ভুল থেকে শিখছে বিসিবি
প্রথমে তিন দলের বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপ। এরপর পাঁচ দলের বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ। বিসিবির জন্য দুটি টুর্নামেন্টই ছিল করোনাকালে ঘরের মাঠে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরানোর পরীক্ষা। জৈব সুরক্ষাবলয়ে ক্রিকেটটা কেমন হবে, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটা কতটা কার্যকর, এসব শঙ্কা তো ছিলই। শঙ্কার কিছুটা সত্যিও হয়েছে। মাঠকর্মীদের অনেককেই দেখা গেছে বলয় ভেঙে বাইরে যাচ্ছে। অনেকে বাইরে থেকে ভেতরে আসছে। তবে বড় কোনো অঘটন ঘটেনি।
এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বাংলাদেশে আসার অপেক্ষা। জৈব সুরক্ষাবলয় রক্ষা করে ক্রিকেট আয়োজনে আগের দুই টুর্নামেন্টের ভুলগুলো এবার আর করার সুযোগ নেই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বলে কথা! জাতীয় দলের একজন ক্রিকেটার সেদিন মজা করে বলেছিলেন, ‘আমাদের বলয় তো ফাঁকা বলয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল এলে আরও কড়াকড়ি রাখতে হবে। না হলে ওরা চলেও যেতে পারে।’
আজ বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরীও ইঙ্গিত দিলেন আরও বেশি কড়াকড়ির, ‘আমরা সব সময় ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করি। সারা দুনিয়াই প্রথমবারের মতো এভাবে ক্রিকেট আয়োজন করছে। প্রথমে আমরা তিনটি দল নিয়ে টুর্নামেন্ট আয়োজন করি। তখন কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল। কিছু ব্যাপারে উন্নতি আনার দরকার ছিল। সেগুলো পরের টুর্নামেন্টে করেছি। এখন আশা করছি সফলভাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আয়োজন করতে পারব।’
তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্ট খেলতে আগামী ১০ জানুয়ারি বাংলাদেশে পা রাখার কথা ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের। বাংলাদেশে এসে তাদের সাত দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। এই সাত দিনে তিনবার করোনা পরীক্ষা হবে ক্যারিবীয় ক্রিকেটারদের। ঢাকায় এসেই একবার, এরপর তিন দিন ও সাত দিন পর আরও দুবার। প্রথম তিন দিন ক্রিকেটাররা হোটেল রুমে বন্দী থাকবেন। এরপর করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ হলে নিজেদের মধ্যে অনুশীলনের সুযোগ পাবেন। সাত দিন পর অন্যদের সংস্পর্শে যেতে পারবেন খেলোয়াড়েরা। বাংলাদেশের নেট বোলারদের নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অনুশীলন তখনই শুরু হবে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজকে সামনে রেখে বাংলাদেশ দলের জৈব সুরক্ষাবলয়ে প্রবেশ করার কথা জানুয়ারিতে দ্বিতীয় সপ্তাহে। ওয়ানডে ও টেস্টের জন্য দল ঘোষণা হবে জানুয়ারির শুরুতে। নির্বাচকদের দল সাজানোর কাজও প্রায় শেষ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের কারণেই আবুধাবি টি-টেন লিগে দল পাওয়া ক্রিকেটারদের অনাপত্তিপত্র পাওয়া নিয়ে শঙ্কা আছে। ‘যাদেরকে ডাকা (টি–টেন লিগে) হয়েছে, তাদের অনেকেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের সময় যে খেলাগুলো হবে, বিশেষ করে প্রথমে যে খেলা আছে, তাতে থাকবে। সে ক্ষেত্রে সুযোগটা (টি–টেন লিগে খেলার) আমার কাছে খুবই কম মনে হচ্ছে’— বলেছেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী।
একবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের দরজা খুলে যাওয়া মানে সেই পথে সামনেও এগোবে বিসিবি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের আলোচনার মধ্যেই তাই এসে যাচ্ছে নিউজিল্যান্ড আর শ্রীলঙ্কা সফরের প্রসঙ্গও। মার্চে বাংলাদেশ দলের নিউজিল্যান্ড সফরে যাওয়ার কথা। সেখানে তিনটি ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ দল। এপ্রিলে হতে পারে গত অক্টোবরে স্থগিত হয়ে যাওয়া শ্রীলঙ্কা সফর। এ নিয়ে কাজ করছে দুই দেশের বোর্ড। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তিনটি টেস্ট খেলার কথা ছিল বাংলাদেশ–শ্রীলঙ্কার। তিন টেস্ট না হলেও এপ্রিলে অন্তত দুটি টেস্ট খেলার লক্ষ্য বিসিবির। নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বলছিলেন, ‘এই সময়টা (এপ্রিল) দুই দলের জন্যই ফাঁকা আছে। সেভাবেই আমরা কাজ করছি।’