বিভিন্ন জায়গায় আমরা ‘কৃতজ্ঞতায়’ কথাটি দেখি। কথাটি লিখেই এক বা একাধিক ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়। তবে কেন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হচ্ছে, সেটা সবিস্তারে বলা হয় না। আমরা এবার সবিস্তারে জানিয়ে দিচ্ছি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সম্ভাব্য কারণ।

গানের অ্যালবামে
কৃতজ্ঞতায়: তোরাব আলী
কারণ: তোরাব আলী সম্পর্কে আমার জ্যাঠা। অ্যালবামটি প্রকাশের প্রাক্কালে আমি তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। কারণ, প্রথম যখন আমি হারমোনিয়াম নিয়ে বারান্দায় বসে গান গাওয়া শুরু করেছিলাম, তখন আমার গান শুনে জ্যাঠার বলদটা ভয়ে দড়ি ছিঁড়ে কোথায় যেন হারিয়ে যায়! জ্যাঠা তখন আমার কাছ থেকে গরুর পুরো ক্ষতিপূরণ আদায় না করে হাফ ক্ষতিপূরণ আদায় করেছিলেন। তখন আমি ছাত্র ছিলাম তো, তাই হাফ। সেদিন ‘হাফ’ ক্ষতিপূরণ আদায় করার স্মৃতি মনে করে আজ জ্যাঠার প্রতি জানাচ্ছি ‘ফুল’ কৃতজ্ঞতা।

সিনেমায়
কৃতজ্ঞতায়: ছাবিকুন্নাহার
কারণ: ছাবিকুন্নাহার সম্পর্কে আমার একমাত্র স্ত্রী। সিনেমাটি মুক্তির প্রাক্কালে আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। কারণ, শট বুঝিয়ে দেওয়ার সময় কেন আমি নায়িকার হাত ধরেছিলাম, এ জন্য সে আমার কানের ঠিক দুই আঙুল নিচে ‘ঠাডায়া’ চড় মেরেছিল। চড় মেরেই ক্ষান্ত হয়নি, তক্ষণই চলে গিয়েছিল তার বাবার বাড়িতে। অতঃপর পাক্কা ছয় মাস সেখানে অবস্থান করেছিল সে। তত দিনে আমার ছবি বানানো শেষ। সেদিন যদি আমাকে চড় মেরে সে বাবার বাড়ি চলে না যেত, তাহলে নির্বিঘ্নে আমি ছবিটা বানাতে পারতাম না। বেশুমার কৃতজ্ঞতা, বউ!

বইয়ে
কৃতজ্ঞতায়: ছলিমুল্লাহ
কারণ: ছলিমুল্লাহ সম্পর্কে আমার মামা-খালু কিছুই না। সে আমার বাসার পাশের মোড়ে দাওয়াই বিক্রি করে। কিছুদিন আগে সে আমাকে একটা বিশেষ দাওয়াই দেয়। এই দাওয়াইটা ঘরে ছিটানোর পর থেকে আমার ঘরে যত ইঁদুর, তেলাপোকা ছিল, সব এলাকাছাড়া হয়ে গেছে। যেহেতু আমি জানি, আমার বইটা প্রকাশ করলে কেউ এক কপিও কিনবে না, সেহেতু ঘরে স্তূপ বানিয়ে রেখে দেওয়া ছাড়া গতি নেই। কিন্তু বই স্তূপ বানিয়ে রেখে দিলে তো ইঁদুর-তেলাপোকায় কাটার ভয় আছে। খুশির ব্যাপার, ছলিমুল্লার দাওয়াইয়ের কল্যাণে আমি এখন নিশ্চিন্ত। দাওয়াই ছিটাব, বই থেকে ইঁদুর-তেলাপোকা থাকবে হাজার মাইল দূরে। ধন্যবাদ, ছলিম।

নাটকে
কৃতজ্ঞতায়: আক্কাস আলী
কারণ: আক্কাস আলী আমার পাড়ার বড় ভাই। তার পকেটে সব সময় অস্ত্র থাকে। আমি যখন নাটক বানানোর জন্য ঘুরতে ঘুরতে কয়েক জোড়া স্যান্ডেলের তলা ক্ষয় করে ফেলেছি, তখনই আমার পাশে এসে দাঁড়ান আক্কাস ভাই। বলেন, ‘তুই শুধু একবার বল, তোর কী লাগবে!’ আমি বললাম, ‘আমার কিছুই লাগবে না। খালি প্রডিউসার লাগবে।’ আক্কাস ভাই তখন তার ‘প্রতিভা’র জোরে নগদে একজন প্রডিউসারকে ধরে আনলেন এবং জানের হুমকি দিয়ে আমার নাটক প্রডিউস করতে বাধ্য করলেন। কৃতজ্ঞতা, আক্কাস ভাই। লাভ ইউ।