সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
প্রিয় শিক্ষার্থী, আজ জীববিজ্ঞান প্রথম পত্রের ২য় অধ্যায় থেকে একটি সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর দেওয়া হলো।
প্রশ্ন:
ক. ক্রসিং ওভার কাকে বলে?
খ. কায়াজমা বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ধাপে ক্রোমোসোমের আকৃতি V, L, J, I-এর মতো দেখায় কেন? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের পরবর্তী ধাপের বিভিন্ন পরিবর্তনের মাধ্যমে কোষ বিভাজন সম্পন্ন হয়, বিশ্লেষণ করো।
উত্তর: ক. একজোড়া সমসংস্থ ক্রোমোসোমের দুটি নন-সিস্টার ক্রোমাটিডের মধ্যে যে অংশের বিনিময় ঘটে, তাকে ক্রসিং ওভার বলে।
উত্তর: খ. মিয়োসিস-১ কোষ বিভাজনের প্রোফেজ-১ এর প্যাকাইটিন উপপর্যায়ের শেষের দিকে হোমোলোগাস ক্রোমোসোমের মধ্যে বিকর্ষণ দেখা যায়। ফলে একে অন্যের কাছ হতে দূরে সরতে থাকে। হোমোলোগাস ক্রোমোসোমগুলো সম্পূর্ণরূপে আলাদা হতে পারে না। কারণ, নন-সিস্টার ক্রোমাটিডের মাধ্যমে এরা এক বা একাধিক স্থানে যুক্ত থেকে ইরেজি ‘X’ অক্ষরের মতো অবস্থা সৃষ্টি করে। দুটি নন-সিস্টার ক্রোমাটিডের ‘X’ আকৃতির জোড়াস্থলকে একবচনে কায়াজমা এবং বহুবচনে কায়াজমাটা বলে।
উত্তর: গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ধাপটি মাইটোসিসের অ্যানাফেজ। কোষ বিভাজনের যে পর্যায়ে অপত্য ক্রোমোসোমগুলো বিষুবীয় অঞ্চল থেকে মেরুমুখী চলতে শুরু করে, সে পর্যায়কে অ্যানাফেজ বলে। সেন্ট্রোমিয়ারের পূর্ণ বিভক্তির ফলে প্রতিটি ক্রোমাটিড একটি অপত্য ক্রোমোসোমে পরিণত হয় এবং প্রতিটি অপত্য ক্রোমোসোম এদের নিকটস্থ মেরুর দিকে ধাবিত হয়। অপত্য ক্রোমোসোমের মেরু অভিমুখী চলনে সেন্ট্রোমিয়ারই অগ্রগামী থাকে এবং বাহুদ্বয় অনুগামী হয়। ফলে সেন্ট্রোমিয়ারের অবস্থান অনুযায়ী ক্রোমোসোমগুলো V— (মেটাসেন্ট্রিক), L— (সাবমেটাসেন্ট্রিক), J— (অ্যাক্রোসেন্ট্রিক) বা I— (টেলোসেন্ট্রিক)-এর মতো আকার ধারণ করে। ক্রোমোসোমে সেন্ট্রোমিয়ারের অবস্থান মাঝখানে হলে ক্রোমোসোম V-এর মতো দেখায়। ক্রেমোসোমে সেন্ট্রোমিয়ার একটু কিনারের দিকে হলে L-এর মতো দেখায়। ক্রোমোসোমে সেন্ট্রোমিয়ারের অবস্থান প্রান্তের দিকে হলে J-এর মতো দেখায় এবং ক্রোমোসোমে সেন্ট্রোমিয়ারের অবস্থান একেবারে প্রান্তে হলে I-এর মতো দেখায়।
উত্তর: ঘ. উল্লিখিত ধাপটি মাইটোসিসের অ্যানাফেজ। অ্যানাফেজ ধাপের পরবর্তী ধাপটি টেলোফেজ। কোষ বিভাজনের যে পর্যায়ে অপত্য ক্রোমোসোমগুলো দুই বিপরীত মেরুতে স্থির অবস্থান নেয়, সে পর্যায়কে টেলোফেজ বলে। এ পর্যায়ে ক্রোমোসোমগুলোয় আবার জলযোজন ঘটে। ফলে এরা ক্রমান্বয়ে প্রসারিত হয়। ক্রোমোসোমগুলো ক্রমেই সরু ও লম্বা হতে থাকে। এ পর্যায়ের শেষের দিকে দুই মেরুতে ক্রেমোসোমগুলোর চারদিকে নিউক্লিয়ার মেমব্রেন এবং স্যাট ক্রোমোসোমের গৌণ কুঞ্চনে নিউক্লিওলাসের পুনরাবির্ভাব ঘটে। ফলে দুই মেরুতে দুটি অপত্য নিউক্লিয়াস সৃষ্টি হয়। স্পিন্ডল ফাইবারগুলো ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যায়। বিষুবীয় অঞ্চলে লাইসোজোমের মতো ফ্রাগমোসোম জমা হয় এবং পরে এরা মিলিত হয়ে প্লাজমালেমা নামের ঝিল্লির সৃষ্টি করে। প্লাজমালেমা নামের ঝিল্লির ওপর অন্যান্য দ্রব্য জমা হয়ে এটি কোষপ্লেটে পরিণত হয়। কোষপ্লেটের ওপর হেমিসেলুলোজ ও অন্যান্য দ্রব্য জমা হয়ে কোষপ্রাচীর গঠন করে। কোষপ্রাচীর গঠনের ফলে মাতৃকোষটি পরবর্তী সময়ে দুই ভাগে ভাগ হয়ে দুটি অপত্য কোষের সৃষ্টি করে। সুতরাং উপরিউক্ত আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে উদ্দীপকের পরবর্তী ধাপের (টেলোফেজ) বিভিন্ন পরিবর্তনের মাধ্যমে কোষ বিভাজনের পরিসমাপ্তি ঘটে।
রূপনগর মডেল স্কুল ও কলেজ, ঢাকা