স্তম্ভিত অ্যাথলেটিকস-বিশ্ব

আসাফা পাওয়েল এক শাপগ্রস্ত নাম। একসময় ১০০ মিটার স্প্রিন্টের বিশ্ব রেকর্ডটা ছিল এই জ্যামাইকানেরই অধিকারে। ১০ সেকেন্ডের নিচে সবচেয়ে বেশিবার ১০০ মিটার দৌড়ানোর রেকর্ডটাও তাঁর। তার পরও আলো ঝলমল হওয়ার পরিবর্তে পাওয়েলের জীবনালেখ্য যেন আঁধারে ঢাকা। অলিম্পিক দূরের কথা কখনো বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপই জিততে পারেননি ৩০ বছর বয়সী এই সিপ্রন্টার। পাওয়েল হলেন কখনোই সোনা না-জেতা সবচেয়ে দ্রুতগতির সিপ্রন্টার। তাঁর নামের পাশে এবার যোগ হলো ডোপপাপী শব্দটাও। এ মৌসুমে ১০০ মিটারে প্রথম তিনটি সেরা সময় করা মার্কিন টাইসন গের ডোপ পজিটিভ হওয়ার ঘটনায় হকচকিত অ্যাথলেটিকস-বিশ্ব ঘণ্টা তিনেকের ব্যবধানে রীতিমতো স্তম্ভিত হলো। ১০০ মিটারে মৌসুমের চতুর্থ সেরা সময় করা আসাফা পাওয়েলও গায়ে মেখেছেন ডোপ পাপের কলঙ্ক। ১৪ জুলাই, রোববার, অ্যাথলেটিকস-বিশ্বের জন্য একটা বড় দুঃখের দিন। যেমনটা বলেছেন ১৯৯৬ অলিম্পিকের দ্রুততম মানব কানাডার ডনোভান বেইলি, ‘খেলাটার জন্যই এ বড় দুঃখের ঘটনা।’গে-পাওয়েল ছাড়াও এদিন ডোপ পজিটিভ হয়েছেন আরও চার জ্যামাইকান। যাঁদের মধ্যে নাম জানা গেছে পাওয়েল, লন্ডন অলিম্পিকে রুপাজয়ী মহিলা স্প্রিন্টার শেরন সিম্পসন ও মহিলা ডিসকাস থ্রোয়ার অ্যালিসন র্যান্ডালের। নিষিদ্ধ শক্তিবর্ধক গ্রহণ করে নিজেদের কলঙ্কিত করার এই যুগে এত দিন নিষ্কলুষই ছিল জ্যামাইকানদের ভাবমূর্তি। কিছুদিন আগে ভেরোনিকা ক্যাম্পবেল ব্রাউন ধরা পড়ার পরের এই ঘটনা জ্যামাইকার সুনামে কালি ছিটাল ভালো করেই। তবে ২০০৫ সালের জুন থেকে ২০০৮ সালের মে পর্যন্ত টানা তিন বছর বিশ্ব রেকর্ড অক্ষুণ্ন রাখা পাওয়েল জেনে-বুঝে ডোপ নেওয়ার কথা অবশ্য অস্বীকার করেছেন। গত অলিম্পিকে সবার পেছনে থেকে (চোটের কারণে) ১০০ মিটার শেষ করা এই স্প্রিন্টার জোরালোভাবেই দাবি করেছেন তিনি প্রতারক নন, ‘আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আমি কখনোই জেনেশুনে কিংবা স্বেচ্ছায় নিষিদ্ধ কিছু গ্রহণ করিনি। এখন তো নয়ই, আমি কখনোই প্রতারক ছিলাম না।’ ডোপবিরোধী বিভিন্ন সংস্থা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে পূর্ণ সহায়তার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন পাওয়েল। ডোপের ব্যাপারে খুবই কঠোর জ্যামাইকান অ্যাথলেটিকস অ্যাসোসিয়েশনের চোখ ফাঁকি দিয়ে কীভাবে অ্যাথলেটদের দেহে ঢুকে গেল নিষিদ্ধ বস্তু, বিষয়টা ভাবাচ্ছে পাওয়েলকেও। বোল্ট, গে ও ইয়োহান ব্লেকের পর বিশ্বের চতুর্থ দ্রুততম মানব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নিজ উদ্যোগে তদন্ত করে দেখার, ‘কঠিন কঠিন সব পরীক্ষা পার করে এই জিনিসগুলো কীভাবে আমাদের মধ্যে ঢুকে পড়ল সেটা অবশ্যই খুঁজে বের করা হবে। আর এটা যাতে আর না হয় নিশ্চিত করা হবে সেটাও।’তবে যা-ই হোক, গের পর পাওয়েলেকেও হারানোয় আগামী মাসের মস্কো বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপটা ঔজ্জ্বল্য হারাল অনেকটাই। ১০০ মিটারে বছরের সেরা চারটি টাইমিং-ই যে ছিল এই দুজনের। এএফপি।