শাইমান 'ভিভ' আনোয়ার

শাইমান আনোয়ার: ছোট দলের বড় তারকা
শাইমান আনোয়ার: ছোট দলের বড় তারকা

মিথ্যা তিন প্রকার—মিথ্যা, ডাহা মিথ্যা ও পরিসংখ্যান। কথাটা বেঞ্জামিন ডিসরেইলির। ২০১৫ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের সবচেয়ে বেশি রান করা ব্যাটসম্যানদের তালিকাটা দেখে কথাটা আবারও মনে পড়ে যেতে পারে। অবিশ্বাসে কচলাতে হতে পারে নিজের চোখ। চোখ কচলানোর পরও অবশ্য তালিকাটা বদলাবে না। দেখাবে ক্রিস গেইল, কুমার সাঙ্গাকারা, এবি ডি ভিলিয়ার্স কিংবা হাশিম আমলা নন, সবার ওপরে জ্বলজ্বল করছে শাইমান আনোয়ারের নাম। এবং পরিসংখ্যানটা মোটেও মিথ্যা নয়। ডি ভিলিয়ার্সের মতো বিধ্বংসী না হয়ে, সাঙ্গাকারার মতো টানা সেঞ্চুরি না করে, গেইলের মতো এক ইনিংসেই ২১৫ রান না করেও সবার ওপরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যাটসম্যান। পাঁচ ম্যাচে ৬৭.৫০ গড় ও ১০০.০০ স্ট্রাইক রেটে ২৭০ রান, ব্যাট হাতে ধারাবাহিক ভালো করেই ২৬ ম্যাচ শেষে এই বিশ্বকাপের সবচেয়ে বেশি রানের মালিক পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত এই ক্রিকেটার।
এবারের আগে আমিরাত একবারই খেলেছে বিশ্বকাপে, ১৯৯৬ সালে। ১৯ বছর আগের সেই বিশ্বকাপেও তাদের এক খেলোয়াড়ের ওপরে প্রচারের আলোটা ভালোভাবেই পড়েছিল। অবশ্য পারফরম্যান্স দিয়ে নয়, অ্যালান ডোনাল্ডের বোলিংয়ে হেলমেট ছাড়া খেলে ও মাঠের বাইরের বিলাসী জীবন দিয়েই শিরোনাম হয়েছিলেন দলটির অধিনায়ক সুলতান জারাওয়ানি।
এবার শাইমান শিরোনাম হলেন ক্রিকেটীয় কারণেই। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৬৭ রান দিয়ে শুরু, এরপর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১০৬। তৃতীয় ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ৩৫ রানের পর কাল জন্মভূমির বিপক্ষে ৬২। ৩৫ বছর বয়সী শিপিং কোম্পানির চাকুরে বিস্মিতই করলেন ক্রিকেট-বিশ্বকে।
আমিরাতিরা অবশ্য বলবে বিস্ময়ের কী আছে! আমরা তো আর এমনি এমনিই তাঁকে ‘স্যার ভিভ’ নাম দিইনি। হ্যাঁ, সতীর্থরা শাইমানের ডাকনাম দিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান গ্রেটের নামে। দলটির অধিনায়ক মোহাম্মদ তৌকির কাল ব্যাখ্যা করলেন নামকরণের সার্থকতা, ‘আনোয়ার খুব ভালো করছে। সে এতটাই আত্মবিশ্বাসী যে আমরা ড্রেসিংরুমে তাঁকে “স্যার ভিভ” বলে ডাকি।’
আমিরাতের ঘরোয়া ক্রিকেটে শাইমান আনোয়ারের খ্যাতি বিগ হিটার হিসেবে। ভারতের রাহুল দ্রাবিড়কে আদর্শ মানলেও বিশাল বিশাল ছক্কা হাঁকান পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেট দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করা এই ডানহাতি।
২০০৭ সালে শিপিং কোম্পানির চাকরি নিয়ে আমিরাতে আসেন শাইমান। তাঁর কোম্পানির একটা ক্রিকেট দলও ছিল। শাইমান নিজের দক্ষতা দেখানোর সুযোগটা হাতছাড়া করেননি। ক্লাব ক্রিকেটে ভালো করেই ২০১৪ সালে ফেব্রুয়ারিতে ডাক পান জাতীয় দলে। এএফপি, ক্রিকইনফো, এনডিটিভি।