সেই সাকিবই আজ নেই!

ওয়ানডে সিরিজ
ওয়ানডে সিরিজ

তিনি মাঠে এলেন। কিন্তু অনুশীলনে নামলেন না। তিনি হোটেলে ছিলেন। কিন্তু টিম মিটিংয়ে গেলেন না। কাল সন্ধ্যায় যখন হোটেলে টিম মিটিংটা শেষ হলো, তিনি তখন ১০৩ ডিগ্রি জ্বর নিয়ে রুমে শুয়ে। এই তিনি সাকিব আল হাসান। কোনো ওষুধেই জ্বর কমছিল না বলে শেষ পর্যন্ত যাঁকে কাল রাত সাড়ে নয়টার দিকে স্থানান্তর করা হয়েছে হাসপাতালে।
আজ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ‘বাংলাওয়াশ’ ফিরিয়ে আনার সিরিজ শুরু করবে বাংলাদেশ দল। অথচ প্রথম ম্যাচে ‘বাংলাওয়াশের’ নায়ক সাকিবের খেলার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। হাসপাতালের শয্যা থেকে উঠে এসে মাঠে নামলে সেটা হবে অলৌকিক কিছু।
ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত সাকিবের না খেলা মোটামুটি নিশ্চিত, তার ওপর ম্যাচটা দিবারাত্রির।
প্রথম একাদশ নির্বাচনে তড়িঘড়ি না করে কোচ-অধিনায়ক তাই আজ সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন, এটাই স্বাভাবিক। সাকিবকে হাসপাতালে পাঠানোর আগ পর্যন্ত আজকের ম্যাচের একাদশ নিয়ে দুই রকম চিন্তার কথাই শোনা গেছে। সাকিবকে নিয়ে একাদশ ও সাকিবকে ছাড়া একাদশ। সাকিব খেললে একাদশের বাইরে থাকার কথা শামসুর রহমান, নাঈম ইসলাম, জিয়াউর রহমান ও আল আমিনের।
আর সাকিব না খেললে এঁদের মধ্য থেকে দলে আসতে পারেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার জিয়া অথবা স্পিনিং অলরাউন্ডার নাঈম ইসলাম।
টেস্ট সিরিজে মুমিনুল হকও জ্বরে পড়েছিলেন। সুস্থ হয়ে তিনি পুরোদস্তুর অনুশীলন করলেন কাল। কিন্তু জ্বর-জ্বর ভাব থাকায় সাকিব দলের সঙ্গে স্টেডিয়ামে গেলেও ড্রেসিংরুম থেকে বেরই হলেন না। সন্ধ্যা নাগাদ সেই জ্বর-জ্বর ভাবটা চড়ে গেল ১০৩ ডিগ্রিতে। রাতে তো হাসপাতালেই নিয়ে যাওয়া হলো তাঁকে। শরীর একটু খারাপ ছিল অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমেরও। তবে সেটা না-খেলার মতো কিছু নয়।
সাকিবের জ্বর বাংলাদেশ দলের জন্য বড় একটা ধাক্কা হয়েই এল। ব্যাটিংয়েও দল তাঁর মুখ চেয়ে থাকে, তবে সেটি বোলিংয়ের মতো নয়। সাকিববিহীন বোলিং আক্রমণ আরও ভোঁতা হয়ে যেতে পারে শিশিরের প্রভাবে। না, সাকিব-পত্নী শিশিরের কথা বলা হচ্ছে না। বলা হচ্ছে শীতের আগমনী সন্ধ্যায় ঘাসের ডগায় জমা শিশিরের কথা। কাল সিরিজপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়কই বলছিলেন, ‘উইকেট দেখে মনে হচ্ছে স্পিনাররা ভালো সাহায্য পাবে। তবে শিশির একটা বড় ব্যাপার হতে পারে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ হোম সিরিজে এটা দেখা গেছে। গতকাল (পরশু) সন্ধ্যায় অনুশীলন করার সময়ও দেখেছি।’

কন্ডিশন এ রকম হলে টস সব সময়ই হয়ে ওঠে গুরুত্বপূর্ণ। মুশফিক তো বলেই দিলেন, ‘টসের একটা বড় ভূমিকা থাকবে। টসে হেরে যদি পরে ফিল্ডিং পাই, তাহলে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়ে যাব।’ বাংলাদেশ অধিনায়কের বাকি কথাটাই কি বলে দিলেন ব্রেন্ডন ম্যাককালাম? সকালে মুশফিক ওই কথা বলার পর দুপুরে নিউজিল্যান্ড অধিনায়কও বললেন, ‘আমার মনে হয়, এই উইকেটে দুই দলই চাইবে পরে ব্যাট করতে। স্পিনারদের কথা ভেবে বাংলাদেশ চাইবে না ভেজা বলে বোলিং করতে।’

বোলিং প্রসঙ্গে আলোচনায় যেমন শিশির, ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে আলোচনায় তেমনি কে বাংলাদেশ দলের তিন নম্বর। শোনা যাচ্ছিল, মাহমুদউল্লাহকে চেষ্টা করানো হবে এই জায়গায়। তবে দল সূত্রের খবর, মাহমুদউল্লাহ তাতে রাজি নন। শেষ পর্যন্ত তিন নম্বরে তাই মুমিনুলকে খেলানোর চিন্তাভাবনা চলছিল।

টেস্ট সিরিজটা ভালোয় ভালোয় শেষ হলেও ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগেই চোট-অসুস্থতা পিছু নিয়েছে বাংলাদেশ দলের। পরশু অনুশীলনে চোট পেয়ে সিরিজ থেকে ছিটকে গেলেন শফিউল ইসলাম। এখন সাকিবকে নিয়েও অনিশ্চয়তা। অবশ্য ২০১০-এর ‘বাংলাওয়াশ’ মাথায় রাখলে এটা একটা শুভ লক্ষণও। সেবারও তামিম-মাশরাফিকে হারিয়ে চোটাঘাতে জর্জরিত ছিল বাংলাদেশ দল, এবারও। তবে কি...!