পাসের হারে দেশসেরা রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড
এ বছরের এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হারে দেশসেরা হয়েছে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড৷ এই ফলাফল বোর্ডের ইতিহাসেও সর্বোচ্চ৷ এবার এই বোর্ডে পাসের হার ৯৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ৷ জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৯ হাজার ৮১৫ জন শিক্ষার্থী৷
এর আগে ২০১০ সালের এসএসসি পরীক্ষায় প্রথমবারের মতো রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড পাসের হারে দেশ সেরা হয়৷ তখন পাসের হার ছিল ৮৫ দশমিক ৬১ শতাংশ৷ জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১০ হাজার ৫৬৮ জন শিক্ষার্থী৷
এবার বোর্ডে দুই হাজার ৫৪২ বিদ্যালয় থেকে এক লাখ ২২ হাজার ১৬৮ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়৷ এর মধ্যে পাস করেছে এক লাখ ১৭ হাজার ৬৯৩ জন৷ ছাত্ররা জিপিএ-৫ বেশি পেলেও ছাত্রীদের চেয়ে তাদের পাসের হার কম৷ ছাত্রীদের পাসের হার ৯৬ দশমিক ৫০ শতাংশ৷ ছাত্রদের ৯৬ দশমিক ১৯ শতাংশ৷ জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র ১০ হাজার ৮২৫ জন ও ছাত্রী সংখ্যা আট হাজার ৯৯০ জন৷
বিভাগ অনুযায়ী ধরলে সবচেয়ে বেশি পাসের হার বিজ্ঞান বিভাগে, ৯৮ দশমিক ২১ শতাংশ৷ এরপর ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পাসের হার ৯৬ দশমিক ৭৬ শতাংশ ও মানবিক বিভাগে ৯৪ দশমিক ৮৮ শতাংশ৷
২০১০ সালে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে একজন শিক্ষার্থীও পাস করেনি এমন বিদ্যালয়ের সংখ্যা একটিও ছিল না৷ গতবার এ ধরনের বিদ্যালয় একটি ছিল৷ এবার একটিও নেই৷
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে এবার সেরা ২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ ৯৪ দশমিক ৪৫ পয়েন্ট পেয়ে প্রথম হয়েছে৷ সেরা ২০ তালিকায় বগুড়া জেলার আটটি, রাজশাহীর পাঁচটি, নওগাঁ ও পাবনার দুটি করে এবং সিরাজগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নাটোরের একটি করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে৷
এর মধ্যে রাজশাহী জেলার গভ. ল্যাবরেটরি হাইস্কুল ৯১ দশমিক ৭১ পয়েন্ট পেয়ে পঞ্চম হয়েছে৷ তাদের ১০৮ জন পরীক্ষার্থীর সবাই পাস করেছে৷ একজন ছাড়া সবাই জিপিএ-৫ পেয়েছে৷ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী গোলাম আল মুঈদ তারেক জানায়, তাদের বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের যত্ন, অভিভাবকদের সচেতনতা ও তাদের পরিশ্রমের কারণেই ভালো ফলাফল হয়েছে৷
রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে মাহির ফারহান খান৷ তার মা মনিরা রহমান জানান, নিজ সন্তানের ভালো ফলাফলের জন্য বাবা-মাকে শিক্ষকের মতোই এখন সজাগ থাকতে হচ্ছে৷ একটু অসচেতন হলেই বাচ্চারা অন্যমনস্ক হয়ে পড়ে৷ এই বিষয়ে বাবা-মাকে সব সময় নজরদারি করতে হয়৷ তাহলেই ভালো ফলাফল আশা করা যায়৷
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম এ হুরাইরা বলেন, শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফল ও নৈতিক অবক্ষয় রোধে ২০১১ সালে বোর্ডের গৃহীত ২৪টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেন৷ এ জন্য বোর্ডের অধীন ৭০টি থানার মধ্যে তারা ৪০টি থানায় শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন৷ উত্তরপত্র মূল্যায়নের ক্ষেত্রে একইভাবে সম্মিলিত একটি সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে কাজ করেছেন৷ এই সার্বিক বিষয়গুলো শিক্ষার্থীদের ফলাফলের ওপরে প্রভাব ফেলেছে৷
সেরা ১০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান: বোর্ডের সেরা ১০টি প্রতিষ্ঠান যথাক্রমে বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, বগুড়া জিলা স্কুল, নওগাঁ সরকারি কে. ডি. উচ্চবিদ্যালয়, রাজশাহীর গভ. ল্যাবরেটরি হাইস্কুল, বগুড়ার বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল, রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ, পাবনা ক্যাডেট কলেজ, বগুড়ার আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও পাবনা জিলা স্কুল৷