রেকর্ড একুশের হাতছানি জোকোভিচের

নোভাক জোকোভিচ

ইতিহাস ডাকছে নোভাক জোকোভিচকে—বহু ব্যবহারে ক্লিশে হয়ে যাওয়া বাক্যটিই আবার লিখতে হলো। সময়ের সেরা টেনিস তারকার সামনে যে সর্বকালের সেরা হওয়ার হাতছানি! যুক্তিতর্ক দিয়ে হয়তো অনেকেই সার্বিয়ান তারকাকে সর্বকালের সেরা মানতে রাজি হবেন না। তবে আপনি মানুন আর না মানুন, আজ থেকে শুরু ইউএস ওপেনে চ্যাম্পিয়ন হলেই পুরুষ টেনিসে গ্র্যান্ড স্লাম একক জয়ে সর্বকালের সেরা হয়ে যাবেন জোকোভিচ।

গত মাসে উইম্বলডন শিরোপা জিতে সবচেয়ে বেশি গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের রেকর্ডে রজার ফেদেরার ও রাফায়েল নাদালের পাশে বসেছেন জোকোভিচ। তিনজনই জিতেছেন ২০টি করে গ্র্যান্ড স্লাম। সুইজারল্যান্ড ও স্পেনের দুই মহাতারকা নেই এবারের ইউএস ওপেনে। ওই দুজন থাকলেও অবশ্য ফেবারিট থাকতেন ‘জোকার’ জোকোভিচই। এ বছর তিনি অন্য গ্রহের টেনিস খেলে জিতে নিয়েছেন বছরের প্রথম তিনটি গ্র্যান্ড স্লাম।

নিউইয়র্কের ফ্ল্যাশিং মিডোতেও শেষ হাসি হাসলে ৫২ বছরের পুরোনো স্মৃতি ফিরিয়ে আনবেন জোকোভিচ। ১৯৬৯ সালের পর এক পঞ্জিকাবর্ষে কাউকেই বছরের সব কটি গ্র্যান্ড স্লাম জিততে দেখেনি পুরুষ টেনিস। ৫২ বছর আগে অস্ট্রেলিয়ার রড লেভার দ্বিতীয়বারের মতো জিতেছিলেন ‘ক্যালেন্ডার গ্র্যান্ড স্লাম’। এরপর দুবার দুই নারী খেলোয়াড়কে এক বছরে চারটি গ্র্যান্ড স্লাম জিততে দেখেছে টেনিস বিশ্ব। যার সর্বশেষ উদাহরণটিও হয়ে গেছে ৩৩ বছরের পুরোনো। ১৯৮৮ সালে জার্মানির স্টেফি গ্রাফ বছরের চারটি গ্র্যান্ড স্লাম তো জিতেছিলেনই, সোনা জিতেছিলেন সিউল অলিম্পিকের নারী এককেও। তাতে প্রথম ও একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে ‘গোল্ডেন স্লাম’ জয়ের রেকর্ড গড়েছিলেন গ্রাফ।

এ বছর জার্মান টেনিস তারকার পাশে বসার সুযোগ ছিল জোকোভিচেরও। তবে টোকিও অলিম্পিকে আশ্চর্যজনকভাবে সার্বিয়ান তারকা জিততে পারেননি কোনো পদকই। বছরে এ পর্যন্ত জোকোভিচের ব্যর্থতা বলতে অতটুকুই।

গোল্ডেন স্লাম হয়নি, তবে ২০ গ্র্যান্ড স্লামের মালিক ক্যালেন্ডার স্লামের হাতছানিকেই নিয়েছেন অনুপ্রেরণা হিসেবে, ‘আমি জানি আমার সামনে কত বড় সুযোগ। আমাকে সেরা টেনিস খেলতে অনুপ্রেরণা দিচ্ছে এটি। আমি সব সময়ই বড় কিছু পেতে চেয়েছি।’

চোটের কারণে এবারের ইউএস ওপেন না খেলা নাদালের বিশ্বাস, জোকোভিচ পারবেন বিশাল এই কীর্তি ছুঁতে, ‘এ বছর তাঁর যা অর্জন তা অবিশ্বাস্য। আমি বিশ্বাস করি সে এটা পেয়ে যাবে (বছরের চার গ্র্যান্ড স্লাম)। এ নিয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই।’

ইতিহাস গড়তে জোকোভিচকে পেরোতে হবে দানিল মেদভেদেভ, স্তেফানোস সিৎসিপাস, আলেক্সান্দার জভেরেভের মতো তরুণদের বাধা। চোটের কারণে নেই গতবারের চ্যাম্পিয়ন ডমিনিক থিম।

মেয়েদের বিভাগে নাওমি ওসাকার খেলাটাই সবচেয়ে বড় খবর। মানসিক অবসাদে ফ্রেঞ্চ ওপেনের মাঝপথে নাম প্রত্যাহার করা জাপানি তারকা খেলেননি উইম্বলডনে। তবে চোটের কারণে নেই মার্গারেট কোর্টের ২৪ গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের রেকর্ড থেকে এক ধাপ দূরে থাকা সেরেনা উইলিয়ামস। মেয়েদের বিভাগে শিরোপা জয়ে পরিষ্কার ফেবারিট নেই কোনো।