ডিজিটাল সেবায় অন্যতম সেরা কুষ্টিয়া

ডিজিটাল সেন্টারে একজন নারী উদ্যোক্তা দিচ্ছেন ডিজিটাল সেবা l প্রথম আলো
ডিজিটাল সেন্টারে একজন নারী উদ্যোক্তা দিচ্ছেন ডিজিটাল সেবা l প্রথম আলো

কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মজমপুর ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে গতকাল বৃহস্পতিবার গিয়ে কথা হলো হররা গ্রামের রাকিবুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বললেন, ‘হাতে লেখা জন্মনিবন্ধন পরিবর্তন করতে এসেছি।’ আলামপুর ইউনিয়নের দহকুলা গ্রামের ফিরোজ বিশ্বাস জানালেন, প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে শহরে পাসপোর্ট করতে তিনবার যেতে হতো। এখন বাড়ির কাছে ডিজিটাল সেন্টারে অনলাইনে ফরম পূরণ করতে পারছেন। 

কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন ডিজিটাল সেন্টারে এভাবেই তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে দরকারি কাজ সারা যাচ্ছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও এটুআইয়ের দেওয়া শ্রেষ্ঠ ডিজিটাল সেবা পুরস্কার ২০১৫-এর তিন শ্রেষ্ঠ জেলার একটি হিসেবে পুরস্কার পেয়েছে কুষ্টিয়া। বাকি দুই জেলা হলো নারায়ণগঞ্জ ও পঞ্চগড়। রাজধানীতে জেলা প্রশাসকদের তিন দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গত ২৮ জুলাই কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেনের হাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই পুরস্কার তুলে দেন।
জেলা প্রশাসক জানান, গত বছর ইউনিয়ন তথ্য ও সেবাকেন্দ্রগুলো (বর্তমানে ডিজিটাল সেন্টার) থেকে উদ্যোক্তারা প্রায় ১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা আয় করেছেন। এখন পুরো জেলায় প্রতি মাসে ১৭ থেকে ১৮ লাখ টাকা আয় হচ্ছে এসব কেন্দ্র থেকে।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডিজিটাল কেন্দ্রের উদ্যোক্তারা প্রতি মাসে গড়ে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা উপার্জন করছেন। সাধারণ মানুষ ভিডিও চ্যাটের মাধ্যমে দেশের বাইরে থাকা আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলতে পারছেন। আবার সেবাকেন্দ্রে এসে বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা বখাটে সম্পর্কে প্রশাসনকে জানাচ্ছেনও।
বারখাদা ইউনিয়নের মাহতুল ফেরদৌস জানান, এলাকার নারীরা নারী উদ্যোক্তাদের কাছে যেকোনো বিষয় বলতে সুবিধাবোধ করেন। কয়েকজন নারী উদ্যোক্তা জানালেন, জেলার সব ডিজিটাল সেন্টার জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় স্কুলের ছাত্রীদের সুবিধা হয়েছে। তারা কোনো সমস্যা বা উত্ত্যক্তের শিকার হলে ই-মেইল ও ফেসবুকের মাধ্যমে তা দ্রুত জেলা প্রশাসনকে জানিয়ে দিচ্ছে। এতে ফলও পাচ্ছে তারা। এভাবেই কুষ্টিয়া জেলায় ৬৭টি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে পুরুষ ও নারী উদ্যোক্তারা এগিয়ে যাচ্ছেন। আর এসব কেন্দ্রের কারণেই কুষ্টিয়া জেলা ডিজিটাল সেবায় পেয়েছে শ্রেষ্ঠ জেলার পুরস্কার।