যোগ দেওয়ার পর এই আট মৌসুমে নিজেকে বিশ্বের‍ অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন পোলিশ তারকা। মৌসুম শেষের আগেই গুঞ্জন শুরু হয়, লেভা বায়ার্ন ছাড়তে চান। তাঁর কাছে প্রস্তাব আসে বার্সেলোনার পক্ষ থেকেও। লেভাকে কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করে কাতালান ক্লাবটি।

বায়ার্নের সঙ্গে বর্তমান চুক্তির আরও এক বছর বাকি আছে লেভার। বার্সা তাঁকে ৩ কোটি ২০ লাখ ইউরোয় কেনার প্রস্তাব দিয়েছে।

চুক্তির মেয়াদ আরও এক বছর বাকি থাকতেও লেভা কেন বায়ার্ন ছাড়তে চান? এই প্রশ্নের উত্তর মিলবে তাঁর এজেন্ট পিনি জাহাভির কথায়। চলতি মাসের শুরুতে জাহাভি বায়ার্নকে সতর্ক করে বলেছেন, ‘হ্যাঁ, আরও এক বছর তারা চাইলে লেভাকে রাখতে পারবে। সত্যি বলতে তার চুক্তির মেয়াদ ২০২৩ সাল পর্যন্ত। কিন্তু আমি তাদের সেটি করার কথা বলব না।’

৩৩ বছর বয়সী লেভা যে শুধু টাকার জন্য বায়ার্ন ছাড়ছেন না, সে কথাও বুঝিয়ে দেন জাহাভি, ‘বায়ার্নের পরিচালনায় যাঁরা আছেন, তাঁদের কাছে মাসের পর মাস অসম্মানিত হয়েছে সে। এটাই সত্য। খেলোয়াড় লেভানডফস্কিকে বায়ার্ন হারায়নি, মানুষ লেভানডফস্কিকে হারিয়েছে।’

বায়ার্নের প্রধান নির্বাহী অলিভার কান ও ক্রীড়া পরিচালক হাসান সালিহামিদিচিচ এর আগে স্পস্ট করে বলেছেন, ২০২৩ সালের আগে লেভাকে ছাড়বে না জার্মান ক্লাবটি।

কিন্তু ওয়ার শ–তে সংবাদমাধ্যমকে পোলিশ তারকা আজ সম্পর্ক চুকিয়ে দেওয়ার কথাই বললেন, ‘আজ এটা নিশ্চিত হয়ে গেল যে বায়ার্নের সঙ্গে আমার গল্পটা শেষ হয়েছে। গত কয়েক মাসে যা যা ঘটেছে, তাতে (বায়ার্নের সঙ্গে) আর ভবিষ্যতে পথচলার কথা ভাবছি না। দলবদলই সেরা সমাধান। আমি বিশ্বাস করি, বায়ার্ন আমাকে শুধু আটকে রাখার জন্য ধরে রাখবে না।’

পোলিশ সংবাদমাধ্যম ‘ইলেভেন স্পোর্টস পিএল’–এর সঙ্গে আলাপচারিতায় ভবিষ্যৎ গন্তব্য নিয়েও ইঙ্গিত দিয়েছেন আগস্টে চৌত্রিশে পা রাখতে যাওয়া লেভা। স্পেনে জীবন কতটা উপভোগ করবেন, এ প্রশ্নের উত্তরে লেভা বলেছেন, ‘আমার মনে হয় শুধু ছুটি কাটাতে নয়, জায়গাটা এমনিতেই ভালো হবে।’ মায়োর্কায় নিজের একটি বাড়ি আছে, সে কথাও জানিয়েছেন লেভানডফস্কি।

তবে লেভার প্রকাশ্যে এমন সোজাসাপ্টা কথা পছন্দ হয়নি জার্মানির সাবেক গোলকিপার ও বায়ার্নের প্রধান নির্বাহী কানের, ‘লেভা কেন এই পথ বেছে নিল, তা বলতে পারব না। প্রকাশ্যে এমন মন্তব্য কারও উপকার করবে না। রবার্ট এখানে টানা দুবার (ফিফা বেস্ট) বর্ষসেরা হয়েছে। বায়ার্নে তার কী অর্জন, সেটা বোঝা উচিত।’

লেভার বায়ার্ন ছাড়তে চাওয়ায় ঘোষণায় বায়ার্নের সমস্যা হওয়ার কথা নয়।লিভারপুলের তারকা স্ট্রাইকার সাদিও মানেকে কেনার চেষ্টা করছে বায়ার্ন। বোঝাই যাচ্ছে, লেভার শূন্যতা পূরণ করতেই এই চেষ্টা। তবে লেভাকে বায়ার্ন সহজে ছাড়বে কি না, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

বায়ার্নের জেনারেল ম্যানেজার কার্ল হেইঞ্জ রুমেনিগে বলেছেন, ‘বার্সা তাকে কী এমন প্রস্তাব দিয়েছে, যা বায়ার্ন পারবে না? তার সঙ্গে আমাদের কথা চালিয়ে যেতে হবে। তাকে দরকার ক্লাবের। এই ৩৪ বছর বয়সেও সে নিশ্চিত একজন গোলস্কোরার, ইউরোপে অন্য কোথাও যা পাওয়া যাবে না।’