মুশফিকের রিভার্স সুইপে সাফাই মুমিনুলের
‘রিভার্স সুইপ আমার পছন্দের শটগুলোর একটি। আজ এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। যদি হয়, তাহলে আবার খেলব। পরের ম্যাচে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে একটা না, আরও চার-পাঁচটাও খেলতে পারব।’
গত বছর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে ৮৭ বলে ৮৪ রান করে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ তুলেছিলেন মুশফিকুর রহিম। পরের ম্যাচে ১২৭ বলে ১২৫ রান করে হন ম্যাচসেরা, এরপর সংবাদ সম্মেলনে এসে ওপরের কথাগুলো বলেন বাংলাদেশের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টের তৃতীয় দিন সাইমন হারমারকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে আবারও এ শটকে আলোচনায় এনেছেন মুশফিক। মধ্যাহ্ন বিরতির মিনিট পাঁচেক আগে যে লেংথের বলে রিভার্স সুইপ করেছেন মুশফিক, প্রশ্ন উঠছে সেসব নিয়েই। তবে বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক বলছেন, এভাবে রিভার্স সুইপ খেলার ক্ষেত্রেও তাঁর সমর্থন পাবেন মুশফিক। ইনিংস বড় করতে না পারার হতাশায় পুড়েছেন মুশফিক, মুমিনুল জানিয়েছেন এমনটিই।
গতকাল সংবাদ সম্মেলনে এসে মুশফিকের ওই শট নিয়ে নিজের হতাশা প্রকাশ্যেই জানিয়েছিলেন টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে ৮০ রানে অলআউট হয়ে ৩৩২ রানের বড় ব্যবধানে দ্বিতীয় টেস্ট হারার পর মুশফিকের পক্ষেই কথা বললেন মুমিনুল, ‘মুশফিক ভাইয়ের আউট নিয়ে…আমি জানি না আপনারা হয়তো এটা নিয়ে খুব বেশি কথা বলছেন। আপনারা (অবশ্য) বলতেই পারেন। টেস্ট, ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি—যেখানেই হোক, রিভার্স সুইপ তো ক্রিকেটের একটা শট, তা–ই না? বাইরের কিছু না। এই শট খেলতেই পারেন, ওনার পরিকল্পনায় থাকলে তো খেলবেনই। এমন না যে এটা খেলে এর আগে রান করেনি। বা সফল হননি। আমি ওনাকে সমর্থন করি এটা নিয়ে।’
স্পিনের বিপক্ষে এ শট কার্যকর, দক্ষিণ আফ্রিকায় সিরিজ কাভার করতে যাওয়া সাংবাদিকদের মুমিনুল মনে করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন সেটি, ‘আপনারা আমার আগে থেকে খেলা দেখেছেন অনেক। শ্রীলঙ্কা থেকে শুরু করে, এসব উইকেটে কিন্তু বল ঘুরলে সুইপ রিভার্স সুইপ ছাড়া অপশনটা কম থাকে। উনি রিভার্স সুইপে অনেক সফল। ওইটা খেলে বোলারের হয়তো (পরিকল্পনা) বদলাতে পারবে (মনে করেছিলেন)।’
ড্রেসিংরুমে ফিরে মুশফিকের মনোভাবও ব্যাখ্যা করেছেন মুমিনুল, ‘ফিফটি করার পর আউট হওয়ার পর, প্লেয়ার হিসেবেই হতাশ লাগছিল তার। “গিলটি ফিল” করছিল। কারণ অনেক দিন পর রান করেছেন, বড় খেলোয়াড়েরা ইনিংস বড় করে। এ কারণেই “গিলটি ফিল” করেছে। ইনিংস বড় করতে পারলে তো পরিস্থিতি ভিন্ন হতো।’
মুশফিকের এমন শট খেলার পর তাঁর জবাবদিহির জায়গা নিয়েও আছে প্রশ্ন। ড্রেসিংরুমে মুশফিককে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করার মতো পরিস্থিতি আছে কি না, এমন প্রশ্নের সরাসরি জবাবে দেননি মুমিনুল, ‘এটা কিন্তু ইয়া না, এটাতে সফল হয়েছেন উনি…আপনিও দেখেছেন, আমিও দেখেছি…’
এরপর মুশফিকের এ শট নিয়ে এভাবে কথা বলতেই অনুরোধ করেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘একসময় আমার সঙ্গেও ছিলেন, আপনাদের অনুরোধ করব—জিনিসটা যদি এভাবে (না দেখেন), বাংলাদেশ দলের জন্যই ভালো। জিনিসটা নিয়ে যদি অনেক বেশি জোর দেন আপনারা, বাংলাদেশ দলের জন্য খারাপ, দেশের জন্য খারাপ। উনি তো এই শটটা খেলে সফলও হন।’
মুশফিক ওই রিভার্স সুইপ খেলার আগে অবশ্য একটা খরা কাটিয়েছেন। এর আগে সর্বশেষ ১০টি টেস্ট ইনিংসে একটি অর্ধশতক ছিল তাঁর, প্রথম ইনিংসে পেয়েছেন আরেকটি। তবে মুমিনুল প্রথম ইনিংসে ৬ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ফিরেছেন ৫ রান করেই। এ নিয়ে টানা ৫ ইনিংস দুই অঙ্কই ছুঁতে পারলেন না এ বাঁহাতি।
মুমিনুল অবশ্য নিজের ফর্ম নিয়ে চিন্তা করছেন না এরপরও, ‘আপনি যদি জিনিসটা মনে করেন…দুই-এক ম্যাচ খারাপ খেলতেই পারেন, তার মানে এই না যে আমি আমার জায়গায় নাই। একটা ইনিংসে শুধু রান হয় নাই। খুব একটা উদ্বিগ্ন না। আমি জানি কীভাবে রান করতে হয়। আমি এর আগেও এমন ছিলাম, বড় রান করেছি এরপরও।’