আজ কিনলে দুটি পিৎজার দাম পড়ত চার হাজার কোটি টাকা
হাজার দশেক বিটকয়েন ছিল। দুটি পিৎজা চেয়েছিলেন। বাকিটা ইতিহাস। বিটকয়েনের মতো ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে যাঁদের কারবার, এ গল্প তাঁদের অনেকেরই জানা।
লাজলো হানিয়েকজ্ নামের এক ব্যক্তি ২০১০ সালের ২২ মে গোটা দুয়েক পিৎজা চেয়েছিলেন। শিশুকন্যাকে নিয়ে রাতে খানিকটা খাবেন, যদি বেঁচে যায় তো বাকিটা সকালের নাশতা।
বিটকয়েনটক ডট অর্গ নামের অনলাইন ফোরামে তিনি ঘোষণা দিলেন, কেউ যদি তাঁকে পাপা জনস ব্র্যান্ডের দুটি বড় পিৎজা পাঠাতে পারে তবে বিনিময়ে তিনি দেবেন ১০ হাজার বিটকয়েন। সে সময় প্রতি বিটকয়েনের দাম ১ মার্কিন সেন্টেরও কম ছিল। তবু দুটি পিৎজার জন্য ১০ হাজার বিটকয়েন যথেষ্টের চেয়ে বেশি। অনেকেই রাজি হয়েছিল। তাঁর বাড়িতে দুটি পিৎজা চলে এল। আর সেদিনই ইতিহাসে নাম লেখান লাজলো। সে লেনদেনই বিটকয়েন দিয়ে বাস্তব পণ্য কেনার প্রথম নজির হিসেবে স্বীকৃত।
বিটকয়েনের দামে ঊর্ধ্বগতি দেখা দিলেই লাজলোর ঘটনাটির চর্চা অনলাইন ফোরামগুলোতে হয়। সবাই ক্যালকুলেটর নিয়ে বসে যান হিসাব কষতে। যদি আজ ওই দামে দুটি পিৎজা কিনতেন, তবে ডলারে খরচ কত আসত ইত্যাদি।
চলতি সপ্তাহের খবর হলো, বিটকয়েনে ১৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করছে টেসলা। ভবিষ্যতে বিটকয়েনের বিনিময়ে টেসলার বৈদ্যুতিক গাড়ি কেনা যাবেও বলেও জানিয়েছেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্ক। সে ঘোষণার পর হু হু করে বেড়ে যায় বিটকয়েনের দাম। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে দেখলাম প্রায় ৪৮ হাজার ডলার দরে বিকোচ্ছে প্রতি বিটকয়েন। আজ সকাল থেকে ৪৭ হাজারের আশপাশে ঘুরঘুর করছে।
এবার চলুন, আমরাই হিসাব কষে দেখি লাজলোর দুটি পিৎজার দাম কত দাঁড়ায়। প্রতি বিটকয়েন যদি ৪৭ হাজার ডলার ধরি তবে ১০ হাজার বিটকয়েনের দাম আসে ৪৭ কোটি ডলার। টাকায় ৪ হাজার কোটির কাছাকাছি। এতগুলো টাকা কেবল দুটি পিৎজার জন্য। পাপা জনসের একটি বড় পিৎজার দাম যদি ১৭ ডলার ধরি তবে আজ লাজলো ২ কোটি ৭৬ লাখের ঢের বেশি পিৎজা কিনতে পারতেন। তবে এ নিয়ে লাজলোর কোনো আফসোস নেই বলে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন।
ছোট্ট একটি তথ্য দিয়ে শেষ করা যাক। লাজলোর সে ঘটনার পর থেকে প্রতি বছর ২২ মে বিটকয়েন পিৎজা দিবস পালন করা হয়।