যৌন নির্যাতন, ধর্ষণ, আত্মহত্যা—ফুটবলের কলঙ্কময় অধ্যায়ে সাবেক ফিফা সভাপতি ব্ল্যাটারের নাম

ফিফার সাবেক সভাপতি সেপ ব্লাটার ও হাইতি ফুটবল ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি ইভস জঁ-বার্তছবি: টুইটার

ফ্রান্সের ক্রীড়াঙ্গনে রোমাইন মলিনা বিশ্বস্ত নাম। স্পেনের আন্দালুসিয়ার নির্ভরযোগ্য এই অনুসন্ধানী সাংবাদিক বিবিসি, নিউইয়র্ক টাইমস, গার্ডিয়ান, সিএনএন, লে তেম্পসের হয়ে একাধিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন।

গত নভেম্বরে ফ্রেঞ্চ ও আফ্রিকান খেলোয়াড় ও ক্লাবগুলোর অনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে ভয়ংকর সব তথ্য দিয়েছেন। ফিফা কার্যালয়ে ধর্ষণের মতো তথ্যও উঠে এসেছিল তখন।

গত পরশু নতুন বোমা ফাটিয়েছেন মলিনা। হাইতির ফুটবলারদের ওপর যৌন নির্যাতনের খবর নতুন কিছু নয়। ফুটবলারদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগে সাবেক ফুটবল ফেডারেশন সভাপতি ইভস জঁ-বার্তকে আজীবন নিষিদ্ধ করেছে ফিফা। কিন্তু হাইতির ফুটবলে ঘটা অপরাধের মাত্রা কত তীব্র, সেটা মলিনার নতুন অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

জঁ-বার্তের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল সাবেক ফিফা সভাপতি সেপ ব্ল্যাটারের। জঁ-বার্ত নাকি উপঢৌকন হিসেবে নারীসঙ্গ উপহার দিয়েছিলেন ব্ল্যাটারকে।

প্রথম আলোর পাঠকদের জন্য মলিনার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো।

জঁ-বার্তের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল ব্লাটারের
ছবি: টুইটার

প্রায় দুই দশক ধরে হাইতি ফুটবল ফেডারেশনের শীর্ষ কর্মকর্তারা বিশাল এক যৌন নিপীড়নের নেটওয়ার্ক সৃষ্টি করেছিলেন। এর মধ্যে অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে ও ছেলেদের ধর্ষণ, গর্ভপাত, ব্ল্যাকমেল এবং মৃত্যুর হুমকি আছে। জসিমার-এর (ওয়েবসাইট) হাতে থাকা হাইতির আদালতের নথি অনুযায়ী অন্তত একজন ভুক্তভোগী আত্মহত্যাও করেছেন।

ভুক্তভোগীদের চোখে ফিফা গোল প্রজেক্টের অধীনের লা-কোয়া-দে-বুকে সেন্টার আসলে ‘পৃথিবীর বুকে জাহান্নাম।’ হাইতিতে রেফারিং কোর্স দেখতে যাওয়া কিংবা গোল প্রজেক্টের হালহকিকত জানতে যাওয়া ফিফার কর্মকর্তাদের সন্তুষ্টির জন্য খেলোয়াড়, রেফারি বা কর্মকর্তা উপহার দেওয়া হতো। এই ব্যবস্থার সুবিধা স্বয়ং সাবেক ফিফা সভাপতি সেপ ব্ল্যাটার নিয়েছেন।

হাইতি জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও খেলোয়াড় সমিতির প্রধান এরনেসো লরেন্সের ভাষায়, ‘আপনি হাইতিতে আসবেন, ফেডারেশনের পক্ষ থেকে আপনার হোটেলে একটা মেয়ে পাঠানো হবে। এভাবেই চলত। আমি ২০০৭ সাল থেকে সাবেক সভাপতি (জঁ-বার্ত) এবং তার প্রশাসনের বিপক্ষে লড়ে যাচ্ছিল। আমি সব ধরনের নির্যাতন নিয়ে কথা বলেছি, যৌন নির্যাতন নিয়েও।’

