অ র্থ নী তি ১ ম প ত্র

অধ্যায়-৫ 

প্রিয় শিক্ষার্থী, অর্থনীতি ১ম পত্র থেকে গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করব।

প্রশ্ন: চাহিদা কী?

উত্তর: সাধারণ অর্থে কোনো দ্রব্য পাওয়ার আকাঙ্ক্ষাকে চাহিদা বলে। অর্থনীতিতে চাহিদা বলতে কার্যকরী চাহিদাকে বোঝায়। অর্থাত্ আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে থাকতে হবে ক্রয়ক্ষমতা বা অর্থ। যেমন— কোনো দরিদ্র দিনমজুরের একটি ফ্রিজ কেনার আকাঙ্ক্ষা থাকতে পারে। কিন্তু তার ক্রয়ক্ষমতা নেই বলে এটি চাহিদা হবে না। অর্থনীতিতে চাহিদা বলতে বোঝায় কোনো দ্রব্যের আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য সামর্থ্য বা অর্থ এবং অর্থব্যয় করার ইচ্ছা।

অধ্যাপক পেনশনের ভাষায়, ‘কোনো দ্রব্য পাওয়ার আকাঙ্ক্ষার পশ্চাতে প্রয়োজনীয় অর্থ এবং ওই অর্থ ব্যয় করার প্রবল ইচ্ছা থাকলেই তা অর্থনীতিতে চাহিদা বলে গণ্য হয়।’

সুতরাং চাহিদার তিনটি উপাদান রয়েছে। যেমন—

১. কোনো দ্রব্য পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা

২. সেই দ্রব্য ক্রয়ে প্রয়োজনীয় অর্থ বা ক্রয়ক্ষমতা

৩. দ্রব্য ক্রয়ে সেই অর্থ ব্যয় করার ইচ্ছা।

প্রশ্ন: চাহিদা সূচি ও চাহিদা রেখার মধ্যে পার্থক্য কী?

উত্তর: মূলত চাহিদা সূচি ও চাহিদা রেখার মধ্যে মৌলিক কোনো পার্থক্য নেই। উভয়েই চাহিদাবিধির প্রকৃতি প্রকাশ করে থাকে মাত্র। এ দুটি ধারণার মধ্যে পদ্ধতিগত পার্থক্য রয়েছে। একটি দ্রব্যের বিভিন্ন দামে একজন ক্রেতা ওই দ্রব্যের কী পরিমাণ ক্রয় করতে চায় তা যদি তালিকার সাহায্যে দেখানো হয় তা-ই হলো চাহিদাসূচি। অপর পক্ষে এই তথ্যটি যদি রেখাচিত্রের সাহায্যে দেখানো হয়, তবে সে রেখাচিত্রকে চাহিদা রেখা বলা হয়। অর্থাত্ একজন ক্রেতা বিভিন্ন দামে একটি দ্রব্যের কী পরিমাণ ক্রয় করতে ইচ্ছুক তা যদি গাণিতিক সংখ্যার সাহায্যে তালিকার মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় তা হলো চাহিদাসূচি। আবার একজন ক্রেতা বিভিন্ন দামে একটি দ্রব্যের কী পরিমাণ ক্রয় করতে ইচ্ছুক তা যদি জ্যামিতিক পদ্ধতিতে প্রকাশ করা হয় তা হলো চাহিদারেখা। চাহিদাসূচি ও চাহিদারেখা হলো একই তথ্য প্রকাশের দুটি পদ্ধতি মাত্র। সুতরাং বলা যায়, এদের মধ্যে যে পার্থক্য তা মৌলিক নয় বরং পদ্ধতিগত।

প্রশ্ন: চাহিদার স্থিতিস্থাপকতা কাকে বলে?

উত্তর: আমরা জানি, দ্রব্যের দামের পরিবর্তন হলে ওই দ্রব্যের চাহিদার পরিবর্তন হয়। কোনো দ্রব্যের দামের পরিবর্তনের ফলে ওই দ্রব্যের চাহিদার পরিমাণ যে মাত্রায় পরিবর্তন হয়, তাই চাহিদার স্থিতিস্থাপকতা। অর্থাত্ দামের পরিবর্তনের ফলে যে হারে চাহিদার পরিবর্তন ঘটে, তাকে চাহিদার স্থিতিস্থাপকতা বলা হয়।

অধ্যাপক মার্শালের মতে, ‘দাম পরিবর্তনের ফলে চাহিদা যে দ্রুত বা ধীরগতিতে পরিবর্তিত হয় তাই চাহিদার স্থিতিস্থাপকতা।’

নিচের সূত্রের সাহায্যে চাহিদার স্থিতিস্থাপকতা প্রকাশ করা হয়:

চাহিদার স্থিতিস্থাপকতা =

      চাহিদার শতকরা পরিবর্তনের হার / দামের শতকরা পরিবর্তনের হার

      বা, চাহিদার পরিবর্তনের পরিমাণ / প্রাথমিক চাহিদার পরিমাণ ¸ দামের পরিবর্তনের পরিমাণ /  প্রাথমিক দামের পরিমাণ

      বা, চাহিদার পরিবর্তনের পরিমাণ / প্রাথমিক চাহিদার পরিমাণ Ù প্রাথমিক দামের পরিমাণ / দামের পরিবর্তনের পরিমাণ

প্রতীক চিহ্নের সাহায্যেও তা প্রকাশ করা যায়:

Ed = DQ/Q ¸ DP/P

     = DQ/Q Ù P/DP

    =DQ/DP Ù Q /P

এখানে,  Ed = চাহিদার স্থিতিস্থাপকতা।

           DQ = চাহিদার পরিবর্তনের হার।

            Q  = প্রাথমিক চাহিদার পরিমাণ।

           DP = দামের পরিবর্তনের পরিমাণ।

             P = প্রাথমিক দামের পরিমাণ।

# পরবর্তী অংশ ছাপা হবে আগামীকাল