ক্লাউড সেবা কী?

কয়েক বছর হলো ক্লাউড কম্পিউটিং, ক্লাউড শব্দগুলো বেশ শোনা যাচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তির এই ক্লাউড আসলে কী?
ক্লাউড হলো ইন্টারনেট ব্যবহার করে অনলাইনে তথ্য ও প্রোগ্রাম সংরক্ষণ। অনলাইনে থাকা এসব ফাইলে যখন-তখন ইচ্ছেমতো প্রবেশ করার সুবিধা থাকে। নিজেদের হার্ডডিস্কে ফাইল জমা রাখলে সেটা হবে স্থানীয় সংরক্ষণ। ঠিক একই কাজে ড্রপবক্স বা গুগল ড্রাইভের মতো অনলাইনের কোনো সুবিধা ব্যবহার করলে তা হবে ক্লাউডভিত্তিক সংরক্ষণ। আরেকটি উদাহরণ, কম্পিউটারে ইনস্টল করা আউটলুক প্রোগ্রামটি দিয়ে ই-মেইল পড়লে ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয় ঠিকই, তবে সেটা ক্লাউড সেবা নয়। আবার এ কাজটিই যখন আউটলুক ডটকম ওয়েবসাইটের মাধ্যমে দেখা হয়, সেটা আসলে পড়া হয় ক্লাউডের মাধ্যমে। তথ্য সংরক্ষণ এবং সিনক্রোনাইজেশনের বেলায় ক্লাউডভিত্তিক কিছু অ্যাপ্লিকেশন আছে—যেমন ড্রপবক্স বা ওয়ান ড্রাইভ। আবার এমএস অফিসের বিকল্প হিসেবে আছে ওয়েবভিত্তিক গুগল ডকস।
ক্লাউড সেবায় ব্যবহৃত সফটওয়্যার আর তথ্য জমা থাকে একাধিক সার্ভারে, কোথাও না কোথাও। স্বভাবতই ক্লাউড সেবায় কিছু সমস্যা থাকে। প্রথম যে সমস্যাটা সামনে চলে আসে, তা হলো গতি। কম্পিউটারে স্থানীয়ভাবে যুক্ত ইথারনেট, ওয়াই-ফাই বা ইউএসবি মাধ্যমে তথ্য স্থানান্তরের গতি বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত ইন্টারনেটের গতি থেকে অনেক বেশি, বিশেষ করে যখন কোনো ফাইল অনলাইনে পাঠানো (আপলোড) হয়। যে ফাইল হার্ডডিস্কে পাঠাতে এক মিনিট সময় লাগে, সেই একই ফাইল অনলাইলে রাখতে এক ঘণ্টাও লেগে যেতে পারে। তবে ফাইবার অপটিক তারনির্ভর উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে চিত্রটা একটু ভিন্ন।
এরপরই ক্লাউড সেবা ব্যবহারে খরচের প্রশ্নটা চলে আসে। এমনিতে অনেক ক্লাউড সেবা আছে, যেগুলো সচরাচর বিনা মূল্যেই ব্যবহার করা যায়। ব্যবহারে যদিও কিছুটা সীমাবদ্ধতা থাকে, তবে বিনা মূল্যের এসব ক্লাউড সেবা ব্যবহার করে নিজের টুকিটাকি কাজ চালানো যায়। যেখানে বছর হিসেবে নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে এসব ক্লাউড সেবা কিনতে হয়, সেখানে একবার মাত্র খরচ করে এক্সটার্নাল হার্ডডিস্ক কিনে তথ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা যায়। আবার অনলাইনে রাখা এসব তথ্যের নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার ব্যাপারে কিছুটা চিন্তাও করতে হয়। এগুলো বাদ দিলে অনেক সুবিধার কারণে ক্লাউড সেবা ধীরে ধীরে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।