১৪ জন খেলোয়াড়কে যৌন নির্যাতন করেছেন, গার্ডিয়ানের এমন অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর ২০২০ সালের ১৪ নভেম্বর ৭৪ বছর বয়সী জঁ-বার্তকে আজীবন নিষিদ্ধ করেছে ফিফা। ভুক্তভোগীদের অধিকাংশই ছিলেন অপ্রাপ্তবয়স্ক।

ফিফার নৈতিকতা কমিটির চেয়ারপারসন ভাসিলিওস স্কোরিস বলেছিলেন, ‘জঁ-বার্তের আচরণ অমার্জনীয়, যেকোনো ফুটবল কর্মকর্তার জন্যই লজ্জাদায়ক। উনি বলতেন হাইতির ফুটবলের উন্নয়ন করছেন, বিশেষ করে মেয়েদের প্রতিযোগিতা ও দলগুলোর ক্ষেত্রে, জনাব জঁ-বার্ত করেছেন ঠিক উল্টো। নিজের অবস্থানের অপব্যবহার করে সবচেয়ে দুর্বল মানুষদের ওপর নিজের প্রভাব বিস্তার করেছেন, ক্যারিয়ার ধ্বংস করেছে এবং তরুণ প্রতিভাবান নারী খেলোয়াড়দের জীবন নষ্ট করেছেন।’

ফ্রেঞ্চ কর্মকর্তা ইভন অ্যাভরি হাইতি ফুটবলের দুরবস্থার সুবিধা নেন
ছবি: টুইটার

হাইতির ফুটবল ফেডারেশনের রেফারিং বিভাগের সাবেক প্রধান রজনিক গ্রান্টকেও আজীবন নিষিদ্ধ করেছে ফিফা। তাঁর অপরাধ ছিল, তাঁর অধীনে থাকা তরুণ রেফারিদের কনকাকাফ ও ফিফা কর্মকর্তাদের মনোরঞ্জনে বাধ্য করতেন। ফিফার রেফারি উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক রোনালদ গুতিয়েরেজ ছিলেন গ্রান্টের ব্যবস্থার সুবিধাভোগীদের একজন। এভাবে ফিফার কর্মকর্তাদের সন্তুষ্ট করে নিজের আর্থিক সুবিধা পাকাপোক্ত করাই ছিল গ্রান্টের উদ্দেশ্য। জঁ-বার্তের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ভিন্ন।

জঁ-বার্ত নিজেই যৌন নিপীড়ন করতেন। এক ভুক্তভোগী বলেছেন, ‘সে অন্য কারও কাছে মেয়েদের পাঠাত না। সে খুব ঈর্ষাপরায়ণ। আমাদের শুধু নিজের জন্য ও নিজের যৌন তৃপ্তির জন্য রেখে দিতে চাইত সে।’

শুধু একজনের জন্য ছাড় দিতে রাজি ছিলেন জঁ-বার্ত, তাঁর পুরোনো বন্ধু সেপ ব্ল্যাটার। ফেডারেশনের এক সাবেক বোর্ড সদস্য বলেছেন, ‘উনি ব্ল্যাটারকে খুব ভালোবাসতেন। তাঁকে কাছের বন্ধু ডাকতেন।’

১৯৯৮ সালে প্রথম ফিফা সভাপতি হন ব্ল্যাটার। ওদিকে জঁ-বার্ত হাইতির ফুটবলের প্রধান হন ২০০০ সালে। দুজনের মধ্যে সম্পর্ক খুব দ্রুত মধুর হয়ে উঠেছে। ফিফার গোল প্রজেক্টের প্রথম দিককার সুবিধাভোগীদের একটি হাইতি ফুটবল ফেডারেশন।

