'সাকিবের খেলা দেখতে গিয়েছিলাম'

এনামুল হক জুনিয়র
এনামুল হক জুনিয়র

ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটে এর আগেও দুই মৌসুম খেলেছেন। কিন্তু বার্মিংহাম ক্রিকেট লিগে খেলছেন এবারই প্রথম, ইংলিশদের কাছেই যেটা নাকি ঘরোয়া ক্রিকেটে সেরা সীমিত ওভারের আসর। যেখানে টি-টোয়েন্টি আর ৫০ ওভারের পাশাপাশি ম্যাচ হয় ৫৫ ওভারেরও! কাল বার্মিংহাম থেকে টেলিফোনে প্রবাস জীবন নিয়ে কথা বললেন বাঁহাতি স্পিনার এনামুল হক জুনিয়র

l কেমন সময় কাটছে ইংল্যান্ডে?

এনামুল হক জুনিয়র: ভালোই কাটছে। খেলা থাকলে ভালো কাটে, না থাকলে বোরিং লাগে। ওই সময়টায় ট্রেনিং করি, জিমে যাই।

l এবার তো বার্মিংহাম লিগে খেলছেন। লিগটা সম্পর্কে একটু বলুন...

এনামুল: ইংল্যান্ডের সবাই বলে, এটাই নাকি এ দেশের সেরা সীমিত ওভারের ক্রিকেট লিগ। এখানে ফরম্যাটটা একটু ভিন্ন। একই সঙ্গে টি-টোয়েন্টি, ৫০ ওভার আর ৫৫ ওভারের ম্যাচের তিনটা আলাদা লিগ হচ্ছে। আমি খেলছি উলভারহ্যাম্পটন ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে। বার্মিংহাম সিটি থেকে ২০ মিনিটের ড্রাইভ।

l ৫৫ ওভারের ম্যাচ! সেটা কী রকম?

এনামুল: ধরুন, আপনার দল ২০০ রান করল, জিততে হলে অবশ্যই প্রতিপক্ষকে এর আগে অলআউট করতে হবে। আর প্রতিপক্ষকে জিততে হলে ৫৫ ওভারের মধ্যে ২০০ রান টপকে যেতে হবে। প্রতিপক্ষ যদি উইকেট হাতে রেখে কম রানও করে, তাহলে ম্যাচটা ড্র হয়ে যাবে। তবে পয়েন্ট ভাগাভাগিতে বেশি রান করা দল বেশি পয়েন্ট পাবে।

l লিগে এখন পর্যন্ত আপনার পারফরম্যান্স কেমন?

এনামুল: সব মিলিয়ে ১৪-১৫টা ম্যাচ খেলেছি এখন পর্যন্ত। উইকেট পেয়েছি ৩০টির মতো।

l দলে কি বিদেশি খেলোয়াড় আপনি একাই?

এনামুল: হ্যাঁ, প্রতি দলে একজন করেই বিদেশি খেলতে পারে। তরুণ হলেও আমাদের দলটা বেশ ভালো। মঈন আলী আছে। অ্যাশেজের আগে অস্ট্রেলিয়ার শেষ প্র্যাকটিস ম্যাচে উস্টারশায়ারের হয়ে অপরাজিত ৬২ রান করা টমাস হিলও আমাদের দলে। উস্টারশায়ারের পেসার ক্রিস রাসেলও আছে। ঘণ্টায় ৯০ মাইল গতিতে বল করে ও।

l বলছিলেন, খেলা না থাকলে জিম-রানিং করেন। এসব সুবিধা নিশ্চয়ই খুব ভালো পাচ্ছেন ওখানে?

এনামুল: হ্যাঁ, এসব এখানে খুবই ভালো হচ্ছে। বাসার পাশেই জিম, ক্লাব থেকে ব্যবস্থা করে দিয়েছে সেখানে গিয়ে কাজ করার। ট্রেনার আছে সেখানে। রানিংয়ের জন্যও প্রচুর জায়গা। দেশ থেকে জাতীয় দলের ট্রেনার ডেভিড ডয়ার যে প্রোগ্রাম দিয়েছেন, সেটাও অনুসরণ করছি।

l বিদেশে গিয়ে এ ধরনের লিগে খেললে এটা ছাড়া আর কী ধরনের উপকার হয়?

এনামুল: আমি তো অনেক উপকারই পেয়েছি। এ নিয়ে তৃতীয়বার এলাম ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলতে। বিদেশি খেলোয়াড় বলে প্রতি ম্যাচেই আমার ওপর পারফর্ম করার চাপ থাকে। তা ছাড়া পরবর্তী টেস্টের আগে দেশে আমাদের লাল বলে কোনো খেলা নেই। এখানে লাল বলে খেলছি। সে হিসাবেও এটা একটা ভালো প্র্যাকটিস টেস্টের জন্য।

l খেলা বা অনুশীলন ছাড়া আর কীভাবে কাটে অবসর সময়?

এনামুল: ঘুরি-ফিরি। এই তো গত সপ্তাহে সাকিবের খেলা দেখতে গিয়েছিলাম। ওর বাসায়ও গেছি, গল্পগুজব করে এসেছি। আমি যেদিন গেছি, সেদিনই ওর দল জিতেছে। ও তো বউ নিয়ে এসেছে। ফোনে-টোনেও কথা হয় সাকিবের সঙ্গে। এ ছাড়া আমার দেশের অনেক বন্ধু এখানে পড়াশোনা করছে। সময় পেলে ওদের সঙ্গে দেখা করি। যেকোনো সমস্যায় বাংলাদেশি পরিবারগুলো অনেক সাহায্য করে।

l বাচ্চার প্রথম জন্মদিনে দেশে না থাকতে পেরে দুঃখ করেছেন ফেসবুকে। তো পরিবার ছাড়া এত দিন দেশের বাইরে থাকতে আসলে কেমন লাগে?

এনামুল: মেয়ের প্রথম জন্মদিনে ওর কাছে থাকতে না পেরে খুবই খারাপ লেগেছে...বলে বোঝাতে পারব না। পরিবার ছাড়া দিনের পর দিন এভাবে থাকাটা কষ্টকর। কিন্তু ক্রিকেটারদের জীবন তো এ রকমই।

l দেশে ফিরবেন কবে?

এনামুল: ‘এ’ দল তো ইংল্যান্ডে আসবে। যদি দলে থাকি তো ‘এ’ দলের খেলা শেষ করেই দেশে ফিরব। কাল (পরশু) আকরাম ভাইয়ের (আকরাম খান) সঙ্গে কথা হলো। উনি বলেছেন, খুব তাড়াতাড়িই জানাবেন দলে আমি থাকব কিনা।