রক্ষণেই বেশি মনোযোগ দিক ব্রাজিল

গোলাম সারোয়ার টিপু
গোলাম সারোয়ার টিপু

লুইস ফেলিপে স্কলারি ও জোয়াকিম লোর ফুটবল-মস্তিষ্ক ক্ষুরধার। বড় ম্যাচ জয়ের মন্ত্র দুজনেরই ভালো জানা। নিশ্চয়ই তাঁরা অঙ্ক কষেই নামবেন?
ব্রাজিলের কোচ হলে আজ আমার প্রথম লক্ষ্যই হতো, গোল খাব না। গোল খেতে কেউই মাঠে নামে না ঠিকই, তার পরও জার্মানির সঙ্গে যে পরিস্থিতিতে নামছে ব্রাজিল, তাতে সেলেসাওদের রক্ষণই বেশি গুরুত্ব পাওয়ার কথা। ঘর সামলে তারপর অন্য কথা। এমনিতে বিশ্বকাপ শুরুর আগ থেকেই বলা হচ্ছিল, আক্রমণের জন্য বিখ্যাত ব্রাজিলের এবার বড় অস্ত্র তো রক্ষণ। কিন্তু থিয়াগো সিলভা না থাকায় ব্রাজিল রক্ষণের ভারসাম্য একটু আলগা হয়ে পড়ল। এ অবস্থায় ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে রক্ষণকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে পরিকল্পনা সাজাতে হবে।
ব্রাজিলের কাছে সুন্দর ফুটবল দেখতে চায় সবাই। কিন্তু সুন্দর ফুটবল খেলার চেয়ে জেতার কথাই বেশি ভাবতে হচ্ছে। কিন্তু নেইমার-সিলভা না থাকায় গোটা রণকৌশলেই আনতে হবে পরিবর্তন।শোয়েনস্টাইগারদের নিয়ে গড়া জার্মানির শক্তিশালী মাঝমাঠের সঙ্গে টক্কর দেওয়ার চ্যালেঞ্জটা মাথায় রাখতে হচ্ছে আলাদা করে।হোল্ডিং মিডফিল্ডার হিসেবে গুস্তাভো, পাওলিনহোর নাম আসতে পারে। এ দুজনকে রক্ষণে একটু বেশিই সহায়তা করতে হবে।আক্রমণে সম্পদ যা আছে, তা নিয়েই চলতে হবে। কাজেই হাল্ক, ফ্রেডদের ওপরই ভরসা।
মাঝমাঠের সঙ্গে আক্রমণের যোগসূত্র তৈরি করতে সমস্যায় পড়তে হবে ব্রাজিলকে, এটা জানাই। এই কাজটা নেইমার করতেন। একই সঙ্গে নিজেও অংশ নিতেন আক্রমণে। কিন্ত নেইমার না থাকার অর্থ, ব্রাজিলের জন্য বড় সংকটই। অস্কারকে তাই আরও বড় ভূমিকা নিতে হবে। মাঝমাঠে দল তাঁর কাছে আরও কার্যকর কিছু আশা করে। অস্কার সেটা পারবে, এই বিশ্বাস রাখতে চাই।
জার্মানির কোচ হলে আমি ব্রাজিল দলে কে আছে কে নেই, একদমই তা মাথা থেকে বের করে দিতাম। কারণ, ব্রাজিল ব্রাজিলই। তার ওপর ব্রাজিলের ঘরের মাঠে খেলা। এর সুবিধা হলুদ জার্সিধারীরা পাবেই। জার্মানি চাইবে যেকোনোভাবেই ব্রাজিলকে সুবিধা নিতে দেওয়া যাবে না। ফিলিপ লামরা বল ধরে রেখে এই টুর্নামেন্টে যেমনটা খেলে এসেছেন, এই সেমিফাইনালেও তাই খেলবে। চেষ্টা থাকবে ব্রাজিল যেন ছন্দ খুঁজে না পায়। বিশেষ করে স্বাগতিকদের রক্ষণে সিলভার জায়গায় দান্তে (যদি খেলেন) ও ডেভিড লুইজকে ওপরে আসতে দেওয়া যাবে না। তাঁদের নিচে রাখতে একটা অস্ত্র ব্যবহার করা যেতে পারে—ক্লোসা। এই সুযোগসন্ধানী স্ট্রাইকারকে একাদশে রাখব, যেন বাতাসে আসা বল ভালো হেড করতে পারেন। ক্লোসা হেডে খুব ভালো। তাই বাতাসের লড়াইয়ে তাঁকে ব্যবহার করা উচিত। অন্যদিকে মুলারের কাজটা হবে একটু পেছন থেকে খেলা। প্রয়োজনের সময় ক্লোসার সঙ্গে যোগ দেবেন।
এই বিশ্বকাপে সবচেয়ে ভালো প্রেসিং করছে জার্মানি। সেটা প্রতিপক্ষের সীমানাতেই। আজও ব্রাজিলের সীমানায় জার্মানি প্রেসিং ফুটবল খেলবে। ব্রাজিল সেটা কীভাবে পেরিয়ে ওপরে উঠে আসে, ম্যাচের ভাগ্য তার ওপরই নির্ভর করছে অনেকটা।