ফিফা গোল সেন্টার যা ‘র‍্যাঞ্চ’ (খামার) নামে পরিচিত
ছবি: টুইটার

হাইতির সাবেক প্রেসিডেন্ট মিশেল মার্টেলি নিজ থেকে জঁ-বার্তের বিরুদ্ধে প্রমাণ খোঁজার নির্দেশ দিয়েছিলেন, যাতে মামলা করা যায়। চাপের মুখে ফিফার সাহায্য চান জঁ-বার্ত। ফেডারেশনের ওপর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে, এমন অজুহাত তোলা হয়। ২০১৩ সালে ব্ল্যাটার নিজে হাইতিতে গিয়ে প্রেসিডেন্ট মার্টেলির সঙ্গে দেখা করেন। এবং ফেডারেশনকে সাহায্য করতে চাপ দেন ব্ল্যাটার।

তাঁর এক পরামর্শক বলেছেন, ‘মার্টেলি জানতেন, এরপর আর কিছু করা সম্ভব নয়। না হলে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অজুহাতে হাইতিকে নিষিদ্ধ করা হতো। সেটা সম্ভব ছিল না। এর ফলে তাঁর বিরুদ্ধে ও তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন হতো।’

সে সফরে ব্ল্যাটার ফিফা গোল সেন্টারেও গিয়েছিলেন, যা র‍্যাঞ্চ (খামার) নামে পরিচিত। ব্ল্যাটারের পরিদর্শনের আগেই সবাইকে শিখিয়ে পড়িয়ে নিয়েছিলেন জঁ-বার্ত। এক সাবেক নারী ফুটবলার বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে এটা ঘটেছিল। যখনই কোনো পরিদর্শক আসতেন, সভাপতি আমাদের ডেকে নিতেন। আমাদের একদম পরিষ্কার নির্দেশনা দেওয়া হতো যে কেউ কোনো প্রশ্ন করলে কী বলতে হবে। আমাদের বলতে হতো “দাদু” (জঁ-বার্তের ডাকনাম) আমাদের খুব ভালো রেখেছেন, আমাদের বাবার মতো এবং এই সেন্টারের জন্য আরও টাকা দরকার। টাকা আয়ের জন্য “দাদু” আমাদের ব্যবহার করতেন।’

অতিথি আগমন উপলক্ষে সেন্টার পরিষ্কার করা হতো, ময়লা লুকানো হতো এবং ভাঙা দেয়াল আড়াল করা হতো। এক সাবেক খেলোয়াড় বলেছেন, ‘আমি জানি না অর্থ কোথায় যেত, কারণ আমরা বলতে গেলে শুয়োরের খামারে থাকতাম। আমাদের স্যানিটারি তোয়ালেও ছিল না। আমি টয়লেট নিয়ে কিছু বলতে চাই না, কারণ অধিকাংশ সময় ওগুলোতে ময়লা থাকত। মাঝেমধ্যে আমরা এক বেলা খেয়ে থাকতাম। সেটাও খুব বাজে খাবার, অথচ পরিচালকেরা খুব ভালো খেতেন। কিন্তু যখন কনকাকাফ বা ফিফার কেউ এলেই, আমাদের খাবারদাবার ভালো হয়ে যেত এবং সবকিছু পরিষ্কার থাকত। বিশেষ করে যখন প্রেসিডেন্ট ব্ল্যাটার এসেছিলেন। আমাদের সবার জন্য বিশেষ এক মুহূর্ত ছিল, এবং “দাদু” খুব পরিষ্কার বলে দিয়েছিলেন আমাদের আচরণ কেমন হবে।’

জঁ-বার্তের সঙ্গে ব্লাটারের বিপক্ষেও অভিযোগ উঠেছে
ছবি: টুইটার

রাজধানীর পেতিও-ভিলের ওয়েসিস হোটেলে উঠেছিলেন। সেখানে কর্মকর্তা ও কিছু খেলোয়াড়ের সঙ্গে দেখা করেছেন। নতুন ফিফা তহবিলের নিশ্চয়তা মিলেছিল সেদিন। সবকিছুই ঠিকঠাক চলেছে। এবং সুইজারল্যান্ড থেকে আগত বন্ধুর জন্য একটা ‘উপহার’ প্রস্তুত রেখেছিলেন জঁ-বার্ত।

