রোনালদোও পারছেন না ইব্রার সঙ্গে

জোড়া গোল করেছেন ইব্রা।ছবি: রয়টার্স

অধিকাংশ মানুষই বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ধীরস্থির হয়ে যান, অনুভব করতে পারেন না আগের সেই উদ্দীপনা। আবার অনেকের কাছে বয়স স্রেফ একটা সংখ্যা। যে সংখ্যার কাঁটা তরতর করে ঊর্ধ্বগামী হচ্ছে হোক, তাঁদের হেলদোল হয় না কোনো। জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ নিঃসন্দেহে দ্বিতীয় দলের মানুষ। না হয় যে বয়সে ফুটবলাররা বিভিন্ন চ্যানেলে ফুটবল বিশেষজ্ঞ হন কিংবা কোচ-ম্যানেজারের খাতায় নাম লেখান, সেখানে তিনি তরুণদের সঙ্গে টেক্কা দিয়ে সপ্তাহের পর সপ্তাহ শীর্ষ ক্লাবের হয়ে খেলে যাবেন কেন? শুধু খেলে যাচ্ছেনই না, লিগের শীর্ষ গোলদাতাও এখন তিনি!

দ্বিতীয় গোল করার পথে।
ছবি: রয়টার্স

না, ভুল পড়েননি। ইব্রাহিমোভিচ এখন ইতালিয়ান সিরি’আ-এর সর্বোচ্চ গোলদাতা। যে লিগে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর মতো মহাতারকা আছেন, আছেন রোমেলু লুকাকু, চিরো ইম্মোবিলে, লাওতারো মার্তিনেজের মতো বিশ্বমানের স্ট্রাইকার, সে লিগে সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে খেলছেন তো বটেই, উল্টো গোলের খেলার হারিয়ে দিচ্ছেন সবাইকে। গত রাতে এই ‘বুড়ো’ তারকার পিঠে চড়েই নাপোলি-বাধা পার হয়েছে এসি মিলান। নাপোলির মতো লিগ-প্রত্যাশীদের ইব্রাহিমোভিচ চুপ করিয়ে দিয়েছেন জোড়া গোল করে। এই নিয়ে লিগে ১০টা গোল করা হয়ে গেল এই সুইডিশ স্ট্রাইকারের, তাও আবার মাত্র ছয়টা ম্যাচ খেলে। তা আবার যেমন-তেমন কোনো গোল নয়। প্রথম গোলটাই দেখুন। বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা সেন্টারব্যাক মানা হয় নাপোলির সেনেগালিজ তারকা কালিদু কুলিবালিকে। সেই শক্তিশালী ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে হেড করে নিখাদ স্ট্রাইকারের মতো গোল করেছেন এই কিংবদন্তি। ইব্রা বলেই হয়তো সম্ভব!

মিলানের হয়ে তৃতীয় গোলটা করেছেন নরওয়ের তরুণ উইঙ্গার ইয়েন্স পিটার হাউগে। মজার ব্যাপার হলো, তরুণ এই তারকার জন্ম যে সালে, সে ১৯৯৯ সালেই সুইডিশ ক্লাব মালমোর হয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন ইব্রাহিমোভিচ। এখন দুজনই খেলছেন সতীর্থ হিসেবে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ভগ্নপ্রায় মিলানকে টেনে তুলছেন ওপরের দিকে। শুধু হাউগেই নন, একই কথা প্রযোজ্য মিলানের বর্তমান খেলোয়াড় জিয়ানলুইজি দোন্নারুমা, দিওগো দালোত, সান্দ্রো তোনালি, রাফায়েল লিয়াও, পিয়েরে কালুলু, ব্রাহিম দিয়াজ, আলেক্সিস সালেমেকার্স, লরেঞ্জো কলোম্বোর ক্ষেত্রেও। প্রত্যেকের জন্মের সময় বা আগে থেকেই পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন ইব্রাহিমোভিচ। ড্যানিয়েল মালদিনির কথাই ধরুন, এককালে তাঁর বাবা পাওলোর সঙ্গে মাঠের লড়াইয়ে কতবার যে মুখোমুখি হয়েছেন ইব্রা, হিসাব নেই। এখন পাওলোর ছেলেই ইব্রার সতীর্থ!

দুদিন আগে এএস রোমার সাবেক কিংবদন্তি স্ট্রাইকার ফ্রান্সেসকো টট্টি বলেছিলেন, ইব্রার এক পা খোঁড়া হয়ে গেলেও ও পঞ্চাশ বছর বয়স পর্যন্ত একই উদ্যমে খেলতে পারবে। ইব্রা যা শুরু করেছেন, তাতে টট্টি যে খুব বেশি ভুল বলেছেন, বলা যাবে না কিন্তু!