ফেডারেশনের এক উচ্চ কর্মকর্তার এখনো মনে পড়ে, ‘“দাদু” এক কর্মীকে ব্ল্যাটারের হোটেলে যেতে বলেছিলেন। তিনি সরাসরি তাঁর (ব্ল্যাটারের) বিছানায় যেতে বলেছেন। এটা একটা নির্দেশ ছিল, কিন্তু স্বামীর প্রতিক্রিয়া কী হবে, এটা ভেবে ইতস্তত করছিলেন ওই কর্মী। তাঁর নির্দেশ কীভাবে অপমান করে, সেটাই বুঝতে পারছিলেন না “দাদু”। পরে আরেক নারীকে বললে তিনি রাজি হন। তার অবশ্য আর কোনো উপায়ও ছিল না।’

ইভস জঁ-বার্ত এরপর ফেডারেশনের চিকিৎসা দলকে নির্দেশ দেন সে সময় ৭৭ বছর বয়সী ফিফা সভাপতির জন্য ব্লু পিল (যৌন শক্তিবর্ধক ওষুধ) জোগাড় করে দিতে। সেদিন ফেডারেশনের এক কর্মী ওয়েসিস হোটেলে সেপ ব্ল্যাটারের সঙ্গে রাত কাটিয়েছিলেন। সেই ব্লু পিল যিনি এনে দিয়েছিলেন, ‘তাঁর ভাষ্য, “দাদু” খুবই গর্বিত ছিল। ওই কর্মীকে পাশে রেখে তাঁর নাম ধরে সে গল্প সবার কাছে বলে বেড়িয়েছেন। বলেছেন, “প্রেসিডেন্ট ব্ল্যাটার হাইতিয়ান নারী ভালোবাসেন। তিনি হাইতিয়ান নারী ভালোবাসেন! আমি তাঁর জন্য একজন জোগাড় করে দিয়েছি।”’

র‌্যাঞ্চের ভেতরের একটি করিডোর
ফাইল ছবি: এএফপি

এ ব্যাপারে সেই নারী কর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন মলিনা। ওই কর্মী ব্ল্যাটারকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন না বলে জানিয়ে দেন। কিন্তু একটি ছবিতে তাঁদের দুজনকে দেখা যাচ্ছে, এটা প্রমাণ করে দেওয়ার পর তিনি স্বীকার করেন, ‘তাঁকে অনেক পছন্দ করি...একটা সম্মেলনে দেখা হয়েছিল, এখন মনে পড়েছে।’ জঁ-বার্ত তাঁকে কোনো ধরনের অনৈতিক নির্দেশ দিয়েছিলেন কি না, এমন প্রশ্নের মুখে বলেছেন, ‘জঁ-বার্ত অসাধারণ মানুষ। কখনো এমন কিছু করবেন না। কেন ওনার ব্যাপারে এসব বলছেন, আমি বুঝতে পারছি না। তিনি একজন সৎ মানুষ।’

এ ব্যাপারে তিনজন ভুক্তভোগী বলেছে, ‘এটাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই, কারণ জঁ-বার্তের অন্যতম সহযোগী ছিল সে।’

শুধু ব্ল্যাটার নন, ফিফার তদন্ত কর্মকর্তাও জঁ-বার্তের যৌন নিপীড়ন নেটওয়ার্কের অংশ হয়েছিলেন। ২০১১ সালে হাইতির ফুটবল সেন্টার ঠিকভাবে চলছে কি না, সেটা দেখতে পাঠানো হয়েছিল ইভন অ্যাভরিকে। এই ফ্রেঞ্চ কর্মকর্তা হাইতির ফুটবলের দুরবস্থার পূর্ণ সুবিধা নিয়েছেন। বয়সভিত্তিক দলে খেলা এক সাবেক ফুটবলার বলেছেন, ‘তিনি আমার বেশ কয়েকজন সতীর্থের সঙ্গে রাত কাটিয়েছেন। তিনি আমাদের সঙ্গে শয্যায় গেছেন! ফিফা একজনকে পাঠাল আমাদের খোঁজ নিতে আর সেই কিনা দাদুর দেওয়া খেলোয়াড়দের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক গড়ে তুললেন!’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কোচ বলেছেন, ‘চারপাশে যা বলছে, সেসব ব্যাপারে যেন চোখ বুজে থাকেন, সেটা নিশ্চিত করার উপায় ছিল এটি। বাকি সবার মতো, আমিও প্রকাশ্যে এসব কথা বলতে পারব না। কারণ, এই দেশ খুব ভয়ংকর এবং এই মানুষগুলো খুব ভয়ংকর।’

এ ব্যাপারে ফিফার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন মলিনা। ব্ল্যাটার বা ইভন অ্যাভরির ব্যাপারে তদন্ত করা হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সরাসরি কোনো উত্তর দেয়নি ফিফা, ‘প্রথমত ফিফা যেকোনো অভিযোগকে খুব গুরুত্বসহকারে নেয়। ফুটবলসংক্রান্ত বিষয়ে অপব্যবহার বা অনৈতিক আচরণ সম্পর্কে কিছু জানলেন, আমাদের হুইসিল-ব্লোয়িং হটলাইনের মাধ্যমে দ্রুত জানাতে উৎসাহিত করা হয়।’

২০২০ সালে জঁ-বার্তের বিচার চলাকালীন তাঁর বিরুদ্ধে আদালতের বাইরে রাস্তায় নেমেছিলেন অনেকে
ছবি: টুইটার

‘দয়া করে মনে রাখবেন, আমাদের নীতি অনুযায়ী স্বাধীন নৈতিক কমিটি মামলাগুলোর তদন্ত করছে কি না, সে বিষয়ে মন্তব্য করা যায় না। নৈতিকতা কমিটি যেকোনো তথ্য জানাতে চাইলে তা তাদের বিবেচনার ভিত্তিতে জানানো হবে।’

‘আমরা পুনরায় বলতে চাই, ফুটবলে অসদাচরণ করার ক্ষেত্রে ফিফার অবস্থান পরিষ্কার: ফুটবলে অসদাচরণ এবং অপব্যবহারের জন্য যে কেউ দোষী সাব্যস্ত হবে, তাকে বিচারের আওতায় আনা হবে, শাস্তি দেওয়া হবে এবং খেলা থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে।’

প্রতিবেদন প্রকাশের আগে ব্ল্যাটার ও অ্যাভরির সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তাঁরা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। প্রকাশের পর সেপ ব্ল্যাটার এই ব্যাপারে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। এক মুখপাত্রের মাধ্যমে মামলা করার হুমকি দিয়েছেন ব্ল্যাটার, ‘ফরাসি সাংবাদিক রোমাইন মলিনার জসিমারফুটবল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সেপ ব্ল্যাটার, সাবেক ফিফা সভাপতি ২০১৩ সালে হাইতিয়ান ফুটবল ফেডারেশনে আনুষ্ঠানিক সফরের সময় ফেডারেশন সভাপতি ইভস জঁ-বার্তের কাছ থেকে “যৌন উপহার পেয়েছিলেন” বলে লেখা হয়েছে।’

‘সেপ ব্ল্যাটার দৃঢ়ভাবে এই অভিযোগগুলো প্রত্যাখ্যান করেছেন: “এই অভিযোগগুলো ভুল। আমি অনুমান করছি, এটি আমার বিরোধীদের একটি সমন্বিত আক্রমণ। ঘটনাটি হলো: আমি ২০১৩ সালে হাইতিতে ছিলাম, এবং বরাবরের মতো আনুষ্ঠানিক সফরে, দেশটির প্রেসিডেন্ট মিশেল মার্টেলি আমাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। হাইতিয়ান ফেডারেশনের সভাপতি ইভস জঁ-বার্তও উপস্থিত ছিলেন।”’‘এই প্রতিবেদন ভিত্তিহীন, মানহানিকর। যেসব মিডিয়া এই অভিযোগগুলো ছড়ায়, তাদের অবশ্যই আইনি পরিণতির মুখোমুখি হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। আমার আইনজীবী লরেঞ্জ এরনি বলেছেন: “এই অভিযোগগুলো স্পষ্টভাবে অপমানজনক এবং মিস্টার ব্ল্যাটার এই অসত্যের বিস্তারের বিরুদ্ধে জোরালো আইনি পদক্ষেপ নিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